ভারত
ভারতে লাল জোনের তালিকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ
কলকাতা প্রতিনিধি
২ মে ২০২০, শনিবার, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
ভারতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোনের নতুন তালিকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ তীব্র হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কয়েকটি রাজ্য লাল জোনের তালিকা তৈরিতে ভারত সরকারের ভ্রান্ত মূল্যায়নের পরিবর্তন দাবি করেছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রেড জোনের সংজ্ঞা পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন। দিল্লির সব কটি (১১) জেলাকেই লাল জোনের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দিল্লি সরকারের এক কর্তা জানিয়েছেন, জেলা ভিত্তিক জোন ভাগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বড় শহরের জন্য। পশ্চিমবঙ্গেও কয়েকদিন আগে ঘোষিত ৪টি লাল জোন জেলা সংখ্যা এক লাফে নতুন ঘোষনায় ১০ করে দেওয়ায় তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে তালিকা সংশোধনের দাবি তুলেছে। আচমকাই কেন এই পরিবর্তন তা জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয সরকার রাজ্যের চারটি জেলা-কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর ও উত্তর ২৪ পরগনাকেই রেড জোনের আওতায় দেখিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার জানানো হয়েছে, রেড জোনের তালিকা বেড়ে হয়েছে ১০। নতুন লাল জোনের তালিকায় দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদহ, পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিন ২৪ পরগণা ও কালিম্পং জেলাকে যুক্ত করা হয়েছে। আর রাজ্যেও ৫টি জেলা রয়েছে কমলা এবং ৮টি জেলা সবুজ জোনে রয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার আগে অন্য তালিকা দিয়েছিল। সেই মোতাবেক কাজ হচ্ছে, এখন আবার অন্য তালিকা। বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। রাজ্য এর বিরোধিতা করে চিঠি পাঠিয়েছে। রাজ্যেও স্বাস্থ্য সচিব বিবেক কুমার ভারতের স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি পাঠিয়ে প্রশ্ন করেছেন, যে সব জেলায় গত ১৪ দিন বা তার বেশি সময়ে কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি তেমন জেলাকে কেন লাল জোনে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। তবে নতুন তালিকা প্রসঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, এর আগে করোনা-আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার হারের নিরিখে জেলাগুলিকে হটস্পট বা লাল জোন, কমলা ও সবুজ জোনে ভাগ করা হয়েছিল। এখন করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। তাই আক্রান্তের সংখ্যা, আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার হার, করোনা-পরীক্ষা এবং নজরদারির তথ্যের উপর ভিত্তি করে জেলাগুলির জোনভিত্তিক পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লাল জোনের তালিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধ তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকারের একটি অংশের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো পর্যবেক্ষক দলের পাঠানো তথ্য ও মূল্যায়নের ভিত্তিতেই তালিকায় পরিবর্তন করা হয়েছে। রাজ্য সরকার অবশ্য প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয পর্যবেক্ষক দল পাঠানো নিয়ে আপত্তি তুলেছিল, তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।