প্রথম পাতা

২৭ দেশে করোনা, উদ্বিগ্ন হু

মানবজমিন ডেস্ক

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাস (সিভিড-১৯) মহামারি নিয়ন্ত্রণের উপায় সংকীর্ণ হয়ে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার  
 প্রধান ড. টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস। চীনের সঙ্গে বা অন্যকোনো স্থানের সংক্রমণের সঙ্গে এই ভাইরাসের সুস্পষ্ট যোগসূত্র না পাওয়ায় তিনি এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরই মধ্যে ইরানে আরো দু’জন এ ভাইরাস সংক্রমণে মারা গেছেন। এ নিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪। এর প্রেক্ষিতেই ড. টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস বলেছেন, এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলো ক্রমেই সংকীর্ণ হয়ে আসছে। ওদিকে ইরানের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ভাইরাস এরই মধ্যে ইরানের সব শহরে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে। মিডিয়ার তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত চীনের বাইরে ২৬টি দেশে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন কমপক্ষে ১১৫২ জন। মারা গেছেন আটজন। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় মারা গেছেন দু’জন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরো বলা হয়েছে, শুক্রবার ইতালির ডাক্তাররা বলেছেন, সেখানে ৭৮ বছর বয়সী একজন পুরুষ মারা গেছেন। এটাই সেখানে এ ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। এদিন ইতালিতে আরো ১৬ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আক্রান্ত এলাকায় সব স্কুল, অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছে। বাতিল করেছে খেলাধুলা বিষয়ক ইভেন্ট। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই ভাইরাসে চীনে মারা গেছেন ২২৩৯ জন। এমন অবস্থায় ড. টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস বলেছেন, চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু যে ধারায় সংক্রমণ ঘটছে তা উদ্বেগের। তার ভাষায়, আক্রান্তের সংখ্যা দিয়ে আমরা মহামারির কোনো স্পষ্ট যোগসূত্র পাচ্ছি না। এতে উদ্বিগ্ন আমরা। ইরানে নতুন করে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগের।
ইরানে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে পবিত্র শহর কোম-এ। ওই শহরটি শিয়া মুসলিমদের কাছে জনপ্রিয়। এই শহরেই শুক্রবার মারা গেছেন দু’জন। এর আগে বৃহস্পতিবার মারা গেছেন দু’জন। সব মিলিয়ে সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ জন। কোম শহর থেকে বৈরুতে ফেরার পর ৪৫ বছর বয়সী একজন নারীর দেহে নিশ্চিত হওয়া গেছে করোনা ভাইরাস। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরাইল ও মিশরেও এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু
করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের এই প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে স্কুল ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তাহলে বাধ্যতামূলকভাবে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র ধারণা করছে, মার্কিন সম্প্রদায়ের মাধ্যমেই এই সংক্রমণ ঘটতে পারে। এখনো এমনটা দেখা যায়নি। কিন্তু ঝুঁকির বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ। সেন্ট্রার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) একজন কর্মকর্তা ন্যান্সি মিসোনিয়ার এ কথা বলেছেন সংবাদ সম্মেলনে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। আস্তে আস্তে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বিশ্বজুড়ে শুরু হয় সতর্কতা। অনেক দেশেই এখন পর্যন্ত মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। বলা হয়েছে, এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। ফলে সারা বিশ্বে এর বিস্তার ঘটতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে সামনের কয়েক সপ্তাহে সেখানেই সংক্রমণ শুরু হতে পারে। এরই প্রেক্ষিতে প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়েছে।
মাঠপর্যায়ে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী আছেন তারা যাতে তাদের চাহিদা ঠিকমতো পান সেটা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে সিডিসি। এসব কর্মী কাজ করেন বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ফার্মাসি ও কলকারখানায়। এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইতালিতে এই ভাইরাস পৌঁছে গেছে। ফলে একে নিয়ন্ত্রণের উপায় সংকুচিত হয়ে আসছে বলে সতর্কতা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
জাপানে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩২৯ জন মার্কিনিকে। তার মধ্যে ১৮ জনের দেহে পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাস। তার মধ্যে ১১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা মেডিকেল সেন্টারে। ৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন ক্যালিফোর্নিয়ায় ট্রাভিস এয়ার ফোর্স বেসের কাছে একটি মেডিকেল স্থাপনায়। দু’জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে টেক্সাসে লকল্যান্ড এয়ার ফোর্স বেসের কাছে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন মাত্র তিনটি রাজ্যে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার সক্ষমতা আছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status