বাংলারজমিন
গ্রাম-গঞ্জের করোনার খবর
১০ জুলাই ২০২০, শুক্রবার, ৮:১৬ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজারে নতুন শনাক্ত ৩৩
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে: মৌলভীবাজারে নতুন করে আরো ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন। মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ জন, কুলাউড়ায় ১ জন, বড়লেখায় ৩ জন, কমলগঞ্জে ৩ জন, শ্রীমঙ্গলে ১ জন এবং মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ১৬ জন আক্রান্ত রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীমঙ্গলের কালাপুর এলাকার ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। তিনি উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৭ই জুলাই। মারা যাওয়ার পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ নিয়ে মৌলভীবাজারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭৫ জনে। যাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৯৮ জন। জেলায় করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব না থাকায় এখনো রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪শ’ মানুষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের।
করোনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের
সহ-সভাপতির মৃত্যু
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বকল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ভোর ৬টায় ঢাকার ধানমণ্ডি আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। গত ২৮শে জুন করোনা সন্দেহে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৪ঠা জুলাই পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তার মৃত্যুতে কৃষিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি এক বিবৃতিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পারিবারিক সূত্রে জানায়, আবুল কালাম আজাদ বকলকে কোথায় সমাহিত করা হবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খুব শিগগিরই পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাজা এবং দাফনের বিষয়ে সবাইকে জানানো হবে।
রংপুরে আইসোলেশনে বৃদ্ধের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে: রংপুর ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে সুভাস চন্দ্র সাহা (৭০) নামে এক বৃদ্ধ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি মস্তিষ্ক প্রদাহ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও দেহে লবণের অস্বাভাবিকতায় ভুগছিলেন। রংপুর পীরগঞ্জের অধিবাসী সুভাস চন্দ্র গত ৩রা জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন এবং বুধবার রাতে মারা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. এসএম নুরুন নবী। রংপুর সিভিল সার্জনের তথ্য মতে, রংপুর জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১৬৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮১৭ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০ জন। রংপুর বিভাগের করোনায় আক্রান্তদের রংপুর ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ফেনীতে করোনার উপসর্গে নারীসহ তিন জনের মৃত্যু
ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার বিভিন্ন সময়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ষাটোর্ধ্ব নুর জাহান ও মোখলেছুর রহমান এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মিজানুর রহমান ফিরোজ নামের এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, জর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিস সহ নানা রোগ নিয়ে মঙ্গলবার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব নুর জাহান। হাসপতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে হাসপতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পরশুরাম উপজেলার মোখলেছুর রহমান (৬৫)। আরএমও আরো জানান, মারা যাওয়ার পর দু’জনের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। উভয়ের মরদেহ বুধবার বিশেষ ব্যবস্থায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে বুধবার রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান ফিরোজ নামের এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন জানান, আইনজীবী মিজানুর রহমান জর-শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে মঙ্গলবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বুধবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়ার পরামর্শ দেয়। তবে আইসিইউতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দুপুরের পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবার জানায়, রাতে তার মরদেহ ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে জানাজা শেষে মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
ফুলবাড়ীতে করোনায় প্রথম মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে: কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ীতে এই প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে এক নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫ জনে। এরমধ্যে নারী দু’জন এবং পুরুষ ৩ জন। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪১ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২২ জন। ফুলবাড়ী হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ৩০শে জুন ওই নারী করোনা পজেটিভ শনাক্ত হন। তিনিসহ তার পরিবারের মোট ছয়জনের করোনা পজেটিভ হওয়ায় বাড়িতে আইসোলেশনে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় তিনি মারা যান। করোনা ছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, ওই নারীর নাম পুর্নিমা রানী (৮০)। তিনি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের উত্তর বড়ভিটা গ্রামের বীরেন্দ্র নাথ সরকারের স্ত্রী এবং ফুলবাড়ী হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী বিশ্বনাথ সরকারের মাতা। স্বাস্থ্য সহকারী বিশ্বনাথ সরকার প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন। পরে বাড়ির অন্যদের মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রোমিত হয়। এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশের সৎকার করা হয়েছে।
