অনলাইন

অভিবাসী শ্রমিকদের উপর কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব ও উত্তরণের উপায়

৮ জুলাই ২০২০, বুধবার, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

২০১৫ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার পথে। ২০৪১ সালের মধ্য উন্নত ও সম্মৃদ্ধ দেশে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। গত জুনে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড মাইলফলক অতিক্রম করেছে। গত এক দশকে বেকার সমস্যা দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক উত্তরণে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি প্রবাসী আয় তথা রেমিট্যান্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। করোনা মহামারীর আগেও যখন রপ্তানি আয়, বেসরকারি বিনিয়োগ, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচকগূলোতে ধীরগতি বা নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল, সেখানে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে গত অর্থ বছরে (২০১৯-২০) রেমিট্যান্স এসেছে রেকর্ড ১৮.২ বিলিয়ন ডলার যা এর আগের অর্থবছরের (১৬.৪ বিলিয়ন ডলার) তুলনায় ১০.৮৭% বেশি। গত জুন মাসে কোন একক মাস হিসেবে রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৮৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এক্ষেত্রে রেমিট্যান্সের উপর ২% প্রণোদনা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। জিডিপির ১২% অর্জিত হয় ১ কোটি ২৩ লাখ প্রবাসীর আয় হতে। কিন্তু করোনা মহামারীর অভিঘাতে বৈশ্বিক অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি মন্দায় ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় এই খাত এখন তীব্র চাপের মধ্যে আছে। চলমান মহামারীতে দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠি হলো অভিবাসী শ্রমিক। মহামারীর অভিঘাতে প্রবাসী আয় কমে যাওয়া সহ দীর্ঘমেয়াদে বিদেশে শ্রমবাজারের দুয়ার বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

করোনা মহামারীর এই সময়েও প্রবাসী আয়ের এই উল্লম্ফনে তাই উল্লসিত হওয়ার মতো কিছু নেই। আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলেছে- করোনা মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও শ্রম বাজারে যে সংকট তৈরি হয়েছে তাতে এ বছরের শেষ নাগাদ হাজার হাজার শ্রমিক দেশে ফিরে আসতে পারে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বলেছে কোভিড-১৯ এর অভিঘাতে বিশ্বব্যাপী অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ১.৬ বিলিয়ন কর্মী কর্মচ্যুত হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার। সরকারের জনশক্তি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসেবে দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের প্রায় ৮০ ভাগই এসব দেশে এবং রেমিট্যান্সের ৭৩ শতাংশের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল বা ‘জিসিসি’ দেশগুলো থেকে। কিন্ত করোনার আঘাতে বিশ্ব বাজারে তেলের দরপতনের ফলে সৌদি সহ মধ্য প্রাচ্যের অন্যান্য দেশের অর্থনীতি ইতোমধ্যে সংকুচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্যের তেলনির্ভর অর্থনীতি গত ৪০ বছরে সবচেয়ে বড় ধাক্কার মুখে পড়েছে। আইএলও বলেছে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আরব দেশগুলোতে ৫০ লাখ লোক চাকরি হারাতে পারে। তাই ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে উপসাগরীয় দেশগুলো বিশেষ করে নির্মাণ খাতে বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে তহবিল ঘাটতির কারণে। ফলে নির্মাণ খাতে কাজ করা বাংলাদেশের বেশিরভাগ অদক্ষ শ্রমিক সহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকেরাও কাজ হারিয়েছে। নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়া শ্রমিকরাও এখন বেকার। অনেকেরই জীবন নির্বাহের জন্য পর্যাপ্ত সঞ্চয় নেই। অনেককে নির্বিচারে আটক করা হয়েছে। ডিটেনশন সেন্টারে আটকাবস্থায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এপ্রিলের শুরু থেকেই সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের ৮ টি দেশ শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ দিচ্ছে। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হিসেবে এ বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ ২ লাখ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফেরত আসে। সিপিডির হিসাবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে ১ লাখেরও বেশি প্রবাসী দেশে ফিরেছে। সরকারি হিসেবে লকডাউন শুরু হওয়ার পর ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ১৬ হাজার শ্রমিক দেশে ফিরেছে এবং আরও ৫-৭ লাখ কর্মীর দেশে ফেরার আশঙ্কা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা সংখ্যাটা হবে ১০ লক্ষ।
করোনাবিধ্বস্ত প্রতিটি দেশ নিজের অর্থনীতি আর কর্মীদের বাঁচাতে চুক্তি নবায়ন না করে অভিবাসী কর্মীদের দেশে ফিরতে বাধ্য করছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকেও তাই অনেক শ্রমিক দেশে ফিরে আসছে। বেকার হয়ে পড়া প্রবাসীরা দেশে ফেরার আগে জমানো টাকা ও সব বিক্রি করে দেশে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে। আবার যারা ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিল তারাও ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে সীমিত আকারে ফ্লাইট চালু হওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকায় টিকেটের মূল্য অন্তত চারগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ১.৫ লক্ষ টাকার টিকেট কিনতে হচ্ছে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে। ফলে সময় মতো ফিরতে না পারায় অনেকেরই কাজ এবং ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। এদিকে নতুন শ্রমিক রপ্তানিও সম্ভব হচ্ছে না। মালয়শিয়া সহ কয়েকটি দেশ এ বছর শ্রমিক না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে প্রায় ১.৫ লক্ষ নতুন শ্রমিকের প্রবাস যাত্রা আটকে আছে। আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ঊর্ধ্বগতি তাই বেশি দিন টিকবে না; ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৭% হ্রাস পাবে। ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকসের এক গবেষণায় বলা হয়েছে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স হারাবে। বিশ্বব্যাংক ধারণা করছে দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহ ২২ শতাংশ কমবে।

