শেষের পাতা
বড় সংকটে শ্রমবাজার
রোকনুজ্জামান পিয়াস
২৭ মার্চ ২০২০, শুক্রবার, ৭:৪৫ পূর্বাহ্ন
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে শ্রমবাজারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা দেশে কর্মী প্রেরণ কমেছে। আর বিগত কয়েকদিনে এ সংখ্যা শূন্যের কোঠায়। ফলে দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা রেমিট্যান্স খাত। ইতিমধ্যে প্রায় সব দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আগামী ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধের সময়সীমা থাকলেও তা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক দেশ নিজেরাই তাদের সীমান্ত অভিবাসীদের জন্য সীলগালা করেছে। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন দেশের ভিসা স্ট্যাম্পিং। টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের কর্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। মুখ থুবড়ে পড়ছে বিদেশে কর্মী পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সি। দাপ্তরিক কাজেই সীমাবদ্ধ তাদের কার্যক্রম। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতেও হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে গত একমাসে বিদেশ থেকে প্রায় ৬ লাখ কর্মী ফেরত এসেছেন। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা শ্রমবাজারের জন্য একটি অশনি সংকেত।
তথ্যমতে, গতবছর ৭ লাখ ১৫৯ জন কর্মী কাজ নিয়ে বিভিন্ন দেশে গেছে। আর এ খাত থেকে বছরটিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ২১ কোটি টাকা। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। কিন্তু ক্রমবর্ধমান এ খাত চলতি বছরের শুরুতেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজারের এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করেছে বিদেশে কর্মী প্রেরণের হার। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে বিভিন্ন দেশে কর্মী গেছে প্রায় ৭০ হাজার। যার মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক কর্মী গেছে সৌদি আরবে। এ সংখ্যা ৫১ হাজার ৭৮৬ জন। এ মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার কর্মী গেছে ওমানে। এছাড়া সিঙ্গাপুরে ৩ হাজার ৪৩৯ জন, জর্ডানে ১ হাজার ৩৫৩ জন, কাতারে ১ হাজার ৩১৯ জন, কুয়েতে ৯৩৮ জন, সংযুক্ত আরব-আমিরাতে ৩৪৩ জন, লেবাননে ১৮৮ জন, মরিশাসে ৫৬৮ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫৪ জন, ব্রুনাইয়ে ২২১ জন, মালয়েশিয়াতে ৫৪ জন কর্মী গেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে আরও ১২১৯ জন কর্মী দেশ ছেড়েছেন। তবে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় পরের মাস অর্থ্যাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মী গেছে ৫৭ হাজার ৬৭২ জন, যা আগের মাসের তুলনায় সাড়ে ১২ হাজার জন কম। আর চলতি মাসে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের মতো। তবে গত কয়েকদিন ধরে বিদেশ কোন কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি। এমনকি থেমে গেছে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কাজও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিদেশে কর্মী প্রেরণে নিয়োজিত এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম প্রায় বন্ধের উপক্রম। শুধুমাত্র দাপ্তরিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ রয়েছেন। চাকরি হারানোর ভয়ে এ সেক্টরে কর্মরত অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মী বলেন, আমার কাজই প্রবাসী কল্যাণ ভবন এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) কেন্দ্রীক। দৈনন্দিন ফাইলপত্র নিয়ে ছুটাছুটি করতে হয়। এখন কাজই যদি না থাকে তাহলে আমাকে অফিস কেনো বেতন দেবে। এদিকে বিভিন্ন দেশের ভিসা স্ট্যাম্পিং বন্ধ থাকায় এবং বিমান ফ্লাইট চলাচল না করায় নতুন করে কোন কর্মীও পাঠানো হচ্ছে না। ফলে এক ধরণের স্থবিরতা এসেছে জনশক্তি প্রেরণ সেক্টরে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন বিএমইটি পরিচালিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। গত ১৮ই মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৩১শে মার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে অনেক কেন্দ্রের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও অফিস চলছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বিশ্বের সার্বিক অর্থনীতি অন্যান্য সেক্টরের মতো শ্রমবাজার পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, দাপ্তরিক ছাড়া এখন রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তেমন কোন কাজ নেই। তবে বড় সমস্যা হলো আমরা নিজেদের টাকা দিয়েই চলি। গার্মেন্টস্ যেমন ব্যাংকের লোন দিয়ে চলে, সেক্ষেত্রে অনেক সময় বাড়িয়ে মেকআপ করে নেয়। কিন্তু আমাদের বিজনেস টোটালি নিজেস্ব টাকা দিয়ে চলে। আর ইতিমধ্যে যে লোকগুলোর পেছনে ইনভেস্ট হয়ে গেছে অথচ পাঠাতে পারিনি সেক্ষেত্রে অর্থের বড় সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ তারা না গেলে তো আমাদের টাকাটা দিবে না। সত্যিকার অর্থে আমরাই বেশি সংকটে। কারণ টাকাগুলো আটকে গেছে। এখন এই অবস্থা যদি দীর্ঘদিন চলে তাহলে অফিস কিভাবে চলবে। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত: আমাদের সঙ্গে যারা কাজ করছে তাদেরকে আমরা কিভাবে ট্রিট করবো। এ জায়গাতে যদি সরকার না এগিয়ে আসে তাহলে সেক্টরটি মুখ থুবড়ে পড়বে। বায়রা মহাসচিব বলেন, অফিসের কার্যক্রম অনুযায়ী ব্যাংক লোন পেলে চ্যালেঞ্জটা উৎরানো যেতো। এছাড়া সরকার সব সেক্টরে প্রণোদনা দেয়ার চিন্তা করছে, সেক্ষেত্রে আমাদেরও দিলে ব্যবসা সচল থাকতো। তিন মাস ধরে এই অবস্থা চললে সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তথ্যমতে, গতবছর ৭ লাখ ১৫৯ জন কর্মী কাজ নিয়ে বিভিন্ন দেশে গেছে। আর এ খাত থেকে বছরটিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ২১ কোটি টাকা। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। কিন্তু ক্রমবর্ধমান এ খাত চলতি বছরের শুরুতেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজারের এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করেছে বিদেশে কর্মী প্রেরণের হার। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে বিভিন্ন দেশে কর্মী গেছে প্রায় ৭০ হাজার। যার মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক কর্মী গেছে সৌদি আরবে। এ সংখ্যা ৫১ হাজার ৭৮৬ জন। এ মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার কর্মী গেছে ওমানে। এছাড়া সিঙ্গাপুরে ৩ হাজার ৪৩৯ জন, জর্ডানে ১ হাজার ৩৫৩ জন, কাতারে ১ হাজার ৩১৯ জন, কুয়েতে ৯৩৮ জন, সংযুক্ত আরব-আমিরাতে ৩৪৩ জন, লেবাননে ১৮৮ জন, মরিশাসে ৫৬৮ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫৪ জন, ব্রুনাইয়ে ২২১ জন, মালয়েশিয়াতে ৫৪ জন কর্মী গেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে আরও ১২১৯ জন কর্মী দেশ ছেড়েছেন। তবে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় পরের মাস অর্থ্যাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মী গেছে ৫৭ হাজার ৬৭২ জন, যা আগের মাসের তুলনায় সাড়ে ১২ হাজার জন কম। আর চলতি মাসে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের মতো। তবে গত কয়েকদিন ধরে বিদেশ কোন কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি। এমনকি থেমে গেছে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কাজও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিদেশে কর্মী প্রেরণে নিয়োজিত এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম প্রায় বন্ধের উপক্রম। শুধুমাত্র দাপ্তরিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ রয়েছেন। চাকরি হারানোর ভয়ে এ সেক্টরে কর্মরত অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মী বলেন, আমার কাজই প্রবাসী কল্যাণ ভবন এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) কেন্দ্রীক। দৈনন্দিন ফাইলপত্র নিয়ে ছুটাছুটি করতে হয়। এখন কাজই যদি না থাকে তাহলে আমাকে অফিস কেনো বেতন দেবে। এদিকে বিভিন্ন দেশের ভিসা স্ট্যাম্পিং বন্ধ থাকায় এবং বিমান ফ্লাইট চলাচল না করায় নতুন করে কোন কর্মীও পাঠানো হচ্ছে না। ফলে এক ধরণের স্থবিরতা এসেছে জনশক্তি প্রেরণ সেক্টরে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন বিএমইটি পরিচালিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। গত ১৮ই মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৩১শে মার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে অনেক কেন্দ্রের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও অফিস চলছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বিশ্বের সার্বিক অর্থনীতি অন্যান্য সেক্টরের মতো শ্রমবাজার পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, দাপ্তরিক ছাড়া এখন রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তেমন কোন কাজ নেই। তবে বড় সমস্যা হলো আমরা নিজেদের টাকা দিয়েই চলি। গার্মেন্টস্ যেমন ব্যাংকের লোন দিয়ে চলে, সেক্ষেত্রে অনেক সময় বাড়িয়ে মেকআপ করে নেয়। কিন্তু আমাদের বিজনেস টোটালি নিজেস্ব টাকা দিয়ে চলে। আর ইতিমধ্যে যে লোকগুলোর পেছনে ইনভেস্ট হয়ে গেছে অথচ পাঠাতে পারিনি সেক্ষেত্রে অর্থের বড় সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ তারা না গেলে তো আমাদের টাকাটা দিবে না। সত্যিকার অর্থে আমরাই বেশি সংকটে। কারণ টাকাগুলো আটকে গেছে। এখন এই অবস্থা যদি দীর্ঘদিন চলে তাহলে অফিস কিভাবে চলবে। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত: আমাদের সঙ্গে যারা কাজ করছে তাদেরকে আমরা কিভাবে ট্রিট করবো। এ জায়গাতে যদি সরকার না এগিয়ে আসে তাহলে সেক্টরটি মুখ থুবড়ে পড়বে। বায়রা মহাসচিব বলেন, অফিসের কার্যক্রম অনুযায়ী ব্যাংক লোন পেলে চ্যালেঞ্জটা উৎরানো যেতো। এছাড়া সরকার সব সেক্টরে প্রণোদনা দেয়ার চিন্তা করছে, সেক্ষেত্রে আমাদেরও দিলে ব্যবসা সচল থাকতো। তিন মাস ধরে এই অবস্থা চললে সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।