শায়েস্তাগঞ্জে ইউএনও
সহ নতুন শনাক্ত ২৮
শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী আক্তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার (৮ই জুলাই) রাতে হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জল এ তথ্য জানান। সম্প্রতি তিনি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। গতকাল ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার থেকে আসা রিপোর্টে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী আক্তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হন। এছাড়াও জেলায় নতুন করে আরো ২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। ইউএনও সুমী আক্তার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর থেকে তিনি নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। হবিগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে গত ১১ই এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হবিগঞ্জ সদর (শায়েস্তাগঞ্জসহ) ৩৩৭, চুনারুঘাটে ১৫৬, মাধবপুরে ১২৬, নবীগঞ্জে ৮৭, বাহুবলে ৬০, লাখাই-এ ৩৫, বানিয়াচংয়ে ৩৬ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ২৫ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩৩৫ জন।
ওসমানীনগরে স্বাস্থ্যকর্মীসহ নতুন শনাক্ত ২
ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের ওসমানীনগরে একজন নারী স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন বৃদ্ধা নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এই দুই জনকে নিয়ে ওসমানীনগরে ৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩ জন। বুধবার রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে পৃথক রিপোর্টে দু’জনের করোনা পজেটিভ আসে। আক্রান্তরা হলেন, উপজেলার উমরপুর ইউপির মাটিহানি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি দয়ামীর ইউপি’র কুরুয়া গ্রামের ওলিউর রহমানের স্ত্রী লাভলী বেগম (৩০) ও গোয়ালাবাজার ইউপি’র নগরীকাপন গ্রামের আনা মিয়ার মা শামসুন নাহার (৮০)। আক্রান্ত লাভলী বেগম সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ও শামসুন নাহার সিলেট নূরজাহান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলা করোনা সংক্রান্ত মেডিকেল টিমের প্রধান ডা. সাকিব আব্দুল্লাহ চৌধুরী ওসমানীনগরে নতুন করে ২ নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে সিএইচসিপি লাভলী বেগম গত ৭ই জুন বালাগঞ্জ হাসাপতালে নমুনা প্রদান করার পর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে সেখান থেকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। আক্রান্ত আরেক বৃদ্ধা শামসুন নাহার জ্বর ও নিউমোনিয়া নিয়ে নূরজাহান হাসপাতালে গত ৫ই জুন ভর্তি হন। ৭ই জুন শামসুদ্দিন হাসপাতালে তিনি নমুনা প্রদান করেন। বুধবার রাতে দু’জনেরই করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
ঝিনাইদহে নতুন মৃত্যু ৩ শনাক্ত ৩৩
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ শহরের পাড়া মহল্লায় করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার কয়েকটি গ্রামেও বিস্তার ঘটেছে মহামারি এই রোগের। ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ জন। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের মুখপাত্র ডা. প্রসেঞ্জিত এ তথ্য জানান। সূত্রমতে বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জামায়াত নেতা তাজুল ইসলাম (৬৫) মারা গেছেন। তিনি ঝিনাইদহ শহরের ট্রাক টার্মিনাল পাড়ার বাসিন্দা। এক সপ্তাহ আগে তার করোনা শনাক্ত হয়। নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত শৈলকুপার রাকিব হোসেনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে মারা যান। রাকিব হোসেন শৈলকুপা উপজেলার মিন গ্রামের খেলাফত মন্ডলের ছেলে। এদিকে ঝিনাইদহের সাবেক সিভিল সার্জন ও খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা রঞ্জুর ছোট বোন পলি আক্তার বৃহস্পতিবার ভোরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ঝিনাইদহের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহিদের স্ত্রী। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদর্শপাড়ায় মামুন নামে এক যুবক করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তিনি ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিব রণকের বড় ভাই। পারিবারিক সূত্রে বলা হয়েছে, ৭ দিন ধরে মামুন করোনা উপসর্গ নিয়ে রোগে ভুগছিলেন। এদিকে ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন পাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। বৃহস্পতিবার শহরের চাঁন্দমারি পাড়া, আদর্শপাড়া, সিদ্দিকীয়া সড়ক, সদরের যাত্রাপুর, শহরের ওয়ারলেস পাড়া, পাগলাকানাই, ব্যাপারীপাড়া, কোদালিয়া, ভুটিয়ারগাতি, কাঞ্চননগর, পুলিশ লাইনস, সদর পুলিশ ফাঁড়ি, সদর ট্রাফিক পুলিশ ও আরাপপুর এলাকায় ২৪ জন করোনা শনাক্ত হন। এছাড়া শেলকূপার মিনগ্রাম, ভাঁটই বাজার, কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর, খালকোলা, চাপালি, শিবনগর, হাট বারবাজার, ঢাকালেপাড়া, দুলাল মুন্দিয়া ও ফয়েলা গ্রামে ৭ জন পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
