মত-মতান্তর

ভিন্নমত রোধের আইনি কৌশল মোকাবেলায় করণীয়

মো. মিজানুর রহমান

২৫ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৪:০৩ পূর্বাহ্ন

সারা বিশ্ব যখন বৈশ্বিক মহামারি করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে, মত-পথ ভুলে মানুষ যখন মানবতার খোঁজে, তখন আমরা এক ভিন্ন দাবিতে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। সেই আতঙ্কের নাম ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। সম্প্রতি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এর মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষিক। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এ তার বিরুদ্ধে মামলা করলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গভীর রাতে গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডে নেয়া হলো। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারও করলো প্রশাসন। যদিও ওই শিক্ষিকা তার পোস্ট দেয়ার কিছুক্ষণ পরই সেটি মুছে ফেলেন এবং তার পোস্টের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের মধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষককে একই কারণে একই আইনে গ্রেপ্তার করা হলো। যতদূর জানতে পেরেছি, ওই শিক্ষক মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার নেয়া পলিসিগুলোর সমালোচনা করেছিলেন এবং স¦াস্থ্যখাতের বেহাল দশা তুলে ধরেছিলেন। অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে পরপর দু’জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের গ্রেপ্তার ভীতি ও শঙ্কা তৈরি করেছে। একইসঙ্গে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ নিয়ে নতুন করে অসন্তোষ ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এছাড়া হরহামেশাই এই আইনে বিভিন্ন বয়স, শ্রেণি ও পেশার মানুষ হয়রানি বা মামলার জালে জড়াচ্ছেন।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এর ইতিহাস বিলোপকৃত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ বা আইসিটি অ্যাক্ট-২০০৬ নিয়ে আলাপ বাদে করা সম্ভব নয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭ ধারা নিয়ে তুমুল সমালোচনা ও বিতর্ক শুর হয় আরো বছর সাত আগে থেকে। আন্দোলন ও প্রতিবাদের মুখে ২০১৮ সালে বর্তমান সরকার বিতর্কিত ৫৭ ধারা এবং আইসিটি অ্যাক্ট পুরোপুরি বিলোপ করে নতুন আইন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সে ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ অক্টোবর মাসের আট তারিখে সংসদে পাশ করানোর মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু করে।

নতুন আইনটি জনসম্মুখে আসার পর এটিও দেশের সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে সরাসরি উল্লেখ করেছিলো যে, ‘এই আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পথে বিপজ্জনক বিধিনিষেধ আরোপ করবে।’ সমালোচকদের অভিযোগ ছিলো নতুন আইনটিতে পূর্বের বিতর্কিত ৫৭-ধারা বরং আরো বহুগুণ শক্তিশালীভাবে ফিরে এসেছে। এই অভিযোগের সত্যতা আইনটির ধারাগুলোকে বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এর তৃতীয় অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ৮ ধারার মোদ্দাকথা হলো, যে কোন ডিজিটাল মাধ্যমে এমন কোন তথ্য যদি প্রকাশিত হয় যা ডিজিটাল নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয় এবং যা জাতি, জাতীয় ঐক্য, অর্থনৈতিক কর্মকা-, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, গণশৃঙ্খলাকে হুমকির মুখে ফেলে বর্ণবাদকে উস্কে দেয় তবে সরকার বিটিআরসিকে ওই তথ্যাদি মুছে ফেলতে বা আটকে রাখতে অনুরোধ করবে এবং বিটিআরসি তা বস্তবায়ন করবে। উল্লেখ্য, এখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি বা নিরাপত্তা বলতে ঠিক কি বোঝানো হয়েছে তা অস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।

অ্যাক্ট এর ষষ্ঠ অধ্যায়ের ২১ ধারায় বলা হয়েছে- কোন ব্যক্তি যদি কোন ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত কিংবা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোন প্রোপাগান্ডা প্রচার করে বা প্রচারে সাহায্য করে তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আর্টিকেল-১৯ নামক আইন বিষয়ক একটি সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, এই ধারায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংজ্ঞার যে বিস্তৃতি তা ব্যবহার করে জনস্বার্থে তৈরী হওয়া যেকোন যৌক্তিক বিতর্ককে এবং একইসঙ্গে দেশের ইতিহাস এবং জাতির পিতার ভূমিকা সংক্রান্ত যেকোন গঠনমূলক আলোচনাকে অপরাধের আওতায় আনা সম্ভব, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

