শেষের পাতা

স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর পিতার আত্মহত্যার চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে

৯ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন

নারায়ণগঞ্জে মাকে বাঁচাতে গিয়ে বাবার ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে সোহাগ (১৫)। কিন্তু মায়ের শেষ রক্ষা হলো না। মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরিয়ে ১৫ ঘণ্টার মাথায় মাও মারা গেছেন। অন্যদিকে আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো রক্তাক্ত জখম পিতা হারেছ মিয়া (৪৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম ভোলাইল  গেউদ্দার বাজার এলাকায় জনৈক শাহ আলম মিয়ার ভাড়াটিয়া বাড়িতে।
প্রতিবেশীরা জানায়, রিকশা চালক হারেজ মিয়া (৪৫) ও তার স্ত্রী হোসিয়ারী শ্রমিক মনোয়ারা বেগম (৩৫) তাদের পুত্র গার্মেন্ট শ্রমিক সোহাগ (১৫) ও মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী বিথি আক্তার (১৩) ওই এলাকার শাহ আলম মিয়ার টিনসেড বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করছিল। স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত এই অভিযোগে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া হত। মঙ্গলবার রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে হারেজ তার স্ত্রীকে ধারালো চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় ছেলে সোহাগ মাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে হারেজ তার ছেলেকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর হারেছ নিজের পেটে নিজেই চাকু ঢুকিয়ে দেয়। ওই সময় মেয়ে বিথি ঘুমিয়ে ছিল। পরে চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ শহরের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোহাগকে মৃত ঘোষণা করেন এবং স্বামী-স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে বিকাল ৫টায় মনোয়ারা বেগম মারা যান।
পান্না নামের ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া জানান, আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। তারা ঘরে কী করছে না করছে তা আলাপ পাই নাই। রাত আড়াইটা বাজে তাদের মেয়ে বিথি চিৎকার দিয়ে আমার ডেকে জানায়, ‘আব্বায় মা আর ভাইরে জবাই কইরা মাইরা ফেলছে’। এই কথা শুনে আমরা ঘুম থেকে উঠে দেখি, মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের বাইরে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। ছেলে আর বাবা ভেতরে পড়ে ছিল। পরে পুলিশরে খবর দেই। পুলিশ আইসা সবাইরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারিবারিক নানা কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগে ছিল বলেও জানান প্রতিবেশী এই ভাড়াটিয়া।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনহাচ (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, স্বামী-স্ত্রী দুজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিল। এরমধ্যে বিকাল ৫টায় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম মারা গেছেন। পুলিশ পহোরায় হাসপাতালে হারেছের চিকিৎসা চলছে। আর সোহাগের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল মর্গে। অন্যদিকে মেয়েটিকে তাদের এক আত্মীয়ের বাসায় রাখা হয়েছে। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালে। ওসি আরো জানান, ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের একটি টিম কাজ করছে। এ ঘটনায় আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status