খেলা
‘মানুষ যতটা ভাবে আমি তত খারাপ নই’
ইশতিয়াক পারভেজ
২ জুন ২০২০, মঙ্গলবার, ৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
সাব্বির রহমান রুম্মান, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন আক্ষেপের নাম। যতটা না তিনি আলোচিত তার ক্রিকেট মেধা দিয়ে। তার চেয়ে বেশি তিনি সমালোচিত মাঠের বাইরের বিতর্কিত ঘটনায়। করোনা ভাইরাসের এই ভয়াবহ সময়ে বেশির ভাগ ক্রিকেটার আলোচনায় আছেন মানবতার সেবায়। সেই সময় তিনি ফের খবরে এসেছেন এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে মারধর করার অভিযোগে। এক কথায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্যাড বয় হিসেবে তিনি এখন সবার কাছে পরিচিত। তাই ২৮, বছর বয়সে পা রাখা এই ক্রিকেটারকে নিয়ে বেশির ভাগ ভক্তই আশা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে সাব্বির জানালেন ভিন্ন কথা। বললেন, ফিরতে চান। ক্যারিয়ার শুরু করতে চান নতুন ভাবে। মাঠের ক্রিকেট থেকে বাইরের জীবন, সবই বদলে ফেলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা তার কন্ঠে। বলেন, মানুষ তাকে যতটা খারাপ ভাবে ততটা খারাপ তিনি নয়। নিজের ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন আর ফিরে আসার লড়াই নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন দৈনিক মানবজমিনের সঙ্গে। সেই কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
ক্রিকেট নেই, কীভাবে কাটছে সময়?
সাব্বির: ২৫শে মার্চ আমি ঢাকা থেকে রাজশাহীতে চলে আসি। কারণ আমার মনে হয়েছে ঢাকায় অনুশীলন করার সুযোগ পাবো না। আমার শহরে সেটা আমি করেছি। নিয়মিত রানিং ও জিম করছি। একটাই কারণ আমি আবারো জাতীয় দলে ফিরতে চাই। তাই নিজেকে ফিট রাখতে হবে। নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার, ভুলগুলো চিন্তা করার সময় পেয়েছি। আমার মনে হয়েছে এখনই সময় ঘুরে দাঁড়ানোর।
কিন্তু বিতর্ক তো আপনার পিছু ছাড়ছে না, কিংবা বলতে পারেন আপনি নানা অঘটনের সঙ্গেই আছেন।
সাব্বির: এটা ঠিক না যে সাব্বির সব সময় মারামারি করে। মানুষ পেটায়, বা ঝগড়া করে। তিন বছর আগে একটা ভুল করেছিলাম। এক দর্শক পিটিয়েছিলাম বলে আমার বড় শাস্তিও হয়। তবে প্রশ্ন হচ্ছে ঘটনায় কি আমার একারই দোষ ছিল? কেউ যদি আমাকে গালি দেয় আমি কি চুপ থাকতে পারি! এবার যা হয়েছে সেখানেও আমি ইচ্ছা করে জড়াইনি। ক্রিকেটার বলে সবাই আমাকে দোষারোপ করে। আমার দোষ হলো আমি অন্যায় দেখলে চুপ থাকতে পারি না। মানুষের ভালো করতে যাই। তবে এখন বুঝতে পারছি চোখ বন্ধ করে থাকতে হবে।
শুধু মারামারি নয়. মাঠে আম্পয়ারদের গালি দেয়া, নারী কেলেঙ্কারির মতো ঘটনাও কি আপনার ভুল নয়?
সাব্বির: ভুলতো অবশ্যই। কিন্তু সেগুলো কি পরিস্থিতিতে হয়েছে শুধু আমিই জানি। যেমন ধরেন বিবিপিএলের সময় হোটেলে মেয়ে নিয়ে যা ঘটেছে তার পুরোটা সত্য নয়। আমি রুমে মেয়ে নিয়ে যাইনি। আমার গার্ল ফ্রেন্ড এসেছিল। তাকে নিয়ে লবিতে বসে কথা বলছিলাম। সেটি কি আমি পারি না! তখন চুপ ছিলাম কারণ আমার মনে হয়েছে কথা বললে আরো বাড়বে।
আপনি উচ্ছৃঙ্খল, বদরাগী, অনেক অনেক মেয়ে বন্ধু, তাহলে এই সব আলোচনায় কেন?
