বাংলারজমিন
আড়াইহাজারে দুগ্ধ খামারিরা বিপাকে
এম এ হাকিম ভূঁইয়া, আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) থেকে
২৮ মার্চ ২০২০, শনিবার, ২:৫৩ পূর্বাহ্ন
নিরব ঘাতক (কভিড-১৯) করোনাভাইরাসের শঙ্কায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দুগ্ধ খামারিরা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে গড়ে ওঠা খামারগুলোতে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে বেগ পেতে হচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে পড়ছে করোনাভাইরাসের প্রভাব। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় প্রায় ১ এক হাজার পাঁচ শতাধিক খামারি আছেন। এসব খামারে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর বাইরেও ছোট বড় অসংখ্য খামার রয়েছে। খামারিরা স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করাসহ উপজেলার আশপাশের বাজারগুলোতে দুধ সরবরাহ করা হয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস শঙ্কায় দুগ্ধজাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় দুধ বিক্রি করতে বেগ পেতে হচ্ছে। আরো কিছু দিন এমনভাবে আরো সমস্যায় পড়তে হবে খামারিদের। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের কপালে চিন্তারভাজ। এতে তাদের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণে দুধ নিয়ে বিপাকে তারা। আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, খামারিরা দুধ নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় করছিলেন। কিন্তু চাহিদা মাফিক ক্রেতার মিলছে না। অনেকেই বাধ্য হয়ে লোকসান দিয়ে দুধ বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। প্রতি লিটার দুধ যেখানে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করা হতো। সেখানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০টাকায়। বাজারগুলোতে ক্রমেই ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ছে। বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই দুধ নিয়ে ফিরে গেছেন। খামারিরা বলেন, স্থানীয় দুগ্ধজাত খাবার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় খামারিরা দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। এতে তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। দুধ বিক্রি করে অনেকের সংসার চলে। এর আয় থেকে গরুর খাবার কিনতে হয়। দুধ বিক্রি না হলে গরুর খাবার কিভাবে কিনবেন। দুধইবা কোথায় বিক্রি করবেন। বর্তমান পরিস্থিতি বেশী দিন চলতে থাকলে আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। করোনার প্রার্দুভাবে খামারিরা চিন্তায় আছেন। আড়াইহাজার পৌরসভা বাজারে দুধ বিক্রি করতে আসা খামারি নাছির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন তিনি ১০ লিটার দুধ বিক্রি করে যাচ্ছেন। দুইদিন আগেও যেখানে প্রতিলিটার দুধ বিক্রি করেছেন ৭০টাকা করে। সেখানে বর্তমানে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০টাকা। এতে তার লোকসান হচ্ছে। চাহিদা মাফিক ক্রেতা না থাকায় তিনি উপযুক্ত দাম নিয়ে দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। একই অভিযোগ ছিল এই বাজারে আসা অন্যদুধ বিক্রেতাদের মুখেও। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপসহকারি কর্মকর্তা ডা. মোকশেদ আলী বলেন, আড়াইহাজার উপজেলায় গড়ে ওঠ গরুর খামারে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ মেক্ট্রিক টন দুধ উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে দুধের চাহিদা পূরণ করে উৎপাদিত দুধ আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাস শঙ্কায় বাজারগুলোতে অনেকটাই ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ছে। এর প্রভাব কিছুটা হলেও দুধের বাজারে পড়বে এটাই স্বাভাবিক।