অনেক শ্রমিককেই প্রাপ্য মজুরী, বেতন-ভাতা ও কোনো প্রকার সুযোগ সুবিধা ছাড়াই জোরপূর্বক ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি দেশে ফেরত আসা প্রায় ৭৪% শ্রমিক গড়ে প্রায় ১.৭৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ অর্থ ফেলে আসেতে বাধ্য হয়েছে। রামরুর সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার থেকে ফেরত আসা শ্রমিকরা ৯৫০০ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বকেয়া মজুরি ফেলে এসেছে। করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বিদেশ ফেরত এই প্রবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবন ও জীবিকা তাই এখন হুমকির মুখে পড়েছে। কাজ ও আয় হারিয়ে জীবনযাত্রার মান হ্রাস পাওয়া সহ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত মে মাসে ৫৫৮ জন বিদেশ ফেরত প্রবাসী শ্রমিকের উপর চালানো ব্র্যাকের এক জরিপে দেখা যায় ৮৭% প্রবাসী শ্রমিক আর্থিক অনটনে আছে এবং ৫২% শ্রমিকের জরুরী আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। তাদের বেশিরভাগেরই কোনো সঞ্চয় নেই এবং ৯১% শ্রমিক কোনো সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পায় নি।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের জরুরী সহায়তায় বিভিন্ন দেশে ৩২ মিশনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২০ কোটি টাকা নগদ প্রদান করা হয়েছে। সরকার বিদেশফেরত অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার বেইল-আউট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি ‘ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড’ ২০০ কোটি টাকার ঋণ তহবিল গঠন করেছে যা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। তবে এই তহবিল মূলত প্রাবাসীদের নিজেদের টাকায় গড়া। দুটি প্যাকেজই সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হবে ফিরে আসা অভিবাসী শ্রমিকদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে পুনর্বাসনের জন্য।
কিন্তু এসব উদ্যোগ পর্যাপ্ত নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে (২০২০-২১) অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ প্রতিফলিত হয় নি। প্রবাস ফেরত শ্রমিকদের সংখ্যার বিচারে প্রণোদনা প্যাকেজ ও ঋণ তহবিল অপর্যাপ্ত। তাছাড়া সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজে কেবল দেশে ফেরত আসা শ্রমিকেরাই অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিকেরা এই সুবিধা পাবে না।