সাব্বির: ছোট ছিলাম, মেচিউর ছিলাম না এত কিছু বুঝতাম না। হয় তো কিছু ভুল আমারও ছিল। আমার মনে হয়, আমি যা না করেছি তার চেয়ে বেশি প্রচার হয়েছে। নেগেটিভ সংবাদ হয়েছে। কারণ কেউ কেউ হয়তো চেয়েছে আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে। আমার পজেটিভ থাকা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, দ্রুত উত্থান অনেকেই হয়তো সহ্য করতে পারেনি।
আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনি সহজেই মেজাজ হারান-
সাব্বির: হ্যাঁ, এটা হয়তো সত্য যে আমি কিছু দেখে চুপ করে থাকতে পারি না। কেউ আমাকে বাজে কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করি। এটি সব মানুষই করে। তবে যদি সব সময়ই মেজাজ হারাতাম তাহলে তো রোজই মারামারি করতাম।
অনেক সুযোগ পেয়েছেন সেই হিসেবে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রতি কতটা সুবিচার করতে পেরেছেন?
সাব্বির: আমি ৬৬টি ওয়ানডে খেলেছি। সব ম্যাচে পারফরম্যান্স করতে পারিনি। এটা কেউ পারবেও না। এখানে দেখার বিষয় আমি যে পজিশনে খেলি সেটি। অনেক ম্যাচেই ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছি কিন্তু কত ওভার পেয়েছি দেখতে হবে। আমার দলের টার্গেটও ছিল। আমি সব সময় দলের জন্য খেলার চেষ্টা করেছি। ভুল আমার যেটা ছিল এগ্রেসিভ ব্যাটিং। যা করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যর্থ হয়েছি। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রেও তা। সব সময় সুবিচার করার সম্ভব হয়নি।
ক্রিকেটে ফিরতে নিজের কোন ভুলটা শুধরানোর চেষ্টা করছেন?
সাব্বির: আমার টেকনিকে কোনো ভুল তেমন নেই। যেখানে ভুল সেটা হলো মানসিকতায়। অস্থির হয়ে খেলা, সব সময় এগ্রেসিভ ব্যাটিং করার চেষ্টা করা আমার ঠিক হয়নি। সেই জায়গা নিয়ে কাজ করছি। এখন আমি শুধু দলই নয়, নিজের জন্যও খেলবে। শট সিলেকশন করা, টিকে থাকার লড়াই করবো ক্রিজে।
বিবাহিত জীবনে কোনো পরিবর্তন এসেছে?
সাব্বির: দেখেন আমি সব সময় পরিবার নিয়ে চলতে পছন্দ করি। বাবা-মাকে আগে যেভাবে দেখতাম এখনো তেমনি দেখি। নতুন মানুষ সংসারে আসায় যেটা হয়েছে আাগের চেয়ে অনেক গোছানে হয়েছি। অনেক কিছু বুঝতে শিখেছি।
করোনায় মানুষের পাশে কতটা থেকেছেন?
সাব্বির: আমি বিশ্বাস করি ডান হাতে দান করলে যেন বাম হাত না জানে সেই নীতিতে। তবে আজ বলছি, আমার এলাকার ৫৫০ জন দরিদ্র পরিবারের পাশে ছিলাম। যতটুকু পেরেছি করেছি। মসজিদে খাবার দিয়েছি, ১৫’শ মানুষকে ইফতার দিয়েছি। এই সব বললাম কারণ শুধু এটা জানাতে, সাব্বির শুধু মারমারি করে না ভালো কাজ করে। সত্যি কথা বলতে মানুষ আমাকে যতটা খারাপ মনে করে আমি ততোটা নই।
ক্রিকেট নেই, কীভাবে কাটছে সময়?
সাব্বির: ২৫শে মার্চ আমি ঢাকা থেকে রাজশাহীতে চলে আসি। কারণ আমার মনে হয়েছে ঢাকায় অনুশীলন করার সুযোগ পাবো না। আমার শহরে সেটা আমি করেছি। নিয়মিত রানিং ও জিম করছি। একটাই কারণ আমি আবারো জাতীয় দলে ফিরতে চাই। তাই নিজেকে ফিট রাখতে হবে। নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার, ভুলগুলো চিন্তা করার সময় পেয়েছি। আমার মনে হয়েছে এখনই সময় ঘুরে দাঁড়ানোর।
কিন্তু বিতর্ক তো আপনার পিছু ছাড়ছে না, কিংবা বলতে পারেন আপনি নানা অঘটনের সঙ্গেই আছেন।
সাব্বির: এটা ঠিক না যে সাব্বির সব সময় মারামারি করে। মানুষ পেটায়, বা ঝগড়া করে। তিন বছর আগে একটা ভুল করেছিলাম। এক দর্শক পিটিয়েছিলাম বলে আমার বড় শাস্তিও হয়। তবে প্রশ্ন হচ্ছে ঘটনায় কি আমার একারই দোষ ছিল? কেউ যদি আমাকে গালি দেয় আমি কি চুপ থাকতে পারি! এবার যা হয়েছে সেখানেও আমি ইচ্ছা করে জড়াইনি। ক্রিকেটার বলে সবাই আমাকে দোষারোপ করে। আমার দোষ হলো আমি অন্যায় দেখলে চুপ থাকতে পারি না। মানুষের ভালো করতে যাই। তবে এখন বুঝতে পারছি চোখ বন্ধ করে থাকতে হবে।
শুধু মারামারি নয়. মাঠে আম্পয়ারদের গালি দেয়া, নারী কেলেঙ্কারির মতো ঘটনাও কি আপনার ভুল নয়?