একই অধ্যায়ের ২৫ ধারার উপধারা ১(এ) বলা হয়েছে- কোন ব্যক্তি যদি ডিজিটাল মাধ্যম বা কোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে জেনে-শুনে বা ইচ্ছাকৃতভাবে এমনসব তথ্যাদি প্রকাশ করে যেগুলো আক্রমণাত্মক এবং জনমনে ভীতির সঞ্চার করে অথবা মিথ্যা জেনেও কোন ব্যক্তি বিশেষকে বিব্রত, অপমান কিংবা বিরক্ত করার জন্য কোন তথ্য প্রকাশ করা হয়, তবে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে। একই ধারার ১(বি) উপধারায় বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে যদি কেউ এমন কোন তথ্য প্রকাশ করে বা সহায়তা করে যা জাতির ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত করে বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে তবে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে। আক্রমণাত্মক মনে হওয়া, বিরক্ত হওয়া, বিব্রতবোধ করা বা অপমানবোধ করা এগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে, ফলে এই ধারার অপব্যবহারের মাধ্যমেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে রোধ করার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে- কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্য নিয়ে এমন কোন তথ্য বা কোন কিছু প্রচার করে তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আর্টিকেল-১৯ এর বিশ্লেষণীয় প্রতিবেদনে এই ধারাকেও আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মত প্রদান করা হয়েছে, কেননা এই ধারায় ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধকে রক্ষা করার বিষয়টি জোর পায়নি বরং ব্যক্তির ধর্মীয় স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।

অ্যাক্টের ২৯ ধারা পেনাল কোডের ৪৯৯ ধারা অনুসরণ করে বলেছে যে, কোন ব্যক্তি কোন ওয়েবসাইটে যেকোন মানহানিকর তথ্য বা বিষয় প্রচার কিংবা প্রকাশ করলে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাভোগ এবং/অথবা সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা ভোগ করবে। এই ধারায় এটি অস্পষ্ট যে ’মানহানি’ বলতে সুনির্দিষ্টভাবে কি বোঝানো হয়েছে। ফলে এই ধারার ব্যবহার করেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রোধ করা সম্ভব।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের সপ্তম অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত ৪৩ ধারায় পুলিশকে শুধুমাত্র তার সন্দেহের ভিত্তিতে বিনা ওয়ারেন্টে অনুসন্ধান, জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এই ধারা নিয়েও সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন, তারা সংশয় প্রকাশ করেছিলেন যে, এই ধারার অপব্যবহার করে বিনা কারণে পুলিশি হয়রানি, গ্রেপ্তার হতে পারে এবং সর্বোপরি মতপ্রকাশের স¦াধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে।

