অনলাইন

মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার কাছে খোলা চিঠি

নিউইয়র্ক থেকে খলকু কামাল

৮ জুলাই ২০২০, বুধবার, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

আপনার অবগতির জন্য বলছি, মুসলিম বিশ্বের কঠিন সঙ্কটময় এ মুহূর্তে আমরা মনে করি ফিলিস্তিন তথা পূর্ব জেরুজালেমস্থ মুসলিম উম্মাহর তৃতীয় পবিত্র স্থান মসজিদে আল আকসাকে মুক্ত করা, মুসলিম দেশগুলোর সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও ঈমানী দায়িত্ব। এর চেয়ে অগ্রাধিকার পাওয়ার মতো আশু কোনো জটিল সমস্যা নেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য, মুসলিম উম্মাহর যে দিকেই তাকানো যায় যেমন ফিলিস্তিন, গাজা, কাশ্মীর, লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান রোহিঙ্গাসহ শুধু জখমের চি‎হ্ন ও নানাভাবে নির্যাতিত ও অশান্তির জ্বালায় শুধুমাত্র মুসলিমরা জ্বলে পুড়ে মরছে। দুনিয়াব্যাপী ১৬০ কোটি মুসলিম। এর মধ্যে অনেক দেশ অর্থ বিত্তে এবং ৭টি দেশ সামরিক দিক দিয়েও অনেক শক্তিশালী। অথচ আমাদের অনৈক্যের কারণে মুসলিম বিশ্ব আজ অসহায়। মুসলিম জাতি যতদিন আল্লাহর বিধান মতো তাদের শত্রু ও বন্ধু চিহ্নিত না করতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের মধ্যে সঠিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না।
পেছনে তাকালে দেখা যায় যে, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসির সদস্য দেশ ৫৭টি। এটি জাতিসংঘের পর সবচেয়ে বড় আন্তঃদেশীয় জোট । প্রায় ১৬০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এ জোট। প্রতি বছর এ সম্মেলনের সময় সব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দেখা হয়। তিন বছর পর পর ওআইসি রাষ্ট্রের প্রধানদের সম্মেলন হচ্ছে। যদিও এসব দেখা-সাক্ষাতের বাস্তব অবদান টের পাওয়া যাচ্ছে সামান্যই। অতীতের ইতিহাস হচ্ছে, ইসরাইল ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে অগ্নিসংযোগ করে। এর ফলে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়ার জের ধরে ওই বছরের ২২-২৩ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাবাতে ২৫টি মুসলিম রাষ্ট্রের সম্মেলনে ওআইসির জন্ম হয়। বর্তমানে ৫৭টি দেশ এই সংস্থার সদস্য।
ওআইসি প্রতিষ্ঠাতাদের স্বপ্ন ছিল, এই সংস্থা হবে মুসলিম বিশ্বের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। এটি মুসলিম বিশ্বের যে কোন সমস্যা সমাধানে বিশাল ভূমিকা রাখবে। কিন্তু অর্ধ শতাব্দীকাল পেরিয়ে আসার পরও বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী একে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে, বর্তমান মুসলিম বিশ্বের হানাহানি সংঘাত নিরসনে এই সংস্থা তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছে না। সংস্থার নেতৃত্বের মধ্যে নানা রকম মতপার্থক্য দেখা যায়। ফলে ওআইসির ১৬০ কোটি উম্মাহর বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হতে পারছে না। আর দেরি নয়, এখনই মুসলিম দেশগুলোর উচিত সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে আন্তরিকতার সাথে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডিল অব দ্য সেঞ্চুরিকে জোড়ালোভাবে প্রতিহত করতে হবে।
আর দুঃখজনক হলেও সত্যি, মাত্র ৬০-৬৫ লাখ ইসরাইলি ইহুদিদের কাছে বিশ্বের ১৬০ কোটি মুসলিম নাগরিক জিম্মি হয়ে পড়ছে একমাত্র ঐক্য না থাকার কারণে। ইহুদিরা মুসলিম বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র ঘর আল আকসাকে জিম্মির করে রেখেছে। স্মরণ রাখতে হবে, ইসলামী ভ্রাতৃত্ব আজ বিপদগ্রস্ত। তাই মুসলিম উম্মাহর সমস্যা সমাধানে অধিক গুরুত্ব দেয়া জরুরি হয়ে পড়ছে। ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক দিক থেকে পবিত্র জেরুজালেম নগরী হাজার বছর ধরে বিশ্ব শান্তির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ফিলিস্তিনে আরব মুসলিম জাতি কখনো তাদের স্বার্থ বিরোধী ও ইসলাম বিদ্বেষী পরিকল্পনা মেনে নেবে না। নিঃসন্দেহে অসহায় মজলুম ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম এবং তারাই একদিন বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।
