মত-মতান্তর
বাজেট: করোনা করে না করুণা’ কিছু আপন কিছু পর...
প্রফেসর ড. মো. সদরুল আমিন
১০ জুন ২০২০, বুধবার, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন
দেশের সর্বাধিক মেগা প্রকল্পের ও উন্নয়ন প্রচার প্রকাশের বছরের সংকটাপন্ন বাজেট ইস্যু। সাথী হল কাবাব মে হাড্ডি-নবেল করোনা, আম্ফান ও সংকটাপন্ন কর্মসংস্থান। কথা হল বর্তমানের শতক-শ্রেষ্ঠ এই কোভিড-১৯ সংকটের কারণ কি? সারা দুনিয়ায় একই সময়ে ঘটে চলেছে বলে বলা যায় এটি স্থানীয় জলবায়ুভিত্তিক নয়। কাল ও পাত্র ভিত্তিক হতে পারে, তবে গরীব-ধনী, ফর্সা-কালো বা বয়স-শিক্ষা কোনটাই স্পষ্ট ফ্যাক্টর নয়। তবে মহিলার চেয়ে পুরুষ ও তরুণের চেয়ে বয়স্ক অধিক আক্রান্ত হয়েছে বা মৃত্যু বরণ করছে। আপনচ্যুত পর পরিবেশ ব্যস্ত পুরুষ, যাদের হাত-নাক-মুখের লাগাম ঢিলা, তারাই অধিক ভারনারেবল। যৌক্তিক কারণে তাই এ সমস্যার ধনন্তরী সমাধান দেয়া হয়েছে- ঘরে থাকুন, হাত ধোন, সামাজিকতা (মেকি প্রদর্শণীমূলক আচরণসহ) নিয়ন্ত্রণ করুন, ভাল খান-দু’নয়নে হাসুন (নেত্রকোণার হাসি নয়)-ঘুমান। বাজেট মৌসুমে বিশ্ব করোনার প্রেক্ষিতে দেশের অবস্থা অনুধাবন করাতে এ লেখাটির স্মরণ ও অবতারণা।।
স্মর্তব্য এই লেখাটির রেফারেন্স হলো ২টি পূর্ব প্রকাশিত লেখা। প্রথমটি ’কিছু আপন কিছু পর ..(১) বাংলা বাজার পত্রিকা ৫ এপ্রিল ১৯৯৪। দ্বিতীয়টি ’কিছু আপন কিছু পর ..পৃষ্ঠা ৯৬। (২) ৯এপ্রিল ১৯৯৪, পৃষ্ঠা ১৫৪। এই ২টি লেখার আপডেট সংশ্লেষণ সংযুক্ত হয়েছে দুরন্ত পাবলিকেশনএর ” গভর্ন্যান্স ইন বাংলাদেশ- নেত্রকোণার হাসি চাই না শীর্ষক ২০২০ সংকলনে। প্রথম লেখাটির সার কথা ছিল -দূর্নীতির অপর নাম আইনের ফাঁক। কনক্লুশন ছিল -নো করাপশন নো কান্ট্রি, বাট মেক ইট টলারেবল, প্রাইভেট টু প্রাইভেট। দ্বিতীয় লেখাটির কনক্লুশন ছিল –-এন্ডো এন্ড এক্সো মেক সিনারজিসম, এ গুড সিস্টেম, অন ইকুয়েল লেভেল একশন। অর্থাৎ ঘর-বাইর, তথা আপন পর মিলে মিথোষ্ক্রিয়া তৈরী হয়, যা একটি ভাল করার পদ্ধতি, সমপর্যায় ক্রিয়ার অবদান।
এবার করোনা ও স্বাস্থ্য বিষয়। স্বাস্থ্য বিভাগের আইনে করোনা প্রশাসনে ব্যত্যয় ঘটে থাকলে কথায় ও কাজের ফাঁকে দূর্নীতি হতেই পারে। করোনার সকল কাজ স্বাস্থ্য ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের মধ্যে আপন-পর সমন্বয় হলে তা কম হত । স্বাস্থ্য সেবা দাতা ও গ্রহীতার কথ্য তথ্যে গ্রাহ্য পার্থক্য খুবই স্পষ্ট । আগের বাজেটে কথায় কথায় বিদেশে চিকিৎসা করতে যাওয়ার পরমূখিতা, হাসপাতালে প্রশ্বাস নেয়া, সুষ্ঠু শেষ বিদায় সহ অনেক কিছুই বিফল প্রমাণিত হল। এ সকল কার্য-কারণ বিবেচনায় নিয়ে আপাতত এটুকু বলা যায় বাজেট পরিকল্পনার ভিত্তি ও বরাদ্ধ হার পরিবর্তন দরকার। স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান বাজেট বরাদ্দ হার জিডিপির দশমিক ৯ শতাংশ, যা সমসাময়িক প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় অর্ধেকেরও