অনলাইন

খালিশপুরের লাল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ, ফেরত যাচ্ছে রোগী

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

১ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ৩:১৪ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাসের অজুহাতে খুলনা সিটি করপোরেশন পরিচালিত খালিশপুর লাল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে।প্রতিদিন অর্ধশতাধিক রোগী এসে ফেরত যাচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা (পিপিই না পাওয়া) না থাকার কারণে তারা চিকিৎসা সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছেন। এমন কি ওই হাসপাতালে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।

হাসপাতালে সকল স্টাফ ও চিকিৎসক খোশগল্প করে সময় পার করছেন।গরিব মানুষের চিকিৎসা কেন্দ্র খালিশপুরের ঐতিহ্যবাহি লাল (ম্যাটারনিটি) হাসপাতালের চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের হাজারো অভিযোগ। এ হাসপাতালটি সিভিল সার্জন অফিস ও কেসিসি যৌথভাবে পরিচালিত হয়।

সকাল তখন ১০টা ৪৫ মিনিট। দু’জন রোগী আসেন হাসপাতালে। হাসপাতালের মূল গেটে প্রবেশের আগেই স্টাফরা জিজ্ঞেস করেন, ‘কি জন্য এসেছেন, কি রোগ হয়েছে। আপাতত এখানে কোনো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। আপনারা আড়াইশ বেডে যান।’

এ সময় হাসপাতালে আসা চর্মরোগী ফজলে রাব্বী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের সকল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চললেও লাল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে, এটা খুবই আশ্চর্য্যজনক ব্যাপার। সাথে আসা তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা বলেন, তিনি একজন সন্তান সম্ভাবা। নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে হাসপাতালে আসছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে দেখলো না। শুধু ফজলে রাব্বী আর মেহেরুন্নেসা একা নয়। এভাবে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রতিদিন এসে শতাধিক রোগী ফেরত যাচ্ছে।

শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা খালিশপুর। গরিব মিল শ্রমিকদের চিকিৎসালয় লাল হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগ নেতা মোল্যা মুরাদ হোসেন রিপন। তিনি বলেন, গরিব মানুষের চিকিৎসা কেন্দ্র লাল হাসপাতাল। অথচ সেখানে রোগীরা চিকিৎসা বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব গরিব মানুষের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। এতে করে সরকারের বদনাম হচ্ছে। এসব তামাশা বন্ধে করার জন্য মেয়রের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এ তরুণ নেতা।

সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানা বলেন, গত ২৮ মার্চ জেলা পর্যায়ের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও প্রতিরোধসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের প্রেরিত পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছেন। হাসপাতালের ইপিআই-এর ইনচার্জ আসমা, স্বাস্থ্য কার্ড লেখক খালেদা, পিওন বাশার, পরিচ্ছন্ন কর্মী ফরিদাসহ অন্যান্য স্টাফরা বলেন, ‘আমাদের নিজেদের জীবনের নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি বলা হলেও হাসপাতালে পিপিই সরবরাহ ও হাত ধৌত করার কোনো ব্যবস্থা করছে না।

কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. একেএম আব্দুল্লাহ বলেন, এমনটি হওয়ার কথা নয়। কেসিসি পরিচালিত তালতলা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। লাল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তারপরও বিষয়টি তিনি দেখছেন বলে জানান।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, কোনো হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়নি। সকল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখার নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও যদি কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখে তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status