মুসলিম বিশ্বের স্বার্থে আমার প্রস্তাবগুলো বিশেষভাবে বিবেচনার অনুরোধ :
মুসলিম জাহানের তৃতীয় পবিত্র ঘর মসজিদ আল আকসা ইসলামের প্রথম যুগে কেবলা হিসেবে প্রায় ১৬ মাস স্থায়ী ছিল। মুসলিম বিশ্বের ৭টি সর্ব বৃহৎ সামরিক শক্তিশালী দেশ যেমন- তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিশর, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ার উচিত মসজিদ আল আকসাকে যে কোনভাবে ইসরাইলের কাছ থেকে উদ্ধার করা। নতুবা এর জন্য কাল কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ পাকের দরবারে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে পারে। ইনশাআল্লাহ ১৬০ কোটি মুসলিম জনগোষ্ঠী আছে আপনাদের পাশে।
ওআইসির উচিত জরুরি ভিত্তিতে ইসরাইলি সব ধরনের পণ্য নিষিদ্ধ করা। ওই সমস্ত পণ্য ৫৭টি মুসলিম দেশে আবাদ অথবা তৈরির মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এবং মুসলিম দেশগুলোকে স্বাবলম্বী করা।
মুসলিম বিশ্বের প্রধান সমস্যার ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলা ও ৩৭ লাখ জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ফিলিস্তিন ও গাজাকে ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা নিয়ে এবং অগণিত নবী-রাসূলের পূণ্যভূমি এই জনপদের উপর ভিত্তি করে ২৭ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী নির্ধারণ করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে কোন শান্তি ও নিরাপত্তা চিন্তা করা যায় না। আর এটাই একমাত্র সমাধান। মনে রাখতে হবে, এটাই ফিলিস্তিন ও ইসরাইল সম্পর্কে যেটা জাতিসংঘ, অসলো এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব কর্তৃক স্বীকৃত সমাধান।
মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে স্বাস্থ্য হচ্ছে অন্যতম :
মুসলিম দেশগুলোতে বিশ্ব বিখ্যাত হাসপাতাল না থাকায় আধুনিক চিকিৎসার নামে ইউরোপ ও আমেরিকার হাতে বছরে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার চলে যাচ্ছে। পাশাপাশি অনেক মুসলিম দেশে অর্থ ও তেলের অভাব নেই। অথচ তাদের দেশে বিশ্ব মানের হাসপাতাল না থাকায় এইসব দেশের রোগীরা বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তাই স্বাস্থ্য খাতের মতো মানুষের জীবন মরণ সমস্যার প্রতি অধিক গুরুত্ব দেয়া। এ জন্য দরকার সকল মুসলিম দেশগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অত্যাধুনিক মানসম্মত হাসপাতাল তৈরি করা যাতে প্রতিটি মুসলিম দেশের নাগরিকরা নিজ নিজ দেশের হাসপাতালগুলোতে স্বল্প খরচে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারে। নিশ্চিন্ত ও উন্নতমানের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান এবং ব্যয়ভার বহন করার পর অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে আরো অধিক হাসপাতাল তৈরি করে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সহজেই সম্ভব।
‘শিক্ষা একটি জাতির উন্নয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক”
মুসলিম বিশ্বে বর্তমান পাঁচ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাই মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে প্রতিটি দেশে বিশেষ করে ধনী দেশগুলোতে কৌশলগত শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল তৈরি করতে হবে, বিশ্ব মানের জ্ঞান বিজ্ঞান ও গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামী যুগোপযোগী কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত স্থাপন করা হোক যাতে মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা বাইরের দেশগুলোতে গিয়ে অর্থ ও সময় ব্যয় না করে তাদের স্ব স্ব দেশ থেকে স্বল্প খরচে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার সাথে উচ্চ পর্যায়ের জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এ জন্য গবেষণার ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
সকল মুসলিম দেশকে নিজেদের মধ্যকার বাজারকে আরো সচল করার লক্ষ্যে ইসলামিক কমন মার্কেট করে ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরো জোরদার করা।
সকল মুসলিম দেশর নাগরিকদের সহজ গমণাগমনের জন্য ভিসা পদ্ধতি শিথিল করা।