কম। তাই কোনরুপ জটিলতা না করে বর্তমান বাজেটে সুশৃংখলভাবে বাজেট বাড়ানো অত্যাবশ্যক। তবে বাংলাদেশের প্রশাসনিক পলিসির সাংবিধানিক আদলে কারিগরি কৃষি শিক্ষা ও প্রকৌশল শিক্ষার সমধারায় মেডিকেল ডিগ্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এবং পরিবার পরিকল্পনা যথাস্থানে তথা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা দরকার। এতে টেকনিক্যাল স্বাস্থ্যসেবকগণ অধিকতর মনোযোগ দিয়ে জনস্বাস্থ্যসেবায় নিবেদিত হয়ে আপন-পর মিলে কাজ করতে পারবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঔষধ দেয়, কিন্তু করোনা চায় কৃষিপণ্য পুষ্টি। সেটা কৃষি বিভাগে। তাই করোনা বাজেট বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও কৃষি যুগপৎ বিবেচনার দাবীদার।
এবারের করোনার প্রেক্ষিতে প্রমাণিত হল যে কৃষি ও কৃষক এদেশের মূল শক্তি। অথচ আমরা বহুবিধভাবে কৃষি ও কৃষককে রাষ্ট্রীয় কল্যাণসেবা থেকে বিমূখ করে করোনা ভালনারেবল ডাউনগ্রেডেড বহি:চাকরী ও আর.জি সেবা (শিল্প) খাত মরীচিকার পিছনে হাজার হাজার কোটি টাকা ঢালছি। তারপরও অস্থিরতা কমে নাই। এ প্রসংগেই চলে আসে কৃষি ও কৃষকের কথা।এবার করোনা থেকে সঠিক শিক্ষা তথা কৃষি শিক্ষা নেয়ার পালা। ১৯৯৩-৯৪ সাল থেকে ’কিছু আপন কিছু পর’ .. সহ অন্যান্য সহসম্পাদকীয় লেখায় আমি বলার চেষ্টা করেছি যে কৃষিকে কম আকর্ষণীয় করার ফলে পল্লীজনবল দলে দলে টিফিন কেরিয়ার হাতে শহরে যাচ্ছে। তবে ২০-৩০বছরের মধ্যে তারা ফেরৎ আসতে শুরু করলে তখন কোন খাতে যাবে? স্ব-চলৎশক্তি হারানো কৃষি তাদের গ্রহণ করতে পারবে কি? যদি সত্যি হয় যে অন্যান্য সেকেন্ডারি খাত থেকে উদ্ধৃত্ত প্রায় ৩০% শ্রমশক্তিকে ধারণ করার সাধ্য কার? তা একমাত্র কৃষিই পারে যদি বর্তমান বছরের উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়, বর্তমানের চেয়ে অন্তত: দ্বিগূণ। অসহায় কৃষকের ফসল কাটা ও পণ্য পরিবহণ নিয়ে ফটোসেশন করা লজ্জাজনক। তাই আমার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ হল: বর্তমান সৃষ্ট পরিস্থিতির কর্মসংস্থান ব্যালেন্স করতে নিবন্ধিত কৃষকের গ্রামে বিশেষায়িত কৃষি গুদাম তৈরী ও করোনা বাজার ব্যবস্থাপনা, কৃষি উৎপাদন সেবা প্রণোদনা, করোনা মোকাবিলা করে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং ভিত্তিক ডিজিটাল পদ্ধতির কৃষি শিক্ষা ও কৃষক প্রশিক্ষণ, এবং আমদানী বিকল্প কৃষি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বাজেট উদ্দেশ্য-বিধেয় সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্ধ, জিডিপির হিসাবে বর্তমানের অন্তত: দ্বিগূণ। এদেশের আপনার হল কৃষি আর আপন হল কৃষক।
