বাংলারজমিন

কর্তৃপক্ষের গাফিলতি

দক্ষিণ খাউরিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ নদী গর্ভে

মো. সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে

৪ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৬:১৯ পূর্বাহ্ন

ভাঙছে ব্রহ্মপুত্র ভেসে যাচ্ছে মানুষের স্বপ্ন। তাণ্ডব চালিয়ে ব্রহ্মপুত্রে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। আশ্রয় হারা মানুষের জন্য তৈরি আশ্রয়ণ কেন্দ্রেও হানা দিলো ব্রহ্মপুত্র। সুবিধাভোগীর কাছে হস্তান্তরের আগেই নদী ভেঙে নিচ্ছে চিলমারী উপজেলা নয়ারহাটের দক্ষিণ খাউরিয়া আশ্রয়ণের ব্যারাকগুলো। হতাশায় আশ্রয়হীনরা। আশ্রয় পেতে পেতেই আবারো হারাচ্ছে তারা মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু। কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে দাবি এলাকাবাসী। এছাড়াও একই সঙ্গে হুমকির মুখে রয়েছে নয়ারহাট এলাকার শতশত পরিবার।
জানা গেছে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি উজানের ঢলে হঠাৎই বৃদ্ধি পেতে থাকে ব্রহ্মপুত্রের পানি সঙ্গে সঙ্গে নদী হয়ে উঠে ক্ষুধার্ত রাক্ষসী। রাক্ষসী মূর্তি নিয়ে গ্রাস করছে উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়া আশ্রয় প্রকল্প-২। ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে সদ্য নির্মিত আশ্রয়ণের ৫টি ব্যারাক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি ব্যারাকগুলো নদী গর্ভের পথে। নদী ভাঙনে আশ্রয়হীন সর্বস্বান্ত মানুষের জন্য নির্মিত হয় আশ্রয়ণটি কিন্তু সেই আশ্রয়ণে ঠাঁই পাওয়ার আগেই নদী গিলে খাচ্ছে আশ্রয়ণের একটির পর একটি ব্যারাক। হস্তান্তরের আগেই নদী গর্ভে বিলীনের পথে এই আশ্রয়ণকেন্দ্র তৈরির সময় সরকারি নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা করা হয়নি বলে জানালেন এলাকাবাসী। এলাকার শাহ আলম, জাহেনারা, লাইলিসহ অনেকে জানান, টানা বৃষ্টি, নদীর স্রোত আর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে আর নিমিষেই গিলে খাচ্ছে ভিটেমাটি গিলে খাচ্ছে আশ্রয়টুকু। এদিকে আশ্রয়হীন মানুষকে সরকারে দেয়া আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুঝে দেয়ার আগেই তা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় আশ্রয়হীন মানুষগণ হতাশায় ভুগছে। উপজেলা বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে উক্ত দক্ষিণ খাউরিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর মাটি ভরাটের জন্য ৫১৯ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। মাটির কাজ শেষ হলে সেখানে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ পরিবারের জন্য ৩০টা ব্যারাক তৈরি করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গত বছর স্থানীয় প্রশাসনকে তা হস্তান্তর করা হয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বুঝে দেয়ার পর ব্যারাকের ঘরের বরাদ্দ নিয়ে শুরু হয় টালবাহানা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের টালবাহানার ফলে বছর পেরিয়ে গেলেও আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া হয়নি আশ্রয়হীনদের আশ্রয়। গাফিলতি আর নজরদারির অভাবে সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো বাচাইয়ের কাজ শেষ না হওয়ার সঙ্গে সুবিধাভোগীর মাঝে হস্তান্তরের আগেই আশ্রয়ণ কেন্দ্র বিলীন হচ্ছে নদী গর্ভে এবং একের পর এক ব্যারাক ভেঙে নিচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা ভাঙনের কথা স্বীকার করে বলেন, নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আশ্রয়ণ প্রকল্প ছাড়াও বেশ কয়েকটি গ্রামও নদীতে চলে যাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্‌ বলেন আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরজমিন ঘুরে সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status