কলকাতা কথকতা
কলকাতা কথকতা
করোনার জের এবার সিনেমা শিল্পে, অন্তরঙ্গ এবং চুম্বন দৃশ্যে 'কাট'
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা
২৩ মে ২০২০, শনিবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
প্রশ্নটি প্রথম তুলেছিলেন বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালক, প্রযোজক সুজিত সরকার। করোনা পরবর্তী সময়ের সিনেমা কেমন হবে? নর - নারীর অন্তরঙ্গ সম্পর্কের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে কি? ভালোবাসার দৃশ্যের সব থেকে বেশি দ্যোতক চুন্বনের মুহুর্ত থাকবে কি সিনেমায়? সুজিতের প্রশ্নগুলি সামনে রেখেই যেন কুড়িটি দেশের প্রযোজক ও ষ্টুডিও মালিকদের সংঘঠন অতি সম্প্রতি একটি জুম্ মিটিংয়ে বসেছিলেন। ভারত ছাড়াও ব্রিটেন, আমেরিকার হলিউডের প্রতিনিধিরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের প্রতিনিধি ছিলেন সিন্টাসের সচিব অমিত বেহল। এই বৈঠকেই ঠিক হয় করোনা পরবর্তী শুটিংয়ে অন্তরঙ্গ দৃশ্য যতটা সম্ভব বাদ দিতে হবে। চুম্বনের দৃশ্য নৈব নৈব চ। গল্পের বুনোট এমনভাবে করতে হবে যাতে ছবির ডায়লগ এর মধ্যে দিয়ে অন্তরঙ্গতা বা যৌনতার বিষয়টি ফুটে ওঠে। হলিউডের প্রতিনিধি পাত্র - পাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে রেখে চুম্বন দৃশ্য শুট করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তা নস্যাৎ করে দেন অন্য দেশের প্রতিনিধিরা। বরং শুটিং সেটে একজন করে ভাইরোলজিস্ট রাখার প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। কমসংখ্যক টেকনিশিয়ান নিয়ে কাজ করার প্রস্তাবটিও গৃহীত হয়। সিনেমা যেখানে নর - নারীর সম্পর্ক নিয়ে বেশিরভাগ তৈরী হয় এবং যেখানে যৌনতা সব থেকে বেশি বিক্রি হয় সেখানে সিনেমার অস্তিত্ব কি বিপন্ন হবে না? এই প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, একশো বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লু'র কারণে উনিশশো আঠেরো থেকে কুড়ি সাল পর্যন্ত সিনেমার শুটিং, সিনেমা হল বন্ধ ছিল। তারপরও সিনেমা বেঁচে আছে। করোনা পরবর্তী যুগেও থাকবে। ভারতের বিশিষ্ট সিনেমাটোগ্রাফার সুদীপ চট্টোপাধ্যায় মনে করেন ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলের কারসাজিতে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত হয়তো তৈরি করা যাবে, কিন্তু তার বাইরে আর কিছু নয়। চুম্বন দৃশ্যের ব্যাঞ্জনা ক্যামেরার কারসাজিতে করা সম্ভব নয়। চিনের দর্শকরা দু হাজার উনিশ সালের ফেব্রুয়ারি তে এক মাসে ১.৬৩ বিলিয়ন ডলারের টিকিট কিনে সিনেমায় বিশ্ব রেকর্ড করে। সে সময় চীনে প্রদর্শিত ছবিগুলিতে অন্তরঙ্গ দৃশ্য ও যৌনতা ছিল। এগুলি বাদ দিয়ে নতুন সিনেমা কেমন হবে তার অপেক্ষায় বিশ্ব।