অনলাইন

দাম বাড়লে সরকার চাল আমদানিতে বাধ্য হবে: খাদ্যমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৬:১২ পূর্বাহ্ন

বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বলেন, যদি কেউ চালের মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা করে তাহলে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

বুধবার দুপুরে ‘বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা’ শীর্ষক এক সভায় মন্ত্রীর মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় উপস্থিত চালকল মালিকদের উদ্দেশ্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী গুদামে চাল সরবরাহ করেন। যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায় না, গেলে মিলারদের লস হবে এবং যেসব কৃষক ধান ধরে রেখেছে তারাও লোকসান করবে।

এ সময় যেসব মিল এগিয়ে আসবে তাদেরকে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করতে ইতিমধ্যেই অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেসব মিলকে পরবর্তীতে সেভাবে মূল্যায়ন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

সাধন চন্দ্র মজুমদার আরো বলেন, করোনাকালীন সবাই বিপদগ্রস্ত। এবার না হয় লাভ একটু কম করলেন। প্রত্যেক বার লাভ সমান হয় না। এবার মানুষকে সেবা করার সুযোগ রয়েছে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন।

২০১৭ সালের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিল মালিকদের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে হাওড়ে বন্যার সময় সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির উপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল, ফলে ৪০ লাখ টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। সে কারণে সেই বছর মিল মালিক এবং কৃষক উভয় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষক বাঁচলে ধান উৎপাদিত হবে এবং আপনারা চালকল মালিকরা বেঁচে থাকবেন। কৃষক যাতে বিপাকে না পড়ে, বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক যেন ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সেজন্য এবার ৮ লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মন্ত্রী মিলগেট থেকে কোন ধান কত দামে বিক্রি হচ্ছে তা যাচাই এবং মনিটরিংয়ের জন্য উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

সঠিক সময়ে চাল দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক একটা সিলিং করে নেন, কখন, কী পরিমাণ চাল সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করবেন। সরকার সব ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে, অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন বলে উপস্থিত মিল মালিকদের অবহিত করেন। এ সময় সরকারিভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি কোনোভাবেই হবে না বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যেহেতু খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সঙ্গে আপনাদের ব্যবসা সবসময় করতে হবে, অতএব লাভ বেশি হলে চাল সরবরাহ করবেন, লাভ কম হলে চাল সরবরাহ করবেন না- এটা হতে পারে না।

সভায় সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের ৮টি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারগণ, ৮ বিভাগের বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির দু’জন করে প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status