সাব্বির: ভুলতো অবশ্যই। কিন্তু সেগুলো কি পরিস্থিতিতে হয়েছে শুধু আমিই জানি। যেমন ধরেন বিবিপিএলের সময় হোটেলে মেয়ে নিয়ে যা ঘটেছে তার পুরোটা সত্য নয়। আমি রুমে মেয়ে নিয়ে যাইনি। আমার গার্ল ফ্রেন্ড এসেছিল। তাকে নিয়ে লবিতে বসে কথা বলছিলাম। সেটি কি আমি পারি না! তখন চুপ ছিলাম কারণ আমার মনে হয়েছে কথা বললে আরো বাড়বে।
আপনি উচ্ছৃঙ্খল, বদরাগী, অনেক অনেক মেয়ে বন্ধু, তাহলে এই সব আলোচনায় কেন?
সাব্বির: ছোট ছিলাম, মেচিউর ছিলাম না এত কিছু বুঝতাম না। হয় তো কিছু ভুল আমারও ছিল। আমার মনে হয়, আমি যা না করেছি তার চেয়ে বেশি প্রচার হয়েছে। নেগেটিভ সংবাদ হয়েছে। কারণ কেউ কেউ হয়তো চেয়েছে আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে। আমার পজেটিভ থাকা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, দ্রুত উত্থান অনেকেই হয়তো সহ্য করতে পারেনি।
আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনি সহজেই মেজাজ হারান-
সাব্বির: হ্যাঁ, এটা হয়তো সত্য যে আমি কিছু দেখে চুপ করে থাকতে পারি না। কেউ আমাকে বাজে কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করি। এটি সব মানুষই করে। তবে যদি সব সময়ই মেজাজ হারাতাম তাহলে তো রোজই মারামারি করতাম।
অনেক সুযোগ পেয়েছেন সেই হিসেবে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রতি কতটা সুবিচার করতে পেরেছেন?
সাব্বির: আমি ৬৬টি ওয়ানডে খেলেছি। সব ম্যাচে পারফরম্যান্স করতে পারিনি। এটা কেউ পারবেও না। এখানে দেখার বিষয় আমি যে পজিশনে খেলি সেটি। অনেক ম্যাচেই ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছি কিন্তু কত ওভার পেয়েছি দেখতে হবে। আমার দলের টার্গেটও ছিল। আমি সব সময় দলের জন্য খেলার চেষ্টা করেছি। ভুল আমার যেটা ছিল এগ্রেসিভ ব্যাটিং। যা করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যর্থ হয়েছি। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রেও তা। সব সময় সুবিচার করার সম্ভব হয়নি।
ক্রিকেটে ফিরতে নিজের কোন ভুলটা শুধরানোর চেষ্টা করছেন?
সাব্বির: আমার টেকনিকে কোনো ভুল তেমন নেই। যেখানে ভুল সেটা হলো মানসিকতায়। অস্থির হয়ে খেলা, সব সময় এগ্রেসিভ ব্যাটিং করার চেষ্টা করা আমার ঠিক হয়নি। সেই জায়গা নিয়ে কাজ করছি। এখন আমি শুধু দলই নয়, নিজের জন্যও খেলবে। শট সিলেকশন করা, টিকে থাকার লড়াই করবো ক্রিজে।
বিবাহিত জীবনে কোনো পরিবর্তন এসেছে?
সাব্বির: দেখেন আমি সব সময় পরিবার নিয়ে চলতে পছন্দ করি। বাবা-মাকে আগে যেভাবে দেখতাম এখনো তেমনি দেখি। নতুন মানুষ সংসারে আসায় যেটা হয়েছে আাগের চেয়ে অনেক গোছানে হয়েছি। অনেক কিছু বুঝতে শিখেছি।
করোনায় মানুষের পাশে কতটা থেকেছেন?
সাব্বির: আমি বিশ্বাস করি ডান হাতে দান করলে যেন বাম হাত না জানে সেই নীতিতে। তবে আজ বলছি, আমার এলাকার ৫৫০ জন দরিদ্র পরিবারের পাশে ছিলাম। যতটুকু পেরেছি করেছি। মসজিদে খাবার দিয়েছি, ১৫’শ মানুষকে ইফতার দিয়েছি। এই সব বললাম কারণ শুধু এটা জানাতে, সাব্বির শুধু মারমারি করে না ভালো কাজ করে। সত্যি কথা বলতে মানুষ আমাকে যতটা খারাপ মনে করে আমি ততোটা নই।