অনলাইন

টেলিফোনে কত আর আড্ডা দেয়া যায়

কাজল ঘোষ

২৭ মে ২০২০, বুধবার, ১২:২৪ অপরাহ্ন

ফেসবুকের পাতায় ক’দিন আগের স্ট্যাটাস। লিখেছেন, ৬০৮ পাতার ঢাউস বই। দু’দিন ধরে পড়ছি। ভাবছি, আগে কেন পড়লাম না। চমৎকার বই। ঝরঝরে ভাষা, তথ্যে ঠাসা। নির্মল সেনকে নতুন করে চিনছি।
এভাবেই সাবলীল বর্ণনা দিয়ে চলেছেন মহিউদ্দিন আহমেদ তার স্ট্যাটাসে। রাজনৈতিক ভাষ্যকার, লেখক মহিউদ্দিন আহমেদের কথা বলছি। যিনি অনেক নেপথ্যের পালাবদলের সাক্ষী। লিখেছেন, যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১, জাসদের উত্থান, পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি, বেলা-অবেলা ও বিএনপি: সময়-অসময়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বই। এগুলোকে নিছক বই বললে কম বলা হবে, একেকটি রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

ধানমন্ডির ২৮ নম্বর রোডের বাড়িতেই আটকে আছেন লকডাউনে। দীর্ঘসময় বন্দিদশায় কাল কাটছে এই লেখক ও গবেষকের। কেমন আছেন তিনি?
বললেন, আড্ডা বন্ধ তাই মন ভালো নেই। টেলিফোনে কত সময় আড্ডা দেয়া যায়। আর যাই হোক টেলিফোনে তো আড্ডা হয় না। বেশির ভাগ সময় কাটছে ঘরে বসে, বই পড়ে, টেলিভিশনে সিনেমা দেখে।
নতুন বেশকিছু বইয়ের কাজ শুরু করেছি। প্রচুর পড়ছি। এরই মধ্যে পড়ে শেষ করেছি,  সুভাষ বোসের জীবনী ‘হিজ ম্যাজেস্টিজ অপজিশিন’। বইটি সুভাষ বোসের বড় ভাই শরৎ বোসের নাতি সুগত বোসের লেখা। শেষ করলাম, ভারতের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র তারকা দীলিপ কুমারের অটোবায়োগ্রাফি। আর ফাঁকে ফাঁকে পড়ছি জালালুদ্দিন রুমির ‘মসনবী’।
লকডাউনে বেশকিছু বইয়ের কাজ গুছিয়ে রাখছি। তিনটি বইয়ের পা-ুলিপি তৈরি করছি। সিরাজুল আলম খানের সময় নিয়ে লিখছি একটি বই। এটি ষাট ও সত্তর দশকের রাজনীতি ও সময়কালের উপর ভিত্তি করে। সিরাজুল আলম খানের সে সময়কার রাজনীতি ও সমাজ জীবন কেমন ছিল তা নিয়ে। কাজ করছি, সিরাজ শিকদার ও সর্বহারা পার্টি নিয়ে। এছাড়া সত্তর দশকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যে ধরনের টানাপড়েন চলেছিল তা নিয়ে একটি গবেষণামূলক বই লেখার চেষ্টা করছি।

বর্তমান সময়কে কীভাবে দেখছেন?
কিছুদিনের জন্য হয়তো আগামী দিনের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হবে। কিন্তু এর একটি ভিন্ন সমীকরণও আছে। সমাজের একটি অংশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বিগত দিনগুলোতে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে পড়েছিল। আর একটি বিশাল অংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছিল। চলমান এই অর্থনৈতিক টানাপড়েনে এই দুটি সীমার মধ্যে একটি ভারসাম্য ফিরে আসবে বলেই আমি মনে করি।

টক শোতে যেতেন নিয়মিত। গণমাধ্যমকে কীভাবে দেখছেন?
লকডাউনে টেলিভিশন স্টুডিওতে যাই না। ঘরে বসেই বেশির ভাগ সময় বিবিসি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ও ডিসকভারি চ্যানেল দেখি। কারণ, দেশের বেশিরভাগ চ্যানেলেই মানসম্মত কোনো অনুষ্ঠান নেই। সাম্প্রতিক সময়ের টেলিভিশন সংবাদ একেবারেই বিরক্তিকর মনে হয়। সংবাদ পরিবেশনে উচ্চারণগত ত্রুটি তো আছেই;  বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এদেরকে অপেশাদার মনে হয়। কোনো ইনোভেটিভ আইডিয়া দেখছি না।
গণমাধ্যমে একটি বড় রকমের দুর্দিন চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা পত্রিকা চালাচ্ছেন তারা বড় রকমের সমস্যায় পড়ে যাবেন। বিজ্ঞাপন কমে গেছে। টিভি চ্যানেলগুলোরও একই অবস্থা। তারা বেশির ভাগই এখন বিভিন্ন ওয়েভে কাজ করছেন।
গণমাধ্যমে সরকারি চাপের প্রসঙ্গ এলে তিনি বলেন, সরকারি চাপের প্রসঙ্গ থাকলেও ভালো টক শো বা নাটক দেখাতে তো টেলিভিশনগুলোর কোনো বাধা দেখি না। আর চাপে থাকলে তো আমার বই লেখা বন্ধ হয়ে যেত। সত্য বলা যত কঠিনই হোক, সত্য কথা বলতে কোনো সমস্যা দেখি না। এখন কেউ যদি অযৌক্তিক কথা বলে বা গুজব ছড়ায় তাহলে তো ব্যবস্থা নেবেই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status