ভারত
আনলক হওয়ার প্রথম দিনেই কলকাতায় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন, প্রবল যানজটে দুর্ভোগ মানুষের
কলকাতা প্রতিনিধি
১ জুন ২০২০, সোমবার, ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
একদিকে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে জনজীবন স্বাভাবিক করার তাগিদে অফিস থেকে কলকারখানা, শপিং মল থেকে হোটেল-রেস্তরাঁ গতকাল থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। আর আনলক লকডাউনের প্রথম দিনেই শহরের চেহারা দেখে বিশেষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলেছেন, সংক্রমণকে আর বোধহয় ঠেকানো গেল না। জীবিকার তাগিদে মানুষ ঝুঁকি নিয়েই পথে নেমে পড়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের কথা বারে বারে জানানো হলেও অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে মানুষ উপেক্ষাই করেছেন। আর তাই ঠেলাঠেলি করে বাসে যাতায়াত শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিন অফিস খুলেছে। ফলে কর্মীরা সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে কোনো নিয়মবিধিই মানার কথা ভাবেননি। শহরে সরকারি বাসে নিয়ম অনুযায়ী যাত্রী তোলা হলেও অন্য সব গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশ। কিছু বেসরকারি বাস এদিন পথে নামলেও সেগুলোতে উঠার জন্য মানুষ যেভাবে ঠেলাঠেলি করেছেন তাতে চিন্তিত সকলেই। অবশ্য উত্তর ২৪ পরগণার বেলঘরিয়ার এক সরকারি অফিস কর্মী জানালেন, সরকারি বাসের জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করেও ওঠা যাচ্ছে না সীমিত সংখ্যক আসনের কারণে। আর বাসের সংখ্যাও অনেক কম। ট্যাক্সি পরিষেবা কোথাও পাওয়া যায়নি। বরং ঝোপ বুঝে কোপ মারার চেষ্টা করেছে অটোচালকরা। ইচ্ছামতো ভাড়া নিয়েছে, আবার সামাজিক দূরত্ব বিধিও মানেনি। অবশ্য এর সব দায় চাপানো হয়েছে যাত্রীদের দ্রুত যাবার তাগিদকেই। এরই পাশাপাশি এদিন কলকাতা শহরের যানজট অন্য সব শহরের যানজটকেও হার মানিয়েছে। এক-দেড় কিলোমিটার পথ যেতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস থেকে বিটি রোড, দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ির লম্বা সারি। ফলে মানুষ আনলক ডাউনের প্রথম দিনেই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান ধরতে যাওয়া এবং হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাওয়া যাত্রীদের দুর্ভোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক শাখার আধিকারিকরা এই যানজটের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তারা জানিয়েছেন, বাস বা গণপরিবহন খুব কম সংখ্যায় থাকলেও রাস্তায় থাকা ছোট গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাইকের সংখ্যা। হঠাৎ করে গাড়ির সংখ্যার এই বিপুল বৃদ্ধি গোটা শহরেই সামগ্রিকভাবে যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ বলে দাবি করেছেন পুলিশ। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশও এদিন রাস্তায় ছিলেন না। তাছাড়া ঝড়ে ভেঙে পড়া ট্রাফিক সিগন্যাল ও সিসি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কন্ট্রোল রুমে বসেও যানজট সামলানো যায়নি।