উপর্য্ক্তু ধারাগুলোকে একটু সাবধানী চোখে দেখলেই বুঝতে বাকি থাকে না যে, আইসিটি অ্যাক্ট-২০০৬ এর ৫৭ ধারার সবগুলো উপাদান-ই এই ধারাগুলোতে বিদ্যমান। তাহলে আইসিটি অ্যাক্ট-২০০৬ বিলোপ করে লাভটা হলো কি? অনেকের মতেই এই আইন চোখে ধুলো দেয়া বৈ কিছু নয়। তাহলে রাষ্ট্র ও সরকার কর্তৃক এমন আইনি কলাকানুনের মধ্যদিয়ে নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণের এই কৌশলকে আমরা কিভাবে দেখবো? এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারে লফেয়ার (ষধভিধৎব) ধারণাটি। লফেয়ার ধারণাটি মূলত ব্যবহার করা হয় যখন নিপীড়নমূলক বা স¤্রাজ্যবাদী সমাজ বা রাজনৈতিক ব্যাবস্থাসমূহে, এমনকি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতেও কোন রাষ্ট্র বা সংস্থা যখন আইনের নেতিবাচক, আক্রমণাত্মক, নিপীড়নমূলক এবং প্রতিনিধিত্বমূলক অপব্যবহারের মাধ্যমে তার অন্যায্য নীতিগুলোকে ন্যায়সঙ্গত করে, এমনকি তার হেজেমনিক কার্যকলাপগুলোকে আরো শক্তিশালী করে তেমন একটি অবস্থা বোঝানোর ক্ষেত্রে। এই ধারণাটি সর্বপ্রথম আলোচনায় আসে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে। এই ধারণাটি দিয়ে একেবারে শুরুতে বোঝানো হতো যুদ্বাবস্থায় অস্ত্র হিসেবে আইনের অপব্যবহারকে, পরবর্তীতে লিসা ভানহালা এবং জেফ হেন্ডমেকার এর মতন সামাজিক-আইনবিষয়ক প-িতরা এই ধারণাটিকে আরো বিশদভাবে সমাজে বা রাষ্ট্রে আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে আধিপত্য, অবিচার, নিপীড়ন কিভাবে টিকে থাকে সে বিষয় বোঝার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এবং এর পূর্বসুরী আইসিটি অ্যাক্ট এর ৫৭ ধারা উভয়ের এর চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং সাম্প্রতিক সময়ে ও অতীতে এই আইনের ব্যবহারের ধরণ আইনটিকে রাষ্ট্র কর্তৃক অনুমোদিত এক ধরনের লফেয়ার হিসেবে অভিহিত করা যায়, যা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নীতি ও মূল্যবোধের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এর মত রাষ্ট্রীয় লফেয়ার মোকাবেলায় লিগ্যাল মোবিলাইজেশন কৌশল হিসেবে ফলপ্রসূ হতে পারে। লিগ্যাল মোবিলাইজেশন বা আইনি সংহতি একাধারে একটি তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক ধারণা। মোটাদাগে লিগ্যাল মোবিলাইজেশন বলতে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইনি কাঠামোর মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রের নাগরিক বা কোন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা যখন বিভিন বৈধ আইনি কৌশল ব্যবহারের মধ্যদিয়ে নিপীড়নমূলক রাষ্ট্রীয় আইন ও কর্মকা-কে মোকাবেলা করার প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়। লিগ্যাল মোবিলাইজেশেনের কর্মকৌশলগুলোর মধ্যে পড়ে কোর্টে লিটিগেশনের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা এবং নিপীড়নমূলক আইনের বিলোপ সাধনের প্রচেষ্টা করা, সামাজিক আন্দোলন ও প্রচারণার মধ্যদিয়ে লফেয়ারের বিপক্ষে বৃহত্তর সামাজিক ঐক্য গড়ে তোলা ইত্যাদি। মোদ্দা কথা হলো, আইনি কাঠামোর মধ্যে স্বীকৃত বৈধ কর্মকৌশলগুলোর মধ্যদিয়ে যখন নাগরিক বা সুশীল সমাজ কোন ইতিবাচক সামাজিক, রাজনৈতিক ও আইনি পরিবর্তন আনতে চায়, সে প্রক্রিয়াকে লিগ্যাল মোবিলাইজেশন বলা যেতে পারে। উপরন্তু লিগ্যাল মোবিলাইজেশন লফেয়ার এর বিপক্ষে অন্যতম কার্যকরী কৌশল হিসেবে স্বীকৃত।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮-কে যদি আমরা লফেয়ার হিসেবে বিবেচনা করি তবে সেক্ষেত্রে আইনি সংহতি বা লিগ্যাল মোবিলাইজেশনের অন্যতম কৌশল হতে পারে লিটিগেশনের মাধ্যমে কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এই ভাগের অন্তর্ভূক্ত অনুচ্ছেদ ৩৯-এ নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া আছে। আবার বিশ্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ১৯ নং অনুচ্ছেদেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির (ওঈঈচজ) ১৯ অনুচ্ছেদেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রগুলোকে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ এই চুক্তিতে ২০০০ সালে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে প্রবেশ করে, সে হিসেবে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় আইনিভাবে দায়বদ্ধ। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে স্ট্র্যাটেজিক লিটিগেশন হতে পারে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এর বিপক্ষে অন্যতম কৌশল। কোর্ট নির্ভর এই লিটিগেশনগুলো তথাকথিত অর্থে যদি সফল নাও হয়, তবুও এগুলোর সামাজিক প্রভাব বিরাট। বিশেষ করে সমাজ ও রাষ্ট্রে যে বিষয় নিয়ে লিটিগেশন করা হবে তা নিয়ে আলোচনা তৈরি হবে এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। অপর আরেকটি কৌশল ইতিমধ্যেই অনেকেই নেয়া শুরু করেছেন, তা হলো- সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টায় গণপ্রচারণা বা পাবলিক ক্যাম্পেইন। পাবলিক ক্যাম্পেইনিং বৃহত্তর সামাজিক পরিসরে সচেতনতা ও ঐক্য গড়ে তুলতে কার্যকরী একটি কৌশল হিসেবে লিগ্যাল মোবিলাইজেশন ডিসকোর্সে স্বীকৃত। সেটা হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অথবা অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে প্রতিবাদ এবং জনসচেতনতা তৈরির মধ্যদিয়ে। আইনি পদক্ষেপ এবং বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের যুগপৎ সমন্বয় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এর মত রাষ্ট্রের আইনি নিপীড়নমূলক কলাকানুনকে মোকাবেলায় কার্যকরী হতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status