বাংলারজমিন
গোপালগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
২ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৬:১২ পূর্বাহ্ন
গোপালগঞ্জে একদিনে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক পাট ব্যবসায়ী ও এক বিকাশ কর্মীসহ মোট তিনজন মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে আলাদা ৩টি এলাকায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১২ জন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে ১৪ জনসহ জেলায় মোট ২৬ জনের মৃত্যু হলো। গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাকিবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর একটার সময় এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গোপালগঞ্জ জেলা শহরের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা লুৎফর রহমান খানের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানোর পর জুন মাসের ৩০ তারিখে তার শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর গতকাল রাত সাড়ে তিনটায় তিনি নিজবাড়ি গোপালগঞ্জের মৌলভীপাড়ায় মারা যান। অন্যদিকে, করোনা উপস্বর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিকাশ কর্মী দিপঙ্কর ও ৮০ বছরের বৃদ্ধ মোতালেব গতকাল ভোর সাড়ে ৫টায় ও সকাল ৮টার দিকে মারা যান। এদিকে করোনা ও করোনা উপস্বর্গ নিয়ে আক্রান্ত এবং মৃত ব্যক্তিদের তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। গত ২৯শে জুন গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামের মোফাজ্জেল শেখ নামের ৮৫ বছর বয়সের এক বৃদ্ধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু এদিন রাতেই তিনি মারা যান। মৃত্যুর একদিন পর ৩০শে জুন রাতে তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। পহেলা জুলাই বুধবার রাত ৭ ৫০ মিনিটের সময় আমাদের এ প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যমের একাধিক ব্যক্তি তথ্য সংগ্রহের জন্য গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাকিবুর রহমানকে ফোন করেন। এ সময় তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে নতুন করে আরো ২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় ২ জন পুলিশ কর্মকর্তা-৩ জন রাজনীতিবিদ ১৭ জন চিকিৎসক ও ৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ৭১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় তিনি গোপন রাখেন টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতীতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত মোফাজ্জেল শেখের কথা। কিন্তু মধ্যরাতে জেলা প্রশাসকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, টুঙ্গিপাড়ায় মোফাজ্জেল শেখ নামে ৮৫ বছর বয়সের এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গতকাল ভোরে বিষয়টি জানতে চেয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে এমন সন্দেহে নমুনা দিতে গিয়ে হয়রানির স্বীকার এমন একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেছেন, বুধবার তারা নমুনা দিতে গোপালগঞ্জ আড়াইশ বেড হাসপাতালে গেলে তাদের টিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর টিবি হাসপাতাল থেকে তাদের সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখানে ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর তাদের আগামী এক সপ্তাহ পরে আসার জন্য বলা হয়। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত এমন কোনো মানুষ যদি থাকে তাহলে তার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা।