এক্সক্লুসিভ
সড়কের বেহাল দশা
৮ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৮:১৮ পূর্বাহ্ন
হাটহাজারী
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: বর্তমান সরকারের অধীনে প্রায় রাস্তার উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চারিয়া মুরাদ সড়কে। স্থানীয় সংসদ সদস্য না দেখার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জনগণ। চট্টগ্রাম হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক সংলগ্ন চারিয়া নয়াহাট বাজার হয়ে মুরাদ সড়ক দিয়ে (আর্মি ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ পর্যন্ত) লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত করতে হয়। প্রতিদিন অন্তত ৪ হাজারের অধিক যানবাহন এই সড়ক দিয়ে পশ্চিমে আর্মি ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ, এমএম আগা লিমিটেড ফার্ম, কাসিলা বাংলাদেশ লিমিটেড ফার্মসহ কয়েকটি ব্রিক ফিল্ড ও ইউপি ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। গত আটবছর ধরে সড়কের বেহাল দশা হলেও সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য চারিয়া বাজার হয়ে এই সড়কের অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। বাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটিতে ৫০-৬০টি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের কার্পেটিং উঠে শতাধিক ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এসব খানাখন্দে আটকে পড়ছে যানবাহন। কিছু কিছু স্থানে ইটের খোয়া দিয়ে জোড়াতালি দেয়া হলেও যান চলাচলে তা উপযোগী নয়। এ পথে হেঁটে চলাচলও বড় দায়। চারিয়া মাদ্রাসার ১০ হাজারের অধিক ছাত্র, চারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও প্রতিদিন এই পথে হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় মানুষকে এই সড়কে যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে বেহাল সড়কে খানাখন্দে অহরহ যানবাহন উল্টে আহত হচ্ছে অনেকে। আবার জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী ও প্রসূতির পরিবহনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এই রাস্তার অটোরিকশার চালক বাদশা মিয়া বলেন, সড়কটিতে গাড়ি চলাচল ও মানুষের যাতায়াতে অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। খানাখন্দে গাড়ি উল্টে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, যা উপার্জন করি তার বড় একটি অংশ গাড়ি মেরামতে ব্যয় করতে হচ্ছে আমাদের। গত ৮ বছর ধরে সড়কের এই দুরবস্থা। অথচ আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য সড়কটির এ অবস্থা দেখেও দেখেন না। পানিভর্তি গর্তে প্রতিদিনই যানবাহন উল্টে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। কষ্ট পাচ্ছি আমরা জনসাধরণ। এ দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে এই পথে আমাদের চলাফেরা করতে হয়। এদিকে হাটহাজারী উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে এই সড়কের কোনো প্রকার মেরামত/ উন্নয়ন কাজ হয়নি। চারিয়া বাজার হতে পশ্চিমে আর্মি ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ সড়ক পর্যন্ত মেরামত চেই: ০০-২৪৯০.০ মিটার, দৈর্ঘ্য ২৪৯০.০ মিটার এ চেই: ০০-৯৬মি: পর্যন্ত আরসিসি দ্বারা উন্নয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে কারণ উক্ত চেইনেজে চারিয়া বাজার অবস্থিত বিধায় প্রায় সময় জলাবদ্ধতা থাকে। অবশিষ্ট অংশে বিভিন্ন চেইনেজে ৫০ সস ডইগ পুনঃস্থাপন সহ সম্পূর্ণ সড়কে ২৫ এমএম ডিএনসি কার্পেটিং দ্বারা মেরামতের প্রস্তাব করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সমস্ত স্থানে এজিং নাই, সেহেতু নতুন এজিং স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রয়োজন অনুসারে সে সমস্ত অংশে এজিং পিকআপ করা হয়েছে সে সমস্ত অংশে এজিং রি-সিটিং করা হয়েছে। এ রকম একটি কারিগরি প্রতিবেদন দিয়ে চট্টগ্রাম এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে পাঠানো হলেও এর কোনো সুরাহা মিলেনি।
ফুলবাড়ীয়া
ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় এলজিএসপি’র উন্নয়নমূলক কাজে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করার অভিযোগে সরজমিনে ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) একেএম গালিভ খান প্রকল্প পরিদর্শন করেন। উপজেলার আছিম পাটুলী ইউনিয়নের ২টি কালভার্ট নির্মাণকাজ ঘুরে দেখেন। ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে আছিম-পাটুলী ইউনিয়নে এলজিএসপি প্রকল্পের ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ১২ টাকায় ১০টি প্রকল্প করা হয়। ৮নং ওয়ার্ডের এলঙ্গি-কান্দানিয়া রাস্তার কালির চালা থেকে পান্নাবাড়ী সড়কের তালেব আলীর জমির পাশে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ইউ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়। ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী গত শুক্রবার বন্ধের দিন রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিক দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করেন। ইউ ড্রেন নির্মাণে বেইস ঢালাই করতে গিয়ে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হয়। একই সড়কের খাপসার খালে দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি ইউ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য রাশিদা খাতুন। তিনি নিজেই প্রকল্পের কাজটি করাচ্ছেন। কিন্তু সেই ইউ ড্রেনের বেইস ঢালাইয়ে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কাজে নিয়োজিত একজন নির্মাণ শ্রমিক। ইউপি সদস্যের দুই ছেলে লিটন ও রিপন শাবল (খন্তি) দিয়ে ঢালাই তুলে নিয়ে যায়। প্রকল্পে পরিদর্শক টিম কোনো প্রকার ঢালাই পায়নি।
আছিম-পাটুলী ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্প কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ইউপি সচিব জানায়, প্রকল্পের কাজ চলাকালীন সময় এলজিইডি’র তদারকি কর্মকর্তা ও আমার উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু তারা নাকি বন্ধের দিন ঢালাই করেছে, যেটা মোটেও ঠিক নয়। পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ছিদ্দিক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তা পরে জানানো হবে।
সিরাজদিখান
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: রাজধানী ঢাকার পাশে থাকার পরেও স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও উন্নয়নের তেমন কোনো ছোয়া পায়নি সিরাজদিখান উপজেলা বাসাইল ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের হাজারো মানুষের জীবনমান। মূলপটভূমি থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে পরিণত হয়ে আছে বাসাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের জীবন। এই গ্রামগুলোর যাতায়াতের ব্যবস্থা এতটাই খারাপ থাকায় গর্ভবতী মহিলাদের হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না সময়মতো। কাঁচা মাটির রাস্তা সরু ও ভাঙা হওয়ায় মৃত ব্যক্তির লাশের খাট গোরস্থানে নিতে যন্ত্রণা পোহাতে হয়। এই গ্রামগুলোর রাস্তাঘাট এতটাই খারাপ যে দেখার কেউ নেই। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরের সিরাজদিখানের বাসাইল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গোয়াখোলা, বাঘবাড়ি, আগলাপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নগর, মোল্লাবাড়ি, মিয়াবাড়ি, দেওয়ান পাড়া, গোয়ালপাড়া মানুষের যাতায়াতের ব্যবস্থা একেবারেই বেহাল।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়- হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের জন্য দুই কিলোমিটারের এই একটিমাত্র যোগাযোগের রাস্তা সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে জর্জরিত হয়ে আছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্ততো আছেই। প্রতিনিয়িত পথচারী ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। মাটির রাস্তার মাঝখানে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়ে আছে। বৃষ্টি হলেই ওইসব গর্তে পানি আটকে থাকে দীর্ঘদিন। এতে যানবাহন দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে স্কুল ও কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে এই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা দিয়ে। বৃষ্টি ও বর্ষাকালে শুধুমাত্র এই রাস্তার কারণে স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় যেতে পারেনা শিক্ষার্থীরা। সবচাইতে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা এবং মাছ চাষিরা, রাস্তার কারণে কৃষিপণ্য যথাসময়ে বাজারজাত করতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়তে হয় সব সময়। তাছাড়া এই রাস্তায় চলাচলকারীরা হরহামেশা দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন। রিকশা, ভ্যান, হোন্ডা চলাচলে এখন একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইউপি সদস্য হাজী মোহাম্মদ আইয়ুব খান বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ৩নং ওয়ার্ডে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে আছে আড়াই হাজার ভোটার। এইসব মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা হলো গোয়াখোলা থেকে পাথরঘাটার এই কাঁচা রাস্তা যেটা বিগত ৫/৬ বছর আগে মাটি দিয়ে করা হলেও আর সংস্কার হয়নি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা হলে অনেকেই আক্ষেপের সুরে বলেন, আমাদের এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা দেখার কেউ নেই। চেয়ারম্যান, মেম্বাররা নির্বাচনের সময় আমাদের কাছে আসে ভোট নিতে। অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেয় আমাদের যাতায়াতের রাস্তাঘাট ঠিকঠাক করে দিবেন। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর আমাদের খোঁজ-খবর নেন না। মাঝে মধ্যে কিছু টাকা বরাদ্দ দিলেও তা ঠিকমত কাজ করেনা। উপজেলা এলজিআরডি প্রকৌশলীরাও একদিনের জন্য ভালোভাবে পরিদর্শনে আসেননি ।
বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার এই রাস্তার মতো খারাপ রাস্তা আর নাই, আমি একাধিকবার উপজেলা মিটিংয়ে এই রাস্তার কথা বলেছি। তবে আমাকে আশ্বাস দিয়েছে অতি শিগগির এই রাস্তা করে দেবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শোয়াইব বিন আজাদ বলেন, এই রাস্তাটা আমি নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। আমাদের বাসাইল ইউনিয়নে যে বড় ব্রিজটি হচ্ছে যদি আমরা এই রাস্তাই না করি তাহলে এতো টাকা খরচ করে ব্রিজ করে কোনো লাভ নেই। মূলত এই ব্রিজটি হয়ে গেলেই এই রাস্তার প্রয়োজন হবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই রাস্তার কাজও দ্রুত হয়ে যাবে। আমরা ইতিমধ্যে এই রাস্তার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
ঘাটাইল
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের গোপালপুর-পিংনা সড়কের ঝাওয়াইল বাজার সংলগ্ন ঝিনাই নদীর উপর নির্মিত স্টিলের সেই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটি বর্তমানে গোপালপুর তথা ধনবাড়ী, সরিষাবাড়ী, জামালপুর সহ সারা দেশ থেকে আগত দর্শনার্থী ও স্থানীয় মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে একমাত্র পারাপারের মাধ্যম উক্ত ব্রিজটির কারণে। বিশ্বের সবচেয়ে সর্ববৃহৎ নান্দনিক সাজে সজ্জিত দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজ মসজিদটি দেখার জন্য সারা দেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরা যেমন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন তেমনি স্থানীয় জনসাধারণ ও আশপাশের বেশকয়টি উপজেলা এবং ৪/৫ টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত সেতুটি। অপরদিকে টাঙ্গাইল জেলার পশ্চিমাঞ্চলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানির কারণে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার কারনে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। সেতুটি ভেঙে গেলে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ বন্যার পানিতে আটকা পড়ে জীবননাশের উপক্রম হয়েছে বলে মত দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ ভুক্তভোগী এ সব অঞ্চলের মানুষেরা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইতিমধ্যেই সেতুটি দিয়ে যানবাহন পারাপারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে সওজ কর্তৃপক্ষ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘাটাইল (পোড়াবাড়ী)-শালিয়াজানী-গোপালপুর-সরিষাবাড়ী (জগন্নাথগঞ্জ) জেলা মহাসড়কের ঝাওয়াইল নামকস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি সেতুটি মেরামতের জন্য, আগামী ১২-০৭-২০২০ ইং তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৭:০০ ঘটিকা হতে রাত ৮:০০ টা পর্যন্ত, উক্ত সেতুর উপর দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন পারাপার ও জন সাধারণের চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
উল্লিখিত সময়ে চলাচলকারী যানবাহন সমূহকে বিকল্প সড়কপথে চলাচলের জন্য অনুরোধ করা হলো। যাত্রী/সাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন অত্র সড়ক বিভাগ।
উল্লেখ্য, গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল বাজার এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর নড় বড় ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এ ব্রিজটি এখন, দিনের বেলায় মরণ ফাঁদ আর রাতের বেলায় মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে বর্তমানে এই সেতুটি। সড়ক পথটি বেশি ব্যস্ততম হওয়ার কারণ হচ্ছে সেতুটির পূর্বপ্রান্ত ঘেঁষেই নির্মিত হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজ বিশিষ্ট ইসলামী স্থাপনা ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট পাথালিয়া মসজিদ। ইতিমধ্যে মসজিদটির প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মসজিদটির পশ্চিম প্রান্তে হাজার হাজার দর্শনার্থী, মুসল্লি এবং জেলা, উপজেলা শহর ছাড়াও অত্রাঞ্চলের ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যেতেও, অধিকাংশ যাতায়াতকারীকে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি অবশ্যই ব্যবহার করতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যস্ততম এই সড়কপথে স্টিলের তৈরি এ সেতুটি যাতায়াত কাজে বহুবছর ধরে ব্যবহার হওয়ার কারণে, ব্রিজে ব্যবহৃত স্টিলের প্রায় প্রতিটি পাটাতনই ক্ষয় হয়ে গিয়েছে। মরচে পড়ে বেশকিছু পাটাতনে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ছোটবড় ফাটল ও গর্ত। আর সে সব ফাটলে ও গর্তে গাড়ির চাকা আটকে গিয়ে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ছে নানা ধরনের যানবাহন। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা সহ নানাবিধ সমস্যা।
কয়েকদিন পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দিয়ে, মেরামতের নামে সেতুটির উপর দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ। আর প্রতিবারই অনেকটা তড়িঘড়ি করে জোড়াতালির মাধ্যমে, কোনো রকমের দায়সারা ঝালাই ও লেপ পোছ দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপারের অনুমতি দিয়ে চালু করতে পারলেই তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দ্রুত সটকে পড়েন সড়ক বিভাগের লোকজন।
আর জীর্ণদশা এ সেতুটি বহুবার দায় সারা ভাবে মেরামত করার ফলে, বর্তমানে সেতুটি ব্যবহারে সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পরায় সেতুর ওপর প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে সেতু দিয়ে চলাচলকারী অনেকগুলো যাত্রীও।
বহু বছর ধরে মরণ ফাঁদে পরিণত হওয়া জীর্ণশীর্ণ সেতুস্থলে নতুন একটি ব্রিজ তৈরির দাবি ঝাওয়াইলসহ বেশক’টি ইউনিয়ন ও গোপালপুর উপজেলাবাসীর। তাদের কাঙ্ক্ষিত চাওয়া হিসেবে, একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও, আজও টনক নড়েনি সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তাব্যক্তিদের। দেখা মেলেনি আজও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। স্থানীয়দের অভিযোগ ভোটের সময় নানাভাবে আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাস করেছেন অনেক রথী ও মহারথীরাও। বলিষ্ঠকণ্ঠে দেয়া আশ্বাসবাণীর লেশমাত্র কাজের চিহ্নরূপ দেখা যায়নি আজও।
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: বর্তমান সরকারের অধীনে প্রায় রাস্তার উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চারিয়া মুরাদ সড়কে। স্থানীয় সংসদ সদস্য না দেখার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জনগণ। চট্টগ্রাম হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক সংলগ্ন চারিয়া নয়াহাট বাজার হয়ে মুরাদ সড়ক দিয়ে (আর্মি ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ পর্যন্ত) লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত করতে হয়। প্রতিদিন অন্তত ৪ হাজারের অধিক যানবাহন এই সড়ক দিয়ে পশ্চিমে আর্মি ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ, এমএম আগা লিমিটেড ফার্ম, কাসিলা বাংলাদেশ লিমিটেড ফার্মসহ কয়েকটি ব্রিক ফিল্ড ও ইউপি ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। গত আটবছর ধরে সড়কের বেহাল দশা হলেও সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য চারিয়া বাজার হয়ে এই সড়কের অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। বাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটিতে ৫০-৬০টি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের কার্পেটিং উঠে শতাধিক ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এসব খানাখন্দে আটকে পড়ছে যানবাহন। কিছু কিছু স্থানে ইটের খোয়া দিয়ে জোড়াতালি দেয়া হলেও যান চলাচলে তা উপযোগী নয়। এ পথে হেঁটে চলাচলও বড় দায়। চারিয়া মাদ্রাসার ১০ হাজারের অধিক ছাত্র, চারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও প্রতিদিন এই পথে হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় মানুষকে এই সড়কে যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে বেহাল সড়কে খানাখন্দে অহরহ যানবাহন উল্টে আহত হচ্ছে অনেকে। আবার জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী ও প্রসূতির পরিবহনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এই রাস্তার অটোরিকশার চালক বাদশা মিয়া বলেন, সড়কটিতে গাড়ি চলাচল ও মানুষের যাতায়াতে অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। খানাখন্দে গাড়ি