শেষের পাতা

ওয়াশিংটনে সেনা মোতায়েন, গভর্নরদের সতর্ক করলেন ট্রাম্প

মানবজমিন ডেস্ক

৩ জুন ২০২০, বুধবার, ৮:১১ পূর্বাহ্ন

জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতা থামাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে সেনা মোতায়েন করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। অন্য রাজ্য ও শহরে সেনা মোতায়েনের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি বিভিন্ন শহর ও রাজ্য কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হয় এবং নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে তিনি সেখানে সেনা মোতায়েন করবেন এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান করবেন। উল্লেখ্য, মিনিয়াপোলিসে পুলিশের নৃশংস নির্যাতনের পর কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সপ্তম দিনের মতো সেখানে বিক্ষোভ চলছিল। একে একে তা ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও শহরে। শুরু হয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কমপক্ষে ২৫টি শহরে দেয়া হয় কারফিউ। তারপরও বিক্ষোভ থামছে না। ছড়িয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৭৫টি শহরে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে গত সোমবার সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখছিলেন তখন পাশের পার্ক থেকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে সরিয়ে দিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
কয়েক ডজন বড় শহরে রাতভর কারফিউ বহাল রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৫টা পর্যন্ত লকডাউনের আওতায় রয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটি। ওয়াশিংটন ডিসিতে আরো দু’রাত বর্ধিত করা হয়েছে কারফিউ। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পিছু হটার নয়। ২৫শে মে মিনিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার পর পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাউভিনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া অন্য তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে গত সোমবার বলা হয়েছে, জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করা হয়েছে।
এদিন হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেন থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তখন পাশেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, জর্জ ফ্লয়েডের নৃশংস মৃত্যুতে সব মার্কিনিই পীড়িত ব্যথিত। তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ফ্লয়েডের স্মৃতিকে ক্ষোভের দাঙ্গা দিয়ে ডুবিয়ে দেয়া উচিত হবে না। গত রোববার রাজধানী ওয়াশিংটনে লুটপাট ও সহিংসতাকে তিনি পুরোপুরি হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন। প্রতিশ্রুতি দেন সেখানে নিরাপত্তা বৃদ্ধির। তার ভাষায়- দাঙ্গা, লুটপাট, ভাঙচুর, অবমাননা ও সম্পদের ক্ষতি করা বন্ধ করতে আমি হাজার হাজার সশস্ত্র সেনা সদস্য, সেনাবাহিনীর পার্সোনেল এবং আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মোতায়েন করছি। এরপরই তিনি বিক্ষোভের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি এর জন্য দায়ী করেন ‘পেশাদার নৈরাজ্যকারী’ ও ফ্যাসিস্টবিরোধী গ্রুপ ‘এন্টিফা’কে। রোববার তিনি এন্টিফা’কে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার কথা বলেন।
তিনি বিভিন্ন শহরে ও রাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছেন এর আগেই। তারপর থেকেই প্রায় ১৬ হাজার সেনা ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ট্রাম্প আরো যোগ করেন, যদি কোনো শহর বা রাজ্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আমিই সেনাবাহিনী মোতায়েন করবো। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করবো। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আয়োজকদের আমি বলে দিতে চাই, আপনাদের কঠিন ফৌজদারি অপরাধের শাস্তি পেতে হবে।
তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন সিনিয়র ডেমোক্রেট, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, মার্কিন জনগণের বিরুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করছেন ট্রাম্প।
গত সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়তে থাকে যুক্তরাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের বিষয়ে তিনি কী পদক্ষেপ নেন সে বিষয়ে। ওয়াশিংটন ডিসিতে সূর্যাস্তের সময় দ্রুততার সঙ্গে রোজ গার্ডেনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি তার কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা দেন। সেখানে তিনি গভর্নরদের সতর্ক করেন। বলেন, যদি তারা জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারেন তাহলে কয়েক শতাব্দীর পুরনো আইন ব্যবহার করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের দেশের মাটিতেই মোতায়েন করবেন। ডিস্ট্রিক অব কলাম্বিয়া যেহেতু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অধীনে, তাই তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status