মাগুরায় নতুন শনাক্ত ৬
মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় বৃহস্পতিবার নতুন ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৭৯ জন। নতুন করে ৬ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৭৫ জন। শনাক্ত হওয়া ৬ জনের মধ্যে মাগুরা সদরে ৫ ও শ্রীপুর উপজেলায় ১ জন।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা বৃহস্পতিবার দুপুরে জানান, জেলায় নতুন ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মাগুরায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭৯ জন । মোট সুস্থ হয়েছে ৭৫ জন ।
কালীগঞ্জে নতুন শনাক্ত ৭
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১২০ জনে। যার মধ্যে মারা গেছেন তিনজন ও সুস্থ হয়েছেন ৩৮ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুলতান আহমেদ।
ডা. সুলতান আহমেদ আরো জানান, বুধবার সকালে নতুন ১৪টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৭টি নমুনার রিপোর্ট পজেটিভ বাকি ৭টি নেগেটিভ। নতুন করে চাপালি, ফয়লা, ঢাকালেপাড়া, শিবনগর, বারবাজার, দুলালমুন্দিয়া ও দৌলতপুর গ্রামের একজন করে মোট সাত জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সকলকে বাড়িতে রেখে মোবাইলের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া, ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহে বুধবার নতুন ৭৭টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৩৩টি পজেটিভ বাকি ৪৪টি নেগেটিভ। নতুন করে ঝিনাইদহ সদরে ২৪, কালীগঞ্জে ৭ ও শৈলকুপায় ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৬ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ জন।
চুয়াডাঙ্গায় করোনা
উপসর্গ নিয়ে আরো
একজনের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে জমসেদ আলী (৬৭) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রাতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়ালো চার জনে। ইতিপূর্বে তিনজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। যাদের পরে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির জানান, মৃতব্যক্তির নাম জমসেদ আলী (৬৭)। তিনি দামুড়হুদা উপাজেলার কাদিপুর গ্রামের গাঙপাড়ার মৃত শুকুর আলীর ছেলে। করোনা উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকস্ট ও কাশিতে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বুধবার সকালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বিকেল থেকে তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রাত আটটার পর তিনি মারা যান। রাতেই স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ টিম মৃত ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি কাদিপুর গ্রামের কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন তার দাফনকাজ সম্পন্ন করে।
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে: মৌলভীবাজারে নতুন করে আরো ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন। মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ জন, কুলাউড়ায় ১ জন, বড়লেখায় ৩ জন, কমলগঞ্জে ৩ জন, শ্রীমঙ্গলে ১ জন এবং মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ১৬ জন আক্রান্ত রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীমঙ্গলের কালাপুর এলাকার ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। তিনি উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৭ই জুলাই। মারা যাওয়ার পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ নিয়ে মৌলভীবাজারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭৫ জনে। যাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৯৮ জন। জেলায় করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব না থাকায় এখনো রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪শ’ মানুষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের।
করোনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের
সহ-সভাপতির মৃত্যু
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বকল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ভোর ৬টায় ঢাকার ধানমণ্ডি আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। গত ২৮শে জুন করোনা সন্দেহে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৪ঠা জুলাই পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তার মৃত্যুতে কৃষিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি এক বিবৃতিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পারিবারিক সূত্রে জানায়, আবুল কালাম আজাদ বকলকে কোথায় সমাহিত করা হবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খুব শিগগিরই পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাজা এবং দাফনের বিষয়ে সবাইকে জানানো হবে।
রংপুরে আইসোলেশনে বৃদ্ধের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে: রংপুর ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে সুভাস চন্দ্র সাহা (৭০) নামে এক বৃদ্ধ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি মস্তিষ্ক প্রদাহ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও দেহে লবণের অস্বাভাবিকতায় ভুগছিলেন। রংপুর পীরগঞ্জের অধিবাসী সুভাস চন্দ্র গত ৩রা জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন এবং বুধবার রাতে মারা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. এসএম নুরুন নবী। রংপুর সিভিল সার্জনের তথ্য মতে, রংপুর জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১৬৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮১৭ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০ জন। রংপুর বিভাগের করোনায় আক্রান্তদের রংপুর ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ফেনীতে করোনার উপসর্গে নারীসহ তিন জনের মৃত্যু
ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার বিভিন্ন সময়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ষাটোর্ধ্ব নুর জাহান ও মোখলেছুর রহমান এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মিজানুর রহমান ফিরোজ নামের এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, জর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিস সহ নানা রোগ নিয়ে মঙ্গলবার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব নুর জাহান। হাসপতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে হাসপতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পরশুরাম উপজেলার মোখলেছুর রহমান (৬৫)। আরএমও আরো জানান, মারা যাওয়ার পর দু’জনের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। উভয়ের মরদেহ বুধবার বিশেষ ব্যবস্থায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে বুধবার রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান ফিরোজ নামের এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন জানান, আইনজীবী মিজানুর রহমান জর-শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে মঙ্গলবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বুধবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়ার পরামর্শ দেয়। তবে আইসিইউতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দুপুরের পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবার জানায়, রাতে তার মরদেহ ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে জানাজা শেষে মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
ফুলবাড়ীতে করোনায় প্রথম মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে: কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ীতে এই প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে এক নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫ জনে। এরমধ্যে নারী দু’জন এবং পুরুষ ৩ জন। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪১ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২২ জন। ফুলবাড়ী হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ৩০শে জুন ওই নারী করোনা পজেটিভ শনাক্ত হন। তিনিসহ তার পরিবারের মোট ছয়জনের করোনা পজেটিভ হওয়ায় বাড়িতে আইসোলেশনে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় তিনি মারা যান। করোনা ছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, ওই নারীর নাম পুর্নিমা রানী (৮০)। তিনি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের উত্তর বড়ভিটা গ্রামের বীরেন্দ্র নাথ সরকারের স্ত্রী এবং ফুলবাড়ী হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী বিশ্বনাথ সরকারের মাতা। স্বাস্থ্য সহকারী বিশ্বনাথ সরকার প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন। পরে বাড়ির অন্যদের মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রোমিত হয়। এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশের সৎকার করা হয়েছে।
শায়েস্তাগঞ্জে ইউএনও
সহ নতুন শনাক্ত ২৮
শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী আক্তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার (৮ই জুলাই) রাতে হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জল এ তথ্য জানান। সম্প্রতি তিনি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। গতকাল ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার থেকে আসা রিপোর্টে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী আক্তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হন। এছাড়াও জেলায় নতুন করে আরো ২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। ইউএনও সুমী আক্তার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর থেকে তিনি নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। হবিগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে গত ১১ই এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হবিগঞ্জ সদর (শায়েস্তাগঞ্জসহ) ৩৩৭, চুনারুঘাটে ১৫৬, মাধবপুরে ১২৬, নবীগঞ্জে ৮৭, বাহুবলে ৬০, লাখাই-এ ৩৫, বানিয়াচংয়ে ৩৬ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ২৫ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩৩৫ জন।
ওসমানীনগরে স্বাস্থ্যকর্মীসহ নতুন শনাক্ত ২
ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের ওসমানীনগরে একজন নারী স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন বৃদ্ধা নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এই দুই জনকে নিয়ে ওসমানীনগরে ৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩ জন। বুধবার রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে পৃথক রিপোর্টে দু’জনের করোনা পজেটিভ আসে। আক্রান্তরা হলেন, উপজেলার উমরপুর ইউপির মাটিহানি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি দয়ামীর ইউপি’র কুরুয়া গ্রামের ওলিউর রহমানের স্ত্রী লাভলী বেগম (৩০) ও গোয়ালাবাজার ইউপি’র নগরীকাপন গ্রামের আনা মিয়ার মা শামসুন নাহার (৮০)। আক্রান্ত লাভলী বেগম সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ও শামসুন নাহার সিলেট নূরজাহান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলা করোনা সংক্রান্ত মেডিকেল টিমের প্রধান ডা. সাকিব আব্দুল্লাহ চৌধুরী ওসমানীনগরে নতুন করে ২ নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে সিএইচসিপি লাভলী বেগম গত ৭ই জুন বালাগঞ্জ হাসাপতালে নমুনা প্রদান করার পর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে সেখান থেকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। আক্রান্ত আরেক বৃদ্ধা শামসুন নাহার জ্বর ও নিউমোনিয়া নিয়ে নূরজাহান হাসপাতালে গত ৫ই জুন ভর্তি হন। ৭ই জুন শামসুদ্দিন হাসপাতালে তিনি নমুনা প্রদান করেন। বুধবার রাতে দু’জনেরই করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
