অনলাইন

জরিমানা ছাড়া মার্চ-এপ্রিলের ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে বিশেষ সুযোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৭ মে ২০২০, বুধবার, ৭:৪৫ পূর্বাহ্ন

গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন জরিমানা ও সুদ ছাড়া ৯ই জুন পর্যন্ত দাখিল করা যাবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এক বিশেষ আদেশে এনবিআর বলেছে, লকডাউনের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান মার্চ ও এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন (দাখিলপত্র) সময়মতো জমা দিতে পারেনি। এসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও সুদ ছাড়া রিটার্ন দাখিলের বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে। আগামী ৯ই জুন পর্যন্ত এসব রিটার্ন দাখিল করা যাবে।

এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মাসুদ সাদিকের সই করা এই বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, দেশে ৮ই মার্চ কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ২৬শে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরু হয়। লকডাউনের কারণে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান সময়মতো মার্চ ও এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন জমা দিতে পারেনি।

ভ্যাট আইন অনুযায়ী, প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে আগের মাসের ভ্যাট রিটার্ন জমা দিতে হয়। আর তা না দিলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়, দিতে হয় প্রতিদিনের জন্য ২ শতাংশ হারে সুদ।

জরিমানা ও সুদ ছাড়াই ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়ার সুযোগ দিতে গত এপ্রিলে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এনবিআরকে একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোরও দাবি জানানো হয়।

তবে আইন সংশোধন ছাড়া সময় বৃদ্ধি, জরিমানা ও সুদ মওকুফের কোনো সুযোগ নেই। তবে আপৎকালীন সময়ে জরিমানা ও সুদ ছাড়াই ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে ২০ মে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ এর ৬৪ ধারা সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করে এনবিআরকে সময়সীমা বৃদ্ধির ক্ষমতা দেওয়া হয়।

বিশেষ করে মহামারি, দুর্যোগ, দৈব-দুর্বিপাক বা যুদ্ধের সময় ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধি, সুদ ও জরিমানা মওকুফ করতে পারবে এনবিআর। সে অধ্যাদেশ অনুযায়ী ঈদের ছুটির মধ্যেও মঙ্গলবার এই বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে এনবিআরের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন জানিয়েছেন।

‘করোনা ভাইরাস প্রার্দুভাব প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে জরিমানা ও সুদ আরোপ ব্যতীত মার্চ ও এপ্রিল কর মেয়াদের ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বর্ধিতকরণ’ শীর্ষক আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব প্রতিরোধে সরকার ৩০শে মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মার্চ ও এপ্রিল মাসের কর মেয়াদের রিটার্ন যথাসময়ে দাখিল করতে পারেনি।

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৬৪ এর উপধারা (১) এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৪৭ এর উপ বিধি (১) অনুযায়ী প্রত্যেক নিবন্ধিত ব্যক্তিকে প্রত্যেক কর মেয়াদের জন্য মেয়াদ সমাপ্তির অনধিক ১৫ দিনের মধ্যে মূসক দাখিলপত্র প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৫ এর উপধারা (১) অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখের মধ্যে মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র পেশ না করার ব্যর্থতা বা অনিয়মের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। মূসক আইনের ধারা ১২৭ অনুযায়ী কোনো করদাতা নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কমিশনারের নিকট প্রদেয় কর পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্ধারিত তারিখের পরবর্তী দিন হতে পরিশোধের দিন পর্যন্ত প্রদেয় করের উপর মাসিক ২ শতাংশ সরল হারে সুদ পরিশোধের বিধান রয়েছে।

বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, “অধ্যাদেশ ও জারি করা মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৬৪ এর উপধারা (১ক) ও (১খ) ও প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বৈশ্বিক এ আপদকালীন সময়ে যে সকল প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র মার্চ ও এপ্রিল মাসের কর মেয়াদের দাখিলপত্র যথাসময়ে পেশ করেনি, সে সকল প্রতিষ্ঠানের দাখিলপত্র পেশের সময়সীমা ৯ই জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হল। এ সময়ের মধ্যে দাখিলপত্র পেশের ক্ষেত্রে জরিমানা ও সুদ প্রদানের বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতি প্রদান করা হল।”
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status