সকল ধনী মুসলিম দেশসমূহের উচিত অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলো থেকে শ্রমিক আমদানি করা।
৫৭টি মুসলিম দেশের প্রত্যেকের সাথে প্রত্যেকের কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও বিমান সার্ভিস চালু।
মুসলিম দেশগুলোর পারস্পরিক বিরোধ নিজেরাই মেটানো।
পূর্ব জেরুজালেমে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি এ তিন ধর্মের পবিত্র ভূমিতে দেখাশুনার দায়িত্ব জাতিসংঘ অথবা কোন আন্তর্জাতিক শান্তি সংস্থাকে দেয়া হোক।
বিশ্ব জাহানের সমস্ত মুসলিমদের এক শরীর মনে করা। যেভাবে শরীরের একটি অংশে ব্যথা করলে সমস্ত শরীরে ব্যথা অনুভূত হয়। কোথাও মুসলমান আক্রান্ত হলে তা সমস্ত মুসলিমদের উপরেই আঘাত। তাই সব মুসলিম দেশগুলোকে একটি পরিবারের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে জোরালোভাবে ওআইসিকে শক্তিশালী করতে হবে। যাতে সংগঠনটি মুসলিম উম্মাহর আশা-আকাঙ্ক্ষার ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
১৬০ কোটি মুসলিমদের ৩২০ কোটি হাত। ৫৭টি মুসলিম দেশের প্রতিটি পরিবারের যুবকদেরকে স্বল্প খরচে ন্যূনতম কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি করে গড়ে তোলা। প্রতিটি দেশের প্রতিটি সেক্টরে নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া জরুরি। মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর প্রতিটি দেশে দক্ষ শ্রমিকদের ইনকাম, সম্মান ও মর্যাদা অনেক বেশি। তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম দেশ চীনের বুড়ো মহিলারা ন্যূনতম সুঁই বানিয়ে থাকে। আমরা যদি ভবিষ্যত প্রজন্মের উন্নতির স্বার্থে পরিশ্রম করতে পারি, তবে ইনশাআল্লাহ সুফল আসবে।
গতবারে নিউইয়র্কে একটি পত্রিকার শীর্ষ খবর ছিল বিশ্বের বড় বড় এয়ার লাইনগুলো যে হারে নতুন নতুন বিমান কেনার অর্ডার দিচ্ছে, তাতে আগামী ২০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে নতুন ৫ লাখ পাইলট দরকার পড়বে। এর মধ্যে মুসলিম এয়ারের মাঝে অন্যতম হলো টার্কি, কাতার, আমিরাত, ইতিহাদ, ওমান, গারুদা ও ইরান।
৫৭টি মুসলিম দেশে পর্যাপ্ত পাইলট, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, আইটি ও ইংরেজি শিক্ষক তৈরি করা জরুরি। মুসলিম বিশ্বে রয়েছে পাইলট সংকট। আপনাদের অবগতির জন্য বলছি, তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশ পাইলট তৈরি করতে পারলে আমাদের মুসলিম দেশগুলো কেনো পারবে না। আমাদের মধ্যে প্রথম দরকার শক্তিশালী ঐক্য ও সীমাহীন আন্তরিকতা এবং সহি নিয়ত। তবেই আমরা আল্লাহর রহমতের আশা করতে পারি। ভারতের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, সেখানে শত শত পাইলট ট্রেনিং, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তারা প্রতি বছর স্বল্প খরচে উন্নত মানের পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, নার্স, আইটি ও ইংরেজি শিক্ষক তৈরি করে বহির্বিশ্বে রফতানির মাধ্যমে বছর শেষে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করছে। এর মধ্যে মুসলিম বিশ্বের বভিন্নি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটসমূহে শত শত পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার ও ক্রুরা চাকুরি করে তারা অর্থনৈতিকভাবে নিজেরা লাভবান হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের দেশ আয় করছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।
এখন মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্র প্রধানদের উচিত ৫-৭ বছরের একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে অগ্রসর হওয়া। ভাড়াটিয়া পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তার আর নয়। এখন নিজ নিজ দেশের উচ্চ শিক্ষিত ২০-২২ বছরের যুবকদের হায়ার করে নিজ দেশগুলোতে পাইলট ট্রেনিং স্কুল ও ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে চাহিদা মতো পাইলট, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইটি, নার্স, ইংরেজি শিক্ষক ও এয়ার ক্রু তৈরি ও যুব সমাজকে মানসম্মত দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে নিতে হবে। এখনো সময় আছে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও নতুন বিমান না