বর্তমান সংকট মোকাবেলায় নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমুহ গ্রহণ করা যেতে পারে। ফিরে আসা অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় খাদ্য ও নগদ সহায়তা প্রদান করা। তাদের অভিযোগ নথিবদ্ধ করা ও ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অন্তর্ভুক্তি ও পুনর্বাসনের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আর্থিক প্রণোদনার আওতায় স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদান। বিদেশ ফেরত প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ, এনজিও, বিভিন্ন সামাজিক সংঘটন ও স্থানীয় কমিউনিটি পর্যায়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তি ও সহায়তামুলক পরিবেশ সৃষ্টি করা। ভ্রমণ সীমিত করার কারণে যারা কাজে যোগ দিতে পারছে না তাদের জন্য ভিসা এবং কাজের অনুমোদনের সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধিকরা। প্রবাসী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সহায়তার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট বৃদ্ধি করা। কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় সরকারের নীতি পরিকল্পনা এবং কর্মসূচীতে প্রবাসী শ্রমিকদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা। করোনাভাইরাসজনিত কারণে ফিরে আসা অভিবাসীদের পুনরায় প্রশিক্ষণ, আপ-স্কিলিং এবং পুনঃস্কিলিং প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পরিবর্তিত বাস্তবতায় শ্রমিক রপ্তানি জন্য নার্স, স্বাস্থ্য টেকনোলজিস্ট, ওষুধ বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। ফ্রি ভিসা বন্ধ করা এবং অভিবাসন ব্যয় কমানো। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে আলোচনার মাধ্যমে জোরপূর্বক প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করা। কলম্বো প্রসেস (এশিয়ার শ্রমিক রপ্তানি কারক দেশগুলোর সংগঠন) এবং আবুধাবি ডায়ালগ (শ্রমিক আমদানিকারক দেশগুলির সংগঠন) একত্রে কাজ করে এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজা। এদিকে ইউরোপের দেশগুলো অবৈধ শ্রমিকদের তাড়িয়ে দিচ্ছে না; বরং বৈধ শ্রমিকদের নানা সুযোগ সুবিধাসহ অবৈধদের বৈধ হবারও সুযোগ দিচ্ছে। তাই মধ্যপ্রাচ্যের চাপ মেনে না নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিবাদ জানানো। শ্রমিকদের মজুরি চুরির প্রতিবাদে সাম্প্রতিক শুরু হওয়া ‘ওয়েজ থেফট’ আন্দোলনে শামিল হওয়া। বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতো উন্নয়ন সহযোগী ও দাতা গোষ্ঠীর সহায়তায় বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করা যাতে করে দেশে ফেরত আসতে না হয়। গ্রামীন বিনিয়োগ এবং এসএমই খাতে প্রণোদনা সহায়তা দিয়ে অভ্যন্তরীন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এক্ষেত্রে এনজিও এবং এমএফআই গুলোকে সম্পৃক্ত করা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি। প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে আরও বেশি সক্ষম করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করা। যত দ্রুত সম্ভব অভিবাসীকর্মী প্রেরণে বাংলাদেশকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা। সেখানে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরি, নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা, নিয়মিত শ্রমবাজারে কর্মী প্রেরণ অব্যাহত রাখাসহ অভিবাসন কূটনীতি জোরদার করা।

এতসব নেতিবাচক খবরের মাঝে কিছু ভালো খবরও রয়েছে । মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইন করোনাকালীন সময়ে প্রায় ৪০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিককে বৈধ হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। ইতোপূর্বে ইতালিও সেদেশের অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার সু্যোগ করে দিয়েছে। এছাড়া আফ্রিকার কয়েকটি দেশে (উগান্ডা, মোজাম্বিক, গাম্বিয়া, তাঞ্জানিয়া, সুদান) কৃষি খাতে বাংলাদেশের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

প্রবাসী শ্রমিকদের উপর করোনার অভিঘাত মোকাবেলায় সরকারকে সম্ভাব্য সবধরনের বিকল্পই ভাবতে হবে। জরুরী ভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে শ্রমশক্তি রপ্তানির সম্ভাব্য নতুন ক্ষেত্র খোঁজতে হবে এবং সেই সাথে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে আরও বেশি অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। বর্তমান শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক তৈরি এবং দরকারী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

লেখকঃ
খায়রুল বাশার; আফিফা তাজরীন; ফৌজিয়া খান
শিক্ষার্থী, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status