মনে করা যেতে পারে যে শতাধিক বছর আগে ম্যালেরিয়া -প্লেগ-দুর্ভিক্ষ নিয়ে রবি ঠাকুরের ভাষ্য ছিল- ’ম্যালেরিয়া প্লেগ-দুর্ভিক্ষ কেবল উপলক্ষ মাত্র, তাহারা বাহ্যলক্ষণ মাত্র। মূল ব্যাধি দেশের মজ্জার মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে। আমরা এতদিন একভাবে চলিয়া আসিতেছিলাম- আমাদের হাটে বাটে গ্রামে পল্লীতে আমরা একভাবে বাঁচিবার ব্যবস্থা করিয়াছিলাম, আমাদের সে ব্যবস্থা বহুকালের পূরাতন”। বলাই যায়-তিনি বলতে চেয়েছেন আমরা আপন ছেড়ে অধিক হারে পরের দিকে ঝুকে পড়ছি। আমরা রবি ঠাকুরের আত্রাই সমবায় কৃষি খামার ছেড়ে বিশ্ব ব্যাংকের দিতে ঝুঁকেছি, জৈব সার ছেড়ে কৃষিবিষ, কৃষি শিল্প ছেড়ে কৃত্রিম শিল্প কৃষি ও সেবা শিল্প করছি যা শেষ পর্যন্ত করোনা কৃষি মোকাবিলা করার শক্তি মনোবৃত্তি কমিযে দিচ্ছে। লেখার শুরুতে ফিরে যাই।
দেশের উন্নয়ন প্রচার প্রকাশের বছরে করোনার কারণে বাজেট আজ সংকটাপন্ন । বাজেট আজ করোনার করুণা প্রার্থী । কিন্তু করোনা করুণা করে সরে যাবে না। সাথে নিয়ে চলার প্রস্তুতি নিতে হবে যার শক্তি যোগাবে কৃষি ও প্রকৃত কৃষক, প্রাকৃতিক খাবার ও পারিবারিক বন্ধন। শতক শ্রেষ্ঠ এই কোভিড-১৯ সংকটের একটি কারণ হতে পারে সমস্যার কারণকে কাবাডি খেলার মত পুরুষালী মনোভাব প্রভাবে গ্রাহ্য না করা। অস্বাস্থ্যকর সামাজিকতা প্রদর্শণীমূলক আচরণ ও কাজ বেড়ে যাওয়া, আরও কিছু । এসব কারণ নিরসণের জন্য আমাদেরকে ’পর’ কমিয়ে ’আপন’ অংশের কাজের বাজেট বাড়াতে হবে। জাতীয় উৎপাদন ও সরকারী ব্যক্তিক প্রশাসনিক বরাদ্দ বাড়াতে হবে, তাতে বহু উন্নয়ন নামের ফাঁক-ফোঁকরের দূর্নীতি কমে যাবে। কিছু থাকবে হবে তা হবে প্রাইভেট পর্যায়ে, কাকেরটা চিলে খাবে, সরকার নিরাপদ থাকবে। আবার বলতে হয়- ”কিছু আপন কিছু পর..সেথায় গিয়ে বসত কর’। শহরে থাকতে পারি তবে গ্রাম ছাড়বো না । এন্ডো এন্ড এক্সো মেক সিনারজিসম, আপন পর মিলে মিথোষ্ক্রিয়া তৈরী হয়। একটি দেশের মূল প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার ভিত্তিক বাজেট এই আপন-পর মিথোষ্ক্রিয়া তৈরী করতে পারে। এবারের করোনা মৌসুমের বাজেট প্রদান করুক আমাদের করুণামূখী না হওয়ার আর্থিক ভিত্তি স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি উপাদান, কৃষি জীবিকা ও নির্মল হাসি।
স্মর্তব্য এই লেখাটির রেফারেন্স হলো ২টি পূর্ব প্রকাশিত লেখা। প্রথমটি ’কিছু আপন কিছু পর ..(১) বাংলা বাজার পত্রিকা ৫ এপ্রিল ১৯৯৪। দ্বিতীয়টি ’কিছু আপন কিছু পর ..পৃষ্ঠা ৯৬। (২) ৯এপ্রিল ১৯৯৪, পৃষ্ঠা ১৫৪। এই ২টি লেখার আপডেট সংশ্লেষণ সংযুক্ত হয়েছে দুরন্ত পাবলিকেশনএর ” গভর্ন্যান্স ইন বাংলাদেশ- নেত্রকোণার হাসি চাই না শীর্ষক ২০২০ সংকলনে। প্রথম লেখাটির সার কথা ছিল -দূর্নীতির অপর নাম আইনের ফাঁক। কনক্লুশন ছিল -নো করাপশন নো কান্ট্রি, বাট মেক ইট টলারেবল, প্রাইভেট টু প্রাইভেট। দ্বিতীয় লেখাটির কনক্লুশন ছিল –-এন্ডো এন্ড এক্সো মেক সিনারজিসম, এ গুড সিস্টেম, অন ইকুয়েল লেভেল একশন। অর্থাৎ ঘর-বাইর, তথা আপন পর মিলে মিথোষ্ক্রিয়া তৈরী হয়, যা একটি ভাল করার পদ্ধতি, সমপর্যায় ক্রিয়ার অবদান।
