খেলা

বিক্রির পরেও ব্রেসলেটটি থাকছে মাশরাফির হাতে

স্পোর্টস রিপোর্টার

১৯ মে ২০২০, মঙ্গলবার, ১২:২৫ অপরাহ্ন

দীর্ঘ ১৮ বছর ডান হাতে সব সময়ই ব্রেসলেটটা পরে থাকতেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। করোনা ভাইরাস দুর্গতের সাহায্যে প্রিয় সেই ব্রেসলেটটি নিলামে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই অধিনায়ক। ‘অকশন ফর অ্যাকশন’-এর মাধ্যমে নিলামে তোলা মাশরাফির ব্রেসলেটটি ৪২ লাখ টাকায় কিনে নেয় বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন (বিএলএফসি)। তবে নিলামে বিক্রি হলেও ব্রেসলেট থাকবে মাশরাফির হাতেই। বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই ব্রেসলেট কিনে নিয়ে তারা আবার মাশরাফিকেই উপহার দিতে চান। অকশন ফর অ্যাকশনের  লাইভে এসে তিনি বলেন, ‘ব্রেসলেটটি যার হাতে ছিল তার হাতেই মানায়। আমরা কিনে নিলেও সেটা মাশরাফির হাতেই রেখে দিতে চাই। তবে সেটা একটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা চাই মাশরাফির হাতে পরিয়ে দিতে।’ যদিও লাইভ অনুষ্ঠানের মধ্যেই মাশরাফি হাত থেকে ব্রেসলেটটি খুলে রেখে বলেন, ‘এখন থেকে এটা আর আমি পরবো না। এই যে খুলে রেখে দিলাম। আপনারা যখন এটি আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাকে দিবেন, তখন পরবো’। তখন মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘না, এটা আপনার হাতেই থাকবে। আপনার কাছে এটা আমাদের আমানত। আমরা চাই, সারাজীবনই এটা আপনার হাতে থাকুক। শুধু আমরা একটু আনুষ্ঠানিকতা করতে চাই।’
রোববার রাতে নিজের ব্রেসলেটের নিলামে পছন্দের পোশাক হিসেবে জিন্স, টি-শার্ট ও অতি অবশ্যই লুঙ্গির কথা জানান জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। তবে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মাশরাফির ব্রেসলেট। করোনা যুদ্ধে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের নিলামে তোলা সরঞ্জামের মধ্যে মাশরাফির ব্রেসলেটই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। এর আগে সাকিব আল হাসানের বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়া ব্যাট ২০ লাখ, মুশফিকুর রহীমের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ব্যাট ১৭ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। পেসার তাসকিন আহমেদের হ্যাটট্রিক বল  ও সৌম্য সরকারের ব্যাট বিক্রি হয়েছিল সাড়ে ৮ লাখ টাকায়। এসব কিছুর বিক্রয় মূল্য করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহার করা হবে।
এদিন স্বাভাবিকভাবেই ফেসবুকে নিলামের লাইভ অনুষ্ঠানে মাশরাফির এই ব্রেসলেটের পেছনের ইতিহাস জানতে প্রচুর প্রশ্ন করছিলেন ভক্তরা। সঞ্চালক তা জানানোর পর নিজের ব্রেসলেটপ্রীতির কথা খুলে বলেন মাশরাফি, ‘দুটো জিনিসের ওপর আমার ছোটবেলা থেকে অনেক শখ ছিল। কিন্তু বাসার ভয়ে বিশেষ করে বাবার ভয়ে কখনো ব্যবহার করতে পারতাম না। সেগুলো হচ্ছে ব্রেসলেট ও রোদ চশমা (সানগ্লাস)। যখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা শুরু করলাম তখন ভাবলাম ঠিক আছে এখন ব্যবহার করি। আমি নিশ্চিত বাবা এখন কিছু বলবে না।’
মাশরাফি এরপর বলেন, ‘আমি তখন একটা ব্রেসলেট ব্যবহার করা শুরু করি। কিন্তু মাঠে ডাইভ দিলে ব্রেসলেটটি খুলে যায়। পরে খুঁজে পেলেও ওটা টেকেনি। তারপর আমার বন্ধুকে বললাম, আমাকে একটা ব্রেসলেট তৈরি করে দে।’ মাশরাফি নিলামে ওঠা তাঁর হাতের ব্রেসলেটটি দেখিয়ে বলেন, ‘তো এটা সবাই যা ভাবছে তা নয়। খুব সাধারণ। অনেকে ভেবেছিল রুপার, তাও না। এটা সাধারণ স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি (ব্রেসলেট)। আমার বন্ধুর মামা ওখান থেকে বানিয়ে দিয়েছিল। এরপর থেকেই এটা পরে থাকি। কয়েকবার হাত থেকে খুলে রেখেছি। মনে করে দেখবেন, আমার একটা ব্রেসলেট প্লাস্টিকের ছিল, বাংলাদেশের লাল-সবুজ নিয়ে। বাংলাদেশের জার্সির মতো। বগুড়ায় খেলেছি, কয়েকবার পরেছি। কিন্তু এটা (হাতের ব্রেসলেট দেখিয়ে) ছাড়া ভালো লাগেনি। তারপর থেকেই এটা আমার সঙ্গী। ভালো-মন্দ সবকিছুর সঙ্গেই এটা জড়িয়ে আছে। একটা পর্যায়ে গিয়ে এটা ছাড়া কখনো আর কিছু পরিনি। সেটা বলতে পারেন, অস্ত্রোপচারে  (ধাতব কোনোকিছু খুলে রাখতে হয়) এমআরআইয়ে খুলতে হয়েছে। আর ওই দুটো জায়গাতেই আমাকে বেশি যেতে হয়েছে (হেসে)। সব মিলিয়ে এটা (ব্রেসলেট) সব সময়ই আমার সঙ্গে ছিল।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status