বিশ্বজমিন

দিল্লির আচরণে প্রতিবেশীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে- ইমরান খান

মানবজমিন ডেস্ক

২৮ মে ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

ভারতে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার শান্তিতে হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে বলে বিশ^বাসীকে সতর্ক করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বিশ^বাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ভারতের ‘আগ্রাসী’ ও ‘সম্প্রসারণবাদ’ শান্তিতে কিভাবে হুমকি হয়ে উঠেছে। বুধবার তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দিল্লির আচরণে শুধু ইসলামাবাদ নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। এতে বলা হয়, বুধবার ইমরান খান টুইট করে আঞ্চলিক উত্তেজনার বিষয়ে বিশ^বাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করেন। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়ে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পিটিভিতে বার্তা দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার টুইটে লিখেছেন, হিন্দুত্ববাদী আধিপত্যবাদ মোদি সরকার সম্প্রসারণবাদী অহংকারি নীতি গ্রহণ করায় তারা ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তারা সমস্যা সৃষ্টি করেছে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে। নেপাল ও চীনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করেছে সীমান্ত নিয়ে। আর পাকিস্তানকে হুমকি দিচ্ছে মিথ্যে ফ্লাগ অপারেশন চালানোর হুমকি দিয়ে।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে একতরফাভাবে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। সর্বশেষ কাশ্মীরে বসবাস বিষয়ক আইনের পরিবর্তন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণ রেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের মতো হুমকি বা ঘটনায় এই দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো কঠিন হয়েছে। অভিযোগ ও হুমকি এসেছে ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। এর মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। এমনিতেই ধারণা করা হয় পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উত্তেজনাকর।
দ্বিতীয় টুইটে ইমরান খান বিশ^কে সতর্ক করেছেন শান্তির প্রতি ভারতের হুমকির বিষয়ে। তিনি লিখেছেন, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে অবৈধ সম্প্রসারণ, চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের অধীনে যুদ্ধাপরাধ করেছে তারা। আজাদ জম্মু-কাশ্মীরকে নিজেদের দাবি করেছে। ভারতে সংখ্যালঘুদের ফ্যাসিস্ট মোদি সরকার শুধু দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকই বানিয়ে রাখে নি, একই সঙ্গে তিনি আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি।
ওদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি বলেছেন, প্রতিবেশীদের প্রতি ভারতের আগ্রাসী নীতি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। পিটিভিতে উপস্থিত হয়ে তিনি ভারতের এসব কর্মকান্ড সম্পর্কে বিশ^বাসীকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান এবং লাদাখে চীনের কর্মকান্ডকে সমর্থন দেন।
ডন লিখেছে, লাদাখে বিরোধপূর্ণ গালওয়ান এলাকায় ভারত একটি সড়ক ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক ফ্যাসিলিটিজ নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে ওই সীমান্তে চীন ও ভারত মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে। এই সীমান্তে ১৯৬২ সালে দুই দেশের মধ্যে মাসব্যাপী যুদ্ধ হয়েছিল। এখন পর্যন্ত সেখানে দুই দেশের মধ্যে কমপক্ষে চার দফা নিরস্ত্র সংঘর্ষ হয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সঙ্কট আরো তীব্র হয়ে উঠতে পারে। বিরোধপূর্ণ ওই সীমান্তে সেনাবাহিনীকে উচ্চ পর্যায়ে নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অন্যদিকে ভারত তার সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। সেখানকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ট অজিত দোভাল ও সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে এ নিয়ে শলাপরামর্শ করেছেন।
লাদাখে বিরোধপূর্ণ এলাকায় বিমান উঠানামার জন্য এয়ারস্ট্রিপ এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি। ভারতের ‘অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণ’ শান্তির জন্য ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কুরেশি বলেন, ভারতের সঙ্গে সংঘাত চায় না চীন। তারা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status