এবার করোনা ও স্বাস্থ্য বিষয়। স্বাস্থ্য বিভাগের আইনে করোনা প্রশাসনে ব্যত্যয় ঘটে থাকলে কথায় ও কাজের ফাঁকে দূর্নীতি হতেই পারে। করোনার সকল কাজ স্বাস্থ্য ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের মধ্যে আপন-পর সমন্বয় হলে তা কম হত । স্বাস্থ্য সেবা দাতা ও গ্রহীতার কথ্য তথ্যে গ্রাহ্য পার্থক্য খুবই স্পষ্ট । আগের বাজেটে কথায় কথায় বিদেশে চিকিৎসা করতে যাওয়ার পরমূখিতা, হাসপাতালে প্রশ্বাস নেয়া, সুষ্ঠু শেষ বিদায় সহ অনেক কিছুই বিফল প্রমাণিত হল। এ সকল কার্য-কারণ বিবেচনায় নিয়ে আপাতত এটুকু বলা যায় বাজেট পরিকল্পনার ভিত্তি ও বরাদ্ধ হার পরিবর্তন দরকার। স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান বাজেট বরাদ্দ হার জিডিপির দশমিক ৯ শতাংশ, যা সমসাময়িক প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় অর্ধেকেরও কম। তাই কোনরুপ জটিলতা না করে বর্তমান বাজেটে সুশৃংখলভাবে বাজেট বাড়ানো অত্যাবশ্যক। তবে বাংলাদেশের প্রশাসনিক পলিসির সাংবিধানিক আদলে কারিগরি কৃষি শিক্ষা ও প্রকৌশল শিক্ষার সমধারায় মেডিকেল ডিগ্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এবং পরিবার পরিকল্পনা যথাস্থানে তথা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা দরকার। এতে টেকনিক্যাল স্বাস্থ্যসেবকগণ অধিকতর মনোযোগ দিয়ে জনস্বাস্থ্যসেবায় নিবেদিত হয়ে আপন-পর মিলে কাজ করতে পারবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঔষধ দেয়, কিন্তু করোনা চায় কৃষিপণ্য পুষ্টি। সেটা কৃষি বিভাগে। তাই করোনা বাজেট বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও কৃষি যুগপৎ বিবেচনার দাবীদার।
এবারের করোনার প্রেক্ষিতে প্রমাণিত হল যে কৃষি ও কৃষক এদেশের মূল শক্তি। অথচ আমরা বহুবিধভাবে কৃষি ও কৃষককে রাষ্ট্রীয় কল্যাণসেবা থেকে বিমূখ করে করোনা ভালনারেবল ডাউনগ্রেডেড বহি:চাকরী ও আর.জি সেবা (শিল্প) খাত মরীচিকার পিছনে হাজার হাজার কোটি টাকা ঢালছি। তারপরও অস্থিরতা কমে নাই। এ প্রসংগেই চলে আসে কৃষি ও কৃষকের কথা।এবার করোনা থেকে সঠিক শিক্ষা তথা কৃষি শিক্ষা নেয়ার পালা। ১৯৯৩-৯৪ সাল থেকে ’কিছু আপন কিছু পর’ .. সহ অন্যান্য সহসম্পাদকীয় লেখায় আমি বলার চেষ্টা করেছি যে কৃষিকে কম আকর্ষণীয় করার ফলে পল্লীজনবল দলে দলে টিফিন কেরিয়ার হাতে শহরে যাচ্ছে। তবে ২০-৩০বছরের মধ্যে তারা ফেরৎ আসতে শুরু করলে তখন কোন খাতে যাবে? স্ব-চলৎশক্তি হারানো কৃষি তাদের গ্রহণ করতে পারবে কি? যদি সত্যি হয় যে অন্যান্য সেকেন্ডারি খাত থেকে উদ্ধৃত্ত প্রায় ৩০% শ্রমশক্তিকে ধারণ করার সাধ্য কার? তা একমাত্র কৃষিই পারে যদি বর্তমান বছরের উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়, বর্তমানের চেয়ে অন্তত: দ্বিগূণ। অসহায় কৃষকের ফসল কাটা ও পণ্য পরিবহণ নিয়ে ফটোসেশন করা লজ্জাজনক। তাই আমার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ হল: বর্তমান