বিশ্বজমিন

করোনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণার শিকার হচ্ছেন এশীয় বংশোদ্ভুতরা

মানবজমিন ডেস্ক

১ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ১:৫৫ পূর্বাহ্ন

মার্চ মাসের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি ক্লাবে এশীয় বংশোদ্ভুত এক মার্কিন পরিবারের ওপর হামলা হয়। তাদের ওপর ছুরি নিয়ে ঝাপিয়ে পরে ১৯ বছর বয়সি হামলাকারী জোসে গোমেজ। পরিবারের সাথে থাকা ২ বছরের শিশুকেও সে ছারেনি। একে বর্নবাদি হামলা হিসেবেই ধরছে কর্তৃপক্ষ এবং এ নিয়ে তারা উদ্বেগও জানিয়েছে। হামলাকারী নিজে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, সে ওই পরিবারটিকে হত্যা করতেই হামলা চালিয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এফবিআই বিষয়টি তদন্ত করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারীর ধারণা হয়েছিল ওই পরিবারটি চীনা এবং তারা মানুষকে করোনা ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত করতে চায়। এই ঘটনার পর দেশটিতে আবারো ‘হেইট ক্রাইম’ আলোচনায় এসেছে। কিভাবে করোনা ভাইরাসের মাধ্যমে এশীয় বংশোদ্ভুতরা বর্নবাদী হামলার শিকার হচ্ছেন তার উদাহরণ হিসেবেও এটিকে দেখানো হচ্ছে। হামলার পর পাশে থাকা অন্য ক্রেতারা ওই পরিবারটিকে উদ্ধার করে। কর্তৃপক্ষ এসে গোমেজকে জেরা করলে সে জানায় যে, হত্যার উদ্দেশেই সে হামলা চালায়। এরপর এটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের থেকে এফবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এফবিআই পরবর্তিতে এক প্রতিবেদনে জানায়, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরার পর যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরণের হেইট ক্রাইম বেরেই চলেছে। এ ধরণের আরো ঘটনা তাদের রেকর্ডে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে ৩৫০০ এরও বেশি। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়েছে দেশটি। চীন যেখানে করোনা মুক্ত সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। আরো ২ থেকে ৩ সপ্তাহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে এমন আশঙ্কা করছে দেশটি। এরপর থেকেই দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পসহ অনেক রাজনীতিবিদই করোনাকে চীনা ভাইরাস বা উহান ভাইরাস বলার চেষ্টা করছেন। প্রতিনিয়ত একে অভ্যাসে পরিণত করতে সচেষ্ট থাকছেন। ১৯ মার্চ ট্রাম্প বলেন, এটি চীন থেকে এসেছে তাই এটি চীনা ভাইরাসই। এতে কোনো ভুল নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরণের মন্তব্যের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে বর্নবাদি হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম জানিয়েছেন, তিনি দেখতে পাচ্ছেন যে করোনা সংক্রমণের পর এশীয় বংশোদ্ভুতদের ওপর হামলার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিউ ইয়র্ক বাধ্য হয়েছে একটি হটলাইন খুলতে। এতে শুধু করোনার কারণে মিথ্যা দোষারোপ ও এ সংক্রান্ত অপরাধ হচ্ছে সে বিষয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক শহরের চিকিৎসকদের সংগঠন জানিয়েছে, বর্নবাদ এখন তাদের স্বাস্থ্যখাতেও পৌছে গেছে। এশীয় বংশোদ্ভুত চিকিৎসক ও নার্সরা রোগিদের চিকিৎসা করতে গেলে অনেকেই বাজে মন্তব্যের শিকার হচ্ছেন। এশীয় বংশোদ্ভুত চিকিৎসকরা আহবান জানিয়ে বলছেন, এটি ভয়াবহ ও ভীতিকর। আমরা এখানে এসেছি একে অপরকে সাহায্য করার জন্য। আমাদের জন্য এ কাজ কঠিন করে দিবেন না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status