এক্সক্লুসিভ
সোনাগাজীতে ‘গোলাগুলিতে’ দুই যুবক নিহত
ফেনী প্রতিনিধি
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার, ৭:০২ পূর্বাহ্ন
ফেনীর আদালতে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় দুই যুবক। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে (শুক্রবার ভোররাত) সোনাগাজী উপজেলার উত্তর মঙ্গলকান্দি গ্রামে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত হয় নিখোঁজ দুই যুবক শামছুল হুদা নিশান (২৩) ও শরিফুল ইসলাম (২৮)। নিহতদের পুলিশ ডাকাত বলে দাবি করলেও পরিবারের সদস্যরা বলছে পুলিশ ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত শামছুল হুদা নিশান ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরকৃষ্মজয় গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে। অপরজন শরিফুল ইসলাম একই উপজেলার একই ইউনিয়নের সফরপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে। সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈন উদ্দিন আহমেদ জানান, সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের উত্তর মঙ্গলকান্দি গ্রামের বিসমিল্লাহ ব্রিকফিল্ডে ‘গোলাগুলিতে’ নিহতরা ডাকাত দলের সদস্য। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় তৈরি ২টি একনলা বন্দুক, এক রাউন্ড গুলি ও ৮ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। নিহত শামছুল হুদা নিশানের খালু দেলোয়ার হোসেন জানান, স্থানীয় বিরোধের জের ধরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো একটি ডাকাতির মামলার নিয়মিত হাজিরা দিতে বৃহস্পতিবার সকালে আদালত যায় তার ভাগনে শামছুল হুদা নিশান, শরিফুল ইসলাম ও সুজন। হাজিরা শেষে ভাগনে শামছুল হুদা নিশান তার বোনের বিয়ের বাজার করতে ফেনী বড় বাজারে যায়। বাজারে থাকা অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে সুজন তাকে ফোন করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবার সকালে হাসপতালের মর্গে শামছুল হুদা নিশানের লাশ শনাক্ত করে স্বজনরা। নিশানের খালু দেলোয়ার হোসেন জানান, ডাকাতি মামালায় প্রায় ১৪ মাস জেল খেটে গত তিনমাস পূর্বে নিশান জামিনে বের হয়। স্থানীয়ভাবে সে কৃষিকাজ করে জীবিকা চালাতো। অপরদিকে শরিফুল ইসলামের বাবা ওবায়দুল হক জানান, তার ছেলে হিউম্যান হলার (ইমা/উপকূল পরিবহন) চালাতো। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বিরোধ থাকায় গত বছর শরিফুলকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি ডাকাতি মামলায় আসামি করা হয়। কিছুদিন জেল খেটে তিনমাস পূর্বে সে জামিনে বের হয়ে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছিল। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা শেষে করে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও সে ফেরেনি। শুক্রবার সকালে স্বজনা হাসপাতালের মর্গে এসে শরিফুলের লাশ শনাক্ত করে। শরিফুল ইসলামের বাবা ওবায়দুল হক আরো জানান, পুলিশ তার ছেলেকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। তার ছেলে কখনও ডাকাতির সাথে জড়িত ছিলো না। সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈন উদ্দিন আহমেদ জানান, পুলিশ কাউকে গুলি করেনি। আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে ডাকাত দলের দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় দুই ডাকাত নিহত হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দু’জনের লাশ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।