ভারত
ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে ফিরতে চাইছেন
কলকাতা প্রতিনিধি
৩০ মার্চ ২০২০, সোমবার, ৭:২২ পূর্বাহ্ন
ভারতের বিভিন্ন শহরে আকস্মিক লকডাউনের ফলে বাংলাদেশের শয়ে শয়ে নাগরিক আটকা পড়ে রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি মানুষ আটকা পড়েছেন, চেন্নাই, বাঙ্গালুরু ও কলকাতায়। এছাড়াও ভেলোর, দিল্লি, মুম্বাই, মহীশূরসহ বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন বহু বাংলাদেশি নাগরিক। এরা সকলে প্রবল অর্থ সঙ্কটে রয়েছেন। লকডাউন কবে উঠবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই অবস্থায় দীর্ঘকাল অনিশ্চিতভাবে দিন কাটানো অসম্ভব মনে করেই এই সব আটকে পরা বাংলাদেশিরা বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে ফিরতে চাইছেন বলে জানিযেছেন। তাদের আশা, বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে। জানা গেছে, ভারতের বিভিন্ন শহরে আটকে থাকাদের মধ্যে অসুস্থ মানুষ ও তাদের পরিজনদের সংখ্যাই বেশি। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও এখন মানসিক অনিশ্চয়তায় তাদের অনেকেরই শরীর ফের খারাপ হতে শুরু করেছে বলে বিভিন্ন শহরে থাকা রোগীদের পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে। রোগী ছাড়াও ভারতে বেড়াতে এসে আটকে পড়েছেন অনেকে। এমন ১১ জনের একটি দল মহীশূরের হোটেলে বন্দির মত দিন কাটাচ্ছেন। তাদেও মধ্যে অনেকেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ফলে প্রযোজন ইনসুলিনসহ অন্যান্য ওষুধের। কিন্তু হাতের টাকা প্রায় শেষ। আটকে পরা বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, আমরা ভারতের টিভি ও সংবাদপত্রে দেখতে পারছি, বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের আটকে থাকা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেবার জন্য বিমান ভাড়া করে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই ভারতের বিভিন্ন শহর থেকে এই ধরণের বিশেষ উড়ান বিদেশিদের নিয়ে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। কিন্তু লকডাউনের পর ৫ দিন কেটে গেলেও বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে নেবার জন্য কোনও যোগাযোগও করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। আর যারা কোনও ভাবে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও উপহাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তারাও সঠিক দিশা না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা স্বপন মিঞা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাঁরাও আশার আলো দেখাতে পারেননি। বাংলাদেশের মিরপুরের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শাজাহান স্থানীয় একটি পত্রিকাকে জানিয়েছেন, হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে ৬ মার্চ বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন তিনি। ২০ মার্চ হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে দেশে ফিরে যেতে বলেন। ২৫ মার্চের বিমানের টিকিটও কাটা ছিল। কিন্তু বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফেরা হয়নি। এখন তিনি হোটেল-বন্দি। শাজাহান দাবি করেছেন, তার মতই চিকিৎসা করাতে এসে অন্তত এক হাজার বাংলাদেশি এখনও বেঙ্গালুরুতে আটকে রয়েছেন। জানা গেছে, আটকে পরা বাংলাদেশিদের হাতে টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। হোটেল ভাড়া বাকী পড়েছে। এই অবস্থায় লকডাউনের ফলে দেশ থেকে টাকা আনানোও বন্ধ। ফলে দুশ্চিন্তায় অনেকেই মানসিক অবসাদে রয়েছেন। আর কদিন পর খাওয়া জুটবে কিনা তা নিয়েও অনেকে চিন্তিত।