সৃষ্ট পরিস্থিতির কর্মসংস্থান ব্যালেন্স করতে নিবন্ধিত কৃষকের গ্রামে বিশেষায়িত কৃষি গুদাম তৈরী ও করোনা বাজার ব্যবস্থাপনা, কৃষি উৎপাদন সেবা প্রণোদনা, করোনা মোকাবিলা করে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং ভিত্তিক ডিজিটাল পদ্ধতির কৃষি শিক্ষা ও কৃষক প্রশিক্ষণ, এবং আমদানী বিকল্প কৃষি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বাজেট উদ্দেশ্য-বিধেয় সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্ধ, জিডিপির হিসাবে বর্তমানের অন্তত: দ্বিগূণ। এদেশের আপনার হল কৃষি আর আপন হল কৃষক।
মনে করা যেতে পারে যে শতাধিক বছর আগে ম্যালেরিয়া -প্লেগ-দুর্ভিক্ষ নিয়ে রবি ঠাকুরের ভাষ্য ছিল- ’ম্যালেরিয়া প্লেগ-দুর্ভিক্ষ কেবল উপলক্ষ মাত্র, তাহারা বাহ্যলক্ষণ মাত্র। মূল ব্যাধি দেশের মজ্জার মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে। আমরা এতদিন একভাবে চলিয়া আসিতেছিলাম- আমাদের হাটে বাটে গ্রামে পল্লীতে আমরা একভাবে বাঁচিবার ব্যবস্থা করিয়াছিলাম, আমাদের সে ব্যবস্থা বহুকালের পূরাতন”। বলাই যায়-তিনি বলতে চেয়েছেন আমরা আপন ছেড়ে অধিক হারে পরের দিকে ঝুকে পড়ছি। আমরা রবি ঠাকুরের আত্রাই সমবায় কৃষি খামার ছেড়ে বিশ্ব ব্যাংকের দিতে ঝুঁকেছি, জৈব সার ছেড়ে কৃষিবিষ, কৃষি শিল্প ছেড়ে কৃত্রিম শিল্প কৃষি ও সেবা শিল্প করছি যা শেষ পর্যন্ত করোনা কৃষি মোকাবিলা করার শক্তি মনোবৃত্তি কমিযে দিচ্ছে। লেখার শুরুতে ফিরে যাই।
দেশের উন্নয়ন প্রচার প্রকাশের বছরে করোনার কারণে বাজেট আজ সংকটাপন্ন । বাজেট আজ করোনার করুণা প্রার্থী । কিন্তু করোনা করুণা করে সরে যাবে না। সাথে নিয়ে চলার প্রস্তুতি নিতে হবে যার শক্তি যোগাবে কৃষি ও প্রকৃত কৃষক, প্রাকৃতিক খাবার ও পারিবারিক বন্ধন। শতক শ্রেষ্ঠ এই কোভিড-১৯ সংকটের একটি কারণ হতে পারে সমস্যার কারণকে কাবাডি খেলার মত পুরুষালী মনোভাব প্রভাবে গ্রাহ্য না করা। অস্বাস্থ্যকর সামাজিকতা প্রদর্শণীমূলক আচরণ ও কাজ বেড়ে যাওয়া, আরও কিছু । এসব কারণ নিরসণের জন্য আমাদেরকে ’পর’ কমিয়ে ’আপন’ অংশের কাজের বাজেট বাড়াতে হবে। জাতীয় উৎপাদন ও সরকারী ব্যক্তিক প্রশাসনিক বরাদ্দ বাড়াতে হবে, তাতে বহু উন্নয়ন নামের ফাঁক-ফোঁকরের দূর্নীতি কমে যাবে। কিছু থাকবে হবে তা হবে প্রাইভেট পর্যায়ে, কাকেরটা চিলে খাবে, সরকার নিরাপদ থাকবে। আবার বলতে হয়- ”কিছু আপন কিছু পর..সেথায় গিয়ে বসত কর’। শহরে থাকতে পারি তবে গ্রাম ছাড়বো না । এন্ডো এন্ড এক্সো মেক সিনারজিসম, আপন পর মিলে মিথোষ্ক্রিয়া তৈরী হয়। একটি দেশের মূল প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার ভিত্তিক বাজেট এই আপন-পর মিথোষ্ক্রিয়া তৈরী করতে পারে। এবারের করোনা মৌসুমের বাজেট প্রদান করুক আমাদের করুণামূখী না হওয়ার আর্থিক ভিত্তি স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি উপাদান, কৃষি জীবিকা ও নির্মল হাসি।