ঝিনাইদহে নতুন মৃত্যু ৩ শনাক্ত ৩৩
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ শহরের পাড়া মহল্লায় করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার কয়েকটি গ্রামেও বিস্তার ঘটেছে মহামারি এই রোগের। ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ জন। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের মুখপাত্র ডা. প্রসেঞ্জিত এ তথ্য জানান। সূত্রমতে বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জামায়াত নেতা তাজুল ইসলাম (৬৫) মারা গেছেন। তিনি ঝিনাইদহ শহরের ট্রাক টার্মিনাল পাড়ার বাসিন্দা। এক সপ্তাহ আগে তার করোনা শনাক্ত হয়। নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত শৈলকুপার রাকিব হোসেনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে মারা যান। রাকিব হোসেন শৈলকুপা উপজেলার মিন গ্রামের খেলাফত মন্ডলের ছেলে। এদিকে ঝিনাইদহের সাবেক সিভিল সার্জন ও খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা রঞ্জুর ছোট বোন পলি আক্তার বৃহস্পতিবার ভোরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ঝিনাইদহের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহিদের স্ত্রী। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদর্শপাড়ায় মামুন নামে এক যুবক করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তিনি ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিব রণকের বড় ভাই। পারিবারিক সূত্রে বলা হয়েছে, ৭ দিন ধরে মামুন করোনা উপসর্গ নিয়ে রোগে ভুগছিলেন। এদিকে ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন পাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। বৃহস্পতিবার শহরের চাঁন্দমারি পাড়া, আদর্শপাড়া, সিদ্দিকীয়া সড়ক, সদরের যাত্রাপুর, শহরের ওয়ারলেস পাড়া, পাগলাকানাই, ব্যাপারীপাড়া, কোদালিয়া, ভুটিয়ারগাতি, কাঞ্চননগর, পুলিশ লাইনস, সদর পুলিশ ফাঁড়ি, সদর ট্রাফিক পুলিশ ও আরাপপুর এলাকায় ২৪ জন করোনা শনাক্ত হন। এছাড়া শেলকূপার মিনগ্রাম, ভাঁটই বাজার, কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর, খালকোলা, চাপালি, শিবনগর, হাট বারবাজার, ঢাকালেপাড়া, দুলাল মুন্দিয়া ও ফয়েলা গ্রামে ৭ জন পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
মাগুরায় নতুন শনাক্ত ৬
মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় বৃহস্পতিবার নতুন ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৭৯ জন। নতুন করে ৬ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৭৫ জন। শনাক্ত হওয়া ৬ জনের মধ্যে মাগুরা সদরে ৫ ও শ্রীপুর উপজেলায় ১ জন।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা বৃহস্পতিবার দুপুরে জানান, জেলায় নতুন ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মাগুরায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭৯ জন । মোট সুস্থ হয়েছে ৭৫ জন ।
কালীগঞ্জে নতুন শনাক্ত ৭
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১২০ জনে। যার মধ্যে মারা গেছেন তিনজন ও সুস্থ হয়েছেন ৩৮ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুলতান আহমেদ।
ডা. সুলতান আহমেদ আরো জানান, বুধবার সকালে নতুন ১৪টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৭টি নমুনার রিপোর্ট পজেটিভ বাকি ৭টি নেগেটিভ। নতুন করে চাপালি, ফয়লা, ঢাকালেপাড়া, শিবনগর, বারবাজার, দুলালমুন্দিয়া ও দৌলতপুর গ্রামের একজন করে মোট সাত জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সকলকে বাড়িতে রেখে মোবাইলের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া, ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহে বুধবার নতুন ৭৭টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৩৩টি পজেটিভ বাকি ৪৪টি নেগেটিভ। নতুন করে ঝিনাইদহ সদরে ২৪, কালীগঞ্জে ৭ ও শৈলকুপায় ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৬ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ জন।
চুয়াডাঙ্গায় করোনা
উপসর্গ নিয়ে আরো
একজনের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে জমসেদ আলী (৬৭) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রাতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়ালো চার জনে। ইতিপূর্বে তিনজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। যাদের পরে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির জানান, মৃতব্যক্তির নাম জমসেদ আলী (৬৭)। তিনি দামুড়হুদা উপাজেলার কাদিপুর গ্রামের গাঙপাড়ার মৃত শুকুর আলীর ছেলে। করোনা উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকস্ট ও কাশিতে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বুধবার সকালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বিকেল থেকে তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রাত আটটার পর তিনি মারা যান। রাতেই স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ টিম মৃত ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি কাদিপুর গ্রামের কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন তার দাফনকাজ সম্পন্ন করে।