কিনে প্রথমে দরকার নিজ দেশের প্রতি অধিক মনোযোগ দিয়ে প্রতিটি সেক্টরে দক্ষ মানুষ তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করা। নিজের দেশগুলোতে পর্যাপ্ত দক্ষ জনশক্তি না থাকার কারণে আমরা বাহির থেকে তাদেরকে এনে চাকরি দিচ্ছি এবং বছর শেষে তারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে চলে যাচ্ছে। প্রতিটি দেশের শাসক যদি সিরিয়াস হন তাহলে আমরা নিজেদের দেশের শিক্ষিত ও যুব সমাজকে সব ধরনের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো। তাহলে এই অর্থ নিজ দেশেই রয়ে যেতো। সে নিজে হতো স্বাবলম্বী এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে আরো লাভবান হয়ে এগিয়ে যেতো এবং বেচে যাওয়া অর্থ দিয়ে দেশের গ্রাম অঞ্চলে শত শত হাসপাতাল তৈরি করে অসুস্থ নর-নারীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হতো।
লক্ষণীয় , বর্তমানে ভারতে তাদের নিজস্ব প্রায় ১০ হাজার পাইলট রয়েছে। ৫৭টি মুসলিম দেশে নিজস্ব এ পরিমাণ পাইলট আছে কিনা আমাদের সন্দেহ রয়েছে। তাই ভারতের ভালো দিকগুলো আমরা অনুসরণ করতে অসুবিধা কোথায়?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশবাসীর প্রতি চমৎকার উক্তি। বাই আমেরিকান, হায়ার আমেরিকান, তার দেশপ্রেমের জন্য তাকে অজস্র স্যালুট। এরকম দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রপতি প্রত্যেক দেশে হওয়া উচিত। তাই সকল মুসলিম দেশগুলোর উচিত বাই মুসলিম পণ্য, হায়ার মুসলিম পিপুল।
সোয়া কোটি লোকের দ্বীপরাষ্ট্র কিউবা স্বাস্থ্য খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। বছরে হাজার হাজার ডাক্তার তৈরি করে ৬০টি দেশে প্রেরণ করে (শুধুমাত্র ৩০ হাজার ভেজিনুয়েলা) বছরে ১১ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। তাই ধনী মুসলিম দেশগুলোর উচিত কিউবাকে গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করা। এতে পুরো মুসলিম বিশ্ব উপকৃত হবে।
মসজিদ আল আকসা ও নিজ মাতৃভূমির জন্য ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে ৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে (অনেকে ১৯৬৭ সাল থেকে) বন্দী রেখে ভয়াবহ শারীরিক ও অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। ওআইসির উচিত অবিলম্বে আন্তর্জাতিকভাবে শক্ত লবিং করে তাদেরকে মুক্ত করা ঈমানী দায়িত্ব।
নিউইয়র্কে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনে বিশ্বের ১৯৩টি দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা জড়ো হন। তাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ৫৭টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ১ ঘন্টার একান্ত বৈঠক করে ফিলিস্তিনকে পৃথক রাষ্ট্র করার জন্য আন্তরিকভাবে শক্ত লবিং করে দাবিটি দ্রুত বাস্তবায়ন।
ফিলিস্তিনির উপর ইসরাইলিদের হত্যা ও ভূখন্ড দখলের তদন্ত দ্রুত শুরু করতে আইসিসির সাথে, ওআইসির জোড়ালো লবিং জরুরি।
সবশেষে বলতে চাই, আপনি ওআইসির মহাসচিব এবং গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্র প্রধানদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও গভীর সুসম্পর্ক স্থাপন করে মুসলিম বিশ্বের অতি প্রয়োজনীয় দাবিগুলো দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন এটা আশা করছি। এতে মুসলিম বিশ্বের বিশেষ করে ফিলিস্তিনি তথা গাজার অসহায় জনগোষ্ঠীসহ মুসলমি উম্মাহর ইসলামপ্রিয় নর-নারীর হৃদয়ে আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে অনন্তকাল ইনশাআল্লাহ।
হে আল্লাহ দুনিয়া থেকে শেষ বিদায়ের আগে ইহুদীদের কাছ থেকে মসজিদ আল আকসা উদ্ধার হয়েেছ এ দৃশ্যটা দেখার তওফিক দিন এবং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে আমার মনের করুণ ব্যাথা ও ক্ষুদ্র এই প্রচেষ্টা কবুল করুন। আমীন।
পরিশেষে আপনার শারীরিক সুস্থতা কামনা করছি। আপনি ভালো থাকুন এবং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনার সহায় হোন।

খলকু কামাল
লেখক, গবেষক ও সমাজসেবক।
১৯৮৪ সাল থেকে নিউইয়র্কে বসবাসকারী এক কর্মজীবী মানুষ। স্থায়ী নিবাস সিলেট সিটি, বাংলাদেশ
শশধসধষ৩৬০@যড়ঃসধরষ.পড়স
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status