ভারত
আম্পান উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে ঐতিহ্যের অনেক স্মারক
কলকাতা প্রতিনিধি
২৩ মে ২০২০, শনিবার, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান উড়িয়ে নিয়েছে ঐতিহ্যের অনেক স্মারক। শহর কলকাতা থেকে শুরু করে জেলাতেও বিভিন্ন বাড়ি বা চার্চ বা ইমামবাড়ার উপরে দীর্ঘ সময় ধরে যে ঐতিহ্যের স্মারকগুলি আমাদের চেনা ছিল সেগুলি অতীতের সব ঝড় সামাল দিলেও এবার আর তা পারেনি। তাই কলকাতার বুকে রাইটার্স বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সেন্ট অ্যান্ডুজ চার্চের সুউচ্চ গম্বুজের শীর্ষে ছিল যে হাওয়া মোরকটি সেটি ঝড়ে উড়ে গিয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও সেটিকে খুঁজে পাওয়া যায় নি আশেপাশের এলাকায়। একইভাবে হুগলির বিখ্যাত ইমামবাড়ার পিতলের তৈরি চূড়াও আম্পান উড়য়ে নিয়েছে। ২০০ বছরের পুরনো এই স্থাপত্যটি হেরিটেজের মর্যাদা পেয়েছে অনেক দিন। ইমামবাড়ার মূল ফটকের মাথায় দুটি গম্বুজের উপরে থাকা দুটি পিতলের চূড়া বহু ঝড় সামলে অক্ষত থাকলেও এবার আর তা হয়নি। একটি চূড়া আম্পানের তীব্র হাওয়ায় উড়ে গিয়েছে। এটিরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। কলকাতার সেন্ট অ্যান্ডুজ চার্চের ফাদার স্বরুপ বর জানিয়েছেন, চার্চেও গম্বুজের শীর্ষে থাকা কালো হাওয়া মোরগটিকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা শুধু মোরগটির একটি ডানার ভাঙ্গা অংশ পেয়েছি। আশেপাশে খোঁজ চালিয়েও বাকী অংশ পাওয়া যায় নি। জানা গেছে, ১৮১৫ সালে তৈরি এই চার্চের শীর্ষে থাকা হাওয়া মোরগটির ওজন ছিল ১০০ কিলোগ্রাম। চার্চ কর্তৃপক্ষের ধারনা, আম্পানের দাপটে হাওয়া মোরগটি চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কলকাতার অফিস-কাছারির মূল কেন্দ্র বিবাদি বাগে নিয়মিত যাতায়াতকারীদের আশঙ্কা, আর হয়তো চার্চ শীর্ষে নতুন করে লাগানো হবে না কোনও স্মারক। ঝড়ে হারিয়ে গেল আদি কলকাতার একটি স্মারক। এদিকে গঙ্গার ওপারে হাওড়ার বোটানিকাল গার্ডেনের ঐতিহ্যশালী সুপ্রাচীন বটগাছটিও এবার ঝড়ের ধাক্কা সামলাতে পারেনি। ২৭০ বছর আগের এই বট গাছটি ১৮৬৪ ও ১৮৬৭ সালের দুটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে মূল কান্ডটি নষ্ট হয়ে গেলে চারিদিকে ঝুরি বিস্তার করে সেটি আইকনিক মর্যাদায় ভূষিত হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। প্রায় ৪.৬৭ একর জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সুবিশাল এই বটগাছটি হেলে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটির ঝুড়িরও। সেগুলি উপড়ে উঠে এসেছে। গার্ডেনের এই স্মারকটিকে আগের অবস্থা ফিরিয়ে দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কিত বৃক্ষপ্রেমীরা।