বিশ্বজমিন

মিনিয়াপোলিসের গান্ধী রেস্টুরেন্ট যে কারণে বিশ্ব মিডিয়ায়

মানবজমিন ডেস্ক

৩১ মে ২০২০, রবিবার, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশ ও কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থানে। শহরজুড়ে চলছে দাঙ্গা আর অরাজকতা। এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে বিনা কারণে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের নিহত হওয়ার জেরে ওই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশি-বংশোদ্ভুত রুহুল আলমের রেস্তোরাঁ। কিন্তু তারপরও তিনি বলেছেন, তিনি এই আন্দোলন সমর্থন করেন। তার এই কাহিনী উঠে এসেছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাতায়। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন রুহুল। এনবিসি নিউজ চ্যানেলের টুডে শোতেও তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, নিজেদের গান্ধী মহল নামে রেস্তোরাঁকে এখন বিক্ষোভকারীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত করে দিয়েছেন রুহুল। পুলিশের গুলি বা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে তারা এখন সেখানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

যেদিন অজ্ঞাত দুর্বত্তদের হাতে রুহুল আলমের গান্ধী মহল পুড়ে যায়, সেদিন তিনি বলেছিলেন, এই রেস্তোরাঁ পুনরায় মেরামত করা যাবে। কিন্তু মানুষ তো আর মেরামত করা যায় না। সুতরাং, এই আন্দোলনের সাথে আমি এখনও আছি।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন রুহুল। তখন তার বয়স ১৯। প্রথমে ছিলেন নিউ ইয়র্কে। তিনি বলেন, ‘আমি যখন আমেরিকায় আসি, আমি ছিলাম অচেনা আগন্তুকের মতো। বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আর সেখানে ঠিক এখানকার মতো পুলিশই দেখেছি। আমরা এক পুলিশি রাষ্ট্রে বসবাস করেছি।’

সেই অভিজ্ঞতার কারণেই কৃষ্ণাঙ্গদের যন্ত্রণার মর্ম বোঝেন তিনি। ২০০০ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে মিনিয়াপোলিসে চলে যান তিনি। ২০০৮ সালে তিনি অবশেষে সঞ্চয় দিয়ে নিজেরই রেস্তোরাঁ খুলেন। তিনি বলেন, গত ১২ বছর ধরে আমরা একটি কমিউনিটি তৈরি করেছি। নিরাপদ কমিউনিটি। সেই কমিউনিটি কোথাও চলে যায়নি। এখানেই আছে। ২০০৮ সাল ছিল অশ্বেতাঙ্গ মানুষের জন্য খুব কঠোর সময়।
রুহুল আরও বলেন, তিনি যখন শোনেন যে, তার রেস্তোরাঁ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে, তখন তার বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের কথা মনে পড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমার তখন মনে হলো আমরা এসব ইটকাঠের কাঠামো গড়ে তুলতে পারবো। কিন্তু আমরা মানুষের জীবনকে গড়ে তুলতে পারবো না। আর আমরা অনেক প্রাণ হারিয়েছি।’

তার মেয়ে হাফসা বলেন, প্রথমে আমরা বেশ ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠি। কারণ রেস্তোরাঁই আমাদের একমাত্র আয়ের উৎস। কিন্তু বাবার শান্ত কথা শুনে নিজের ভুল বুঝতে পারি। নিজের অভিজ্ঞতাকে তিনি পুনরায় সাজাতে সক্ষম হন। বুঝতে পারেন যে এই ক্ষয়ক্ষতির চেয়েও বড় মানে আছে জীবনের।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status