উল্টে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, যা উপার্জন করি তার বড় একটি অংশ গাড়ি মেরামতে ব্যয় করতে হচ্ছে আমাদের। গত ৮ বছর ধরে সড়কের এই দুরবস্থা। অথচ আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য সড়কটির এ অবস্থা দেখেও দেখেন না। পানিভর্তি গর্তে প্রতিদিনই যানবাহন উল্টে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। কষ্ট পাচ্ছি আমরা জনসাধরণ। এ দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে এই পথে আমাদের চলাফেরা করতে হয়। এদিকে হাটহাজারী উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে এই সড়কের কোনো প্রকার মেরামত/ উন্নয়ন কাজ হয়নি। চারিয়া বাজার হতে পশ্চিমে আর্মি ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ সড়ক পর্যন্ত মেরামত চেই: ০০-২৪৯০.০ মিটার, দৈর্ঘ্য ২৪৯০.০ মিটার এ চেই: ০০-৯৬মি: পর্যন্ত আরসিসি দ্বারা উন্নয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে কারণ উক্ত চেইনেজে চারিয়া বাজার অবস্থিত বিধায় প্রায় সময় জলাবদ্ধতা থাকে। অবশিষ্ট অংশে বিভিন্ন চেইনেজে ৫০ সস ডইগ পুনঃস্থাপন সহ সম্পূর্ণ সড়কে ২৫ এমএম ডিএনসি কার্পেটিং দ্বারা মেরামতের প্রস্তাব করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সমস্ত স্থানে এজিং নাই, সেহেতু নতুন এজিং স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রয়োজন অনুসারে সে সমস্ত অংশে এজিং পিকআপ করা হয়েছে সে সমস্ত অংশে এজিং রি-সিটিং করা হয়েছে। এ রকম একটি কারিগরি প্রতিবেদন দিয়ে চট্টগ্রাম এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে পাঠানো হলেও এর কোনো সুরাহা মিলেনি।
ফুলবাড়ীয়া
ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় এলজিএসপি’র উন্নয়নমূলক কাজে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করার অভিযোগে সরজমিনে ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) একেএম গালিভ খান প্রকল্প পরিদর্শন করেন। উপজেলার আছিম পাটুলী ইউনিয়নের ২টি কালভার্ট নির্মাণকাজ ঘুরে দেখেন। ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে আছিম-পাটুলী ইউনিয়নে এলজিএসপি প্রকল্পের ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ১২ টাকায় ১০টি প্রকল্প করা হয়। ৮নং ওয়ার্ডের এলঙ্গি-কান্দানিয়া রাস্তার কালির চালা থেকে পান্নাবাড়ী সড়কের তালেব আলীর জমির পাশে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ইউ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়। ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী গত শুক্রবার বন্ধের দিন রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিক দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করেন। ইউ ড্রেন নির্মাণে বেইস ঢালাই করতে গিয়ে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হয়। একই সড়কের খাপসার খালে দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি ইউ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য রাশিদা খাতুন। তিনি নিজেই প্রকল্পের কাজটি করাচ্ছেন। কিন্তু সেই ইউ ড্রেনের বেইস ঢালাইয়ে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কাজে নিয়োজিত একজন নির্মাণ শ্রমিক। ইউপি সদস্যের দুই ছেলে লিটন ও রিপন শাবল (খন্তি) দিয়ে ঢালাই তুলে নিয়ে যায়। প্রকল্পে পরিদর্শক টিম কোনো প্রকার ঢালাই পায়নি।
আছিম-পাটুলী ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্প কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ইউপি সচিব জানায়, প্রকল্পের কাজ চলাকালীন সময় এলজিইডি’র তদারকি কর্মকর্তা ও আমার উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু তারা নাকি বন্ধের দিন ঢালাই করেছে, যেটা মোটেও ঠিক নয়। পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ছিদ্দিক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তা পরে জানানো হবে।
সিরাজদিখান
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: রাজধানী ঢাকার পাশে থাকার পরেও স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও উন্নয়নের তেমন কোনো ছোয়া পায়নি সিরাজদিখান উপজেলা বাসাইল ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের হাজারো মানুষের জীবনমান। মূলপটভূমি থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে পরিণত হয়ে আছে বাসাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের জীবন। এই গ্রামগুলোর যাতায়াতের ব্যবস্থা এতটাই খারাপ থাকায় গর্ভবতী মহিলাদের হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না সময়মতো। কাঁচা মাটির রাস্তা সরু ও ভাঙা হওয়ায় মৃত ব্যক্তির লাশের খাট গোরস্থানে নিতে যন্ত্রণা পোহাতে হয়। এই গ্রামগুলোর রাস্তাঘাট এতটাই খারাপ যে দেখার কেউ নেই। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরের সিরাজদিখানের বাসাইল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গোয়াখোলা, বাঘবাড়ি, আগলাপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নগর, মোল্লাবাড়ি, মিয়াবাড়ি, দেওয়ান পাড়া, গোয়ালপাড়া মানুষের যাতায়াতের ব্যবস্থা একেবারেই বেহাল।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়- হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের জন্য দুই কিলোমিটারের এই একটিমাত্র যোগাযোগের রাস্তা সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে জর্জরিত হয়ে আছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্ততো আছেই। প্রতিনিয়িত পথচারী ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। মাটির রাস্তার মাঝখানে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়ে আছে। বৃষ্টি হলেই ওইসব গর্তে পানি আটকে থাকে দীর্ঘদিন। এতে যানবাহন দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে স্কুল ও কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে এই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা দিয়ে। বৃষ্টি ও বর্ষাকালে শুধুমাত্র এই রাস্তার কারণে স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় যেতে পারেনা শিক্ষার্থীরা। সবচাইতে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা এবং মাছ চাষিরা, রাস্তার কারণে কৃষিপণ্য যথাসময়ে বাজারজাত করতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়তে হয় সব সময়। তাছাড়া এই রাস্তায় চলাচলকারীরা হরহামেশা দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন। রিকশা, ভ্যান, হোন্ডা চলাচলে এখন একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইউপি সদস্য হাজী মোহাম্মদ আইয়ুব খান বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ৩নং ওয়ার্ডে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে আছে আড়াই হাজার ভোটার। এইসব মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা হলো গোয়াখোলা থেকে পাথরঘাটার এই কাঁচা রাস্তা যেটা বিগত ৫/৬ বছর আগে মাটি দিয়ে করা হলেও আর সংস্কার হয়নি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা হলে অনেকেই আক্ষেপের সুরে বলেন, আমাদের এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা দেখার কেউ নেই। চেয়ারম্যান, মেম্বাররা নির্বাচনের সময় আমাদের কাছে আসে ভোট নিতে। অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেয় আমাদের যাতায়াতের রাস্তাঘাট ঠিকঠাক করে দিবেন। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর আমাদের খোঁজ-খবর নেন না। মাঝে মধ্যে কিছু টাকা বরাদ্দ দিলেও তা ঠিকমত কাজ করেনা। উপজেলা এলজিআরডি প্রকৌশলীরাও একদিনের জন্য ভালোভাবে পরিদর্শনে আসেননি ।
বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার এই রাস্তার মতো খারাপ রাস্তা আর নাই, আমি একাধিকবার উপজেলা মিটিংয়ে এই রাস্তার কথা বলেছি। তবে আমাকে আশ্বাস দিয়েছে অতি শিগগির এই রাস্তা করে দেবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শোয়াইব বিন আজাদ বলেন, এই রাস্তাটা আমি নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। আমাদের বাসাইল ইউনিয়নে যে বড় ব্রিজটি হচ্ছে যদি আমরা এই রাস্তাই না করি তাহলে এতো টাকা খরচ করে ব্রিজ করে কোনো লাভ নেই। মূলত এই ব্রিজটি হয়ে গেলেই এই রাস্তার প্রয়োজন হবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই রাস্তার কাজও দ্রুত হয়ে যাবে। আমরা ইতিমধ্যে এই রাস্তার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
ঘাটাইল
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের গোপালপুর-পিংনা সড়কের ঝাওয়াইল বাজার সংলগ্ন ঝিনাই নদীর উপর নির্মিত স্টিলের সেই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটি বর্তমানে গোপালপুর তথা ধনবাড়ী, সরিষাবাড়ী, জামালপুর সহ সারা দেশ থেকে আগত দর্শনার্থী ও স্থানীয় মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে একমাত্র পারাপারের মাধ্যম উক্ত ব্রিজটির কারণে। বিশ্বের সবচেয়ে সর্ববৃহৎ নান্দনিক সাজে সজ্জিত দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজ মসজিদটি দেখার জন্য সারা দেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরা যেমন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন তেমনি স্থানীয় জনসাধারণ ও আশপাশের বেশকয়টি উপজেলা এবং ৪/৫ টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত সেতুটি। অপরদিকে টাঙ্গাইল জেলার পশ্চিমাঞ্চলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানির কারণে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার কারনে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। সেতুটি ভেঙে গেলে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ বন্যার পানিতে আটকা পড়ে জীবননাশের উপক্রম হয়েছে বলে মত দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ ভুক্তভোগী এ সব অঞ্চলের মানুষেরা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইতিমধ্যেই সেতুটি দিয়ে যানবাহন পারাপারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে সওজ কর্তৃপক্ষ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘাটাইল (পোড়াবাড়ী)-শালিয়াজানী-গোপালপুর-সরিষাবাড়ী (জগন্নাথগঞ্জ) জেলা মহাসড়কের ঝাওয়াইল নামকস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি সেতুটি মেরামতের জন্য, আগামী ১২-০৭-২০২০ ইং তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৭:০০ ঘটিকা হতে রাত ৮:০০ টা পর্যন্ত, উক্ত সেতুর উপর দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন পারাপার ও জন সাধারণের চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
উল্লিখিত সময়ে চলাচলকারী যানবাহন সমূহকে বিকল্প সড়কপথে চলাচলের জন্য অনুরোধ করা হলো। যাত্রী/সাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন অত্র সড়ক বিভাগ।
উল্লেখ্য, গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল বাজার এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর নড় বড় ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এ ব্রিজটি এখন, দিনের বেলায় মরণ ফাঁদ আর রাতের বেলায় মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে বর্তমানে এই সেতুটি। সড়ক পথটি বেশি ব্যস্ততম হওয়ার কারণ হচ্ছে সেতুটির পূর্বপ্রান্ত ঘেঁষেই নির্মিত হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজ বিশিষ্ট ইসলামী স্থাপনা ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট পাথালিয়া মসজিদ। ইতিমধ্যে মসজিদটির প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মসজিদটির পশ্চিম প্রান্তে হাজার হাজার দর্শনার্থী, মুসল্লি এবং জেলা, উপজেলা শহর ছাড়াও অত্রাঞ্চলের ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যেতেও, অধিকাংশ যাতায়াতকারীকে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি অবশ্যই ব্যবহার করতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যস্ততম এই সড়কপথে স্টিলের তৈরি এ সেতুটি যাতায়াত কাজে বহুবছর ধরে ব্যবহার হওয়ার কারণে, ব্রিজে ব্যবহৃত স্টিলের প্রায় প্রতিটি পাটাতনই ক্ষয় হয়ে গিয়েছে। মরচে পড়ে বেশকিছু পাটাতনে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ছোটবড় ফাটল ও গর্ত। আর সে সব ফাটলে ও গর্তে গাড়ির চাকা আটকে গিয়ে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ছে নানা ধরনের যানবাহন। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা সহ নানাবিধ সমস্যা।
কয়েকদিন পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দিয়ে, মেরামতের নামে সেতুটির উপর দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ। আর প্রতিবারই অনেকটা তড়িঘড়ি করে জোড়াতালির মাধ্যমে, কোনো রকমের দায়সারা ঝালাই ও লেপ পোছ দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপারের অনুমতি দিয়ে চালু করতে পারলেই তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দ্রুত সটকে পড়েন সড়ক বিভাগের লোকজন।
আর জীর্ণদশা এ সেতুটি বহুবার দায় সারা ভাবে মেরামত করার ফলে, বর্তমানে সেতুটি ব্যবহারে সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পরায় সেতুর ওপর প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে সেতু দিয়ে চলাচলকারী অনেকগুলো যাত্রীও।
বহু বছর ধরে মরণ ফাঁদে পরিণত হওয়া জীর্ণশীর্ণ সেতুস্থলে নতুন একটি ব্রিজ তৈরির দাবি ঝাওয়াইলসহ বেশক’টি ইউনিয়ন ও গোপালপুর উপজেলাবাসীর। তাদের কাঙ্ক্ষিত চাওয়া হিসেবে, একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও, আজও টনক নড়েনি সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তাব্যক্তিদের। দেখা মেলেনি আজও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। স্থানীয়দের অভিযোগ ভোটের সময় নানাভাবে আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাস করেছেন অনেক রথী ও মহারথীরাও। বলিষ্ঠকণ্ঠে দেয়া আশ্বাসবাণীর লেশমাত্র কাজের চিহ্নরূপ দেখা যায়নি আজও।