প্রথম পাতা
করোনা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে কারা?
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন
করোনা ভাইরাস। এখন বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচিত একটি বিষয়। চীনের উহান শহরে যার উৎপত্তি। ছড়িয়েছে ৩০টিরও বেশি দেশে। এই ভাইরাসে প্রতিদিনই মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে দেশে প্রতিরোধে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। বাংলাদেশেও নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। এই ভাইরাস ঠেকাতে সরকার বলছে পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু এ নিয়ে এখন বিভিন্ন গুজবের অভিযোগও উঠছে বাজারে। রোগী নিয়ে চলছে জবরদস্তিও। আর এ ধরণের গুজবের পরিণতিতে সাতক্ষীরাতে একজন সন্দেহজনক রোগীর মায়ের দুঃখজনক মৃত্যুও ঘটেছে। শুধু তাই নয়, কোন কোন স্থানে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর জন্য উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। পুলিশ এবং জনপ্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
আইইডিসিআর’র পরিচালক গুজব ও জবরদস্তি পরিহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন. আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, দেশ-বিদেশের বরাত দিয়ে নানা গুজবের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক গণমাধ্যমে এর উদ্বেজনক প্রসার ঘটছে। এ ধরণের গুজবের পরিণতিতে সাতক্ষীরাতে একজন সন্দেহজনক রোগীর মায়ের দুঃখজনক মৃত্যু ঘটেছে। শুধু তাই নয়, কোন কোন স্থানে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। চীন ও সিঙ্গাপুর ফেরত কোন কোন যাত্রীর ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে প্রভাবিত হয়ে কোনো কোনো জায়গায় স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনী চীন ও সিঙ্গাপুর ফেরত যাত্রীদের প্রতি জবরদস্তি আচরণ করছে। গুজব এবং জবরদস্তি দু’টোই সম্ভাব্য রোগী শনাক্তে বাধার সৃষ্টি করবে এবং সন্দেহজনক রোগীরা তথ্য ও অবস্থান গোপন করবে। এটা করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্তে জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের চেষ্টাকে হুমকির মুখে ফেলবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বপ্রথম আইইডিসিআর হটলাইনে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুনরায় আহ্বান জানায় সংস্থাটি। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি পুলিশ এবং জনপ্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সকল দায়িত্ব পালন করছে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের তথ্য আমাদের কাছে আছে। প্রশাসনের কেউ কেউ স্ব উদ্যোগে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের বাড়ি যাচ্ছেন। এধরনের তৎপরতা গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সিভিল সার্জন বা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে নিজ উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন। তিনি বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। এখন পর্যন্ত ভাইরাস আক্রান্ত রোগী মেলেনি। ভাইরাস সন্দেহে যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে এই ভাইরাস প্রতিরোধে প্রস্তুত থাকলেও ঝুঁকি দেখছেন পরিচালক।
এদিকে ১৩ই ফেব্রুয়ারি রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মিডিয়াকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম। জানা গেছে, করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এতে আক্রান্ত হয় দুইজন মারা গেছেন-বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও কথিত নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, যারাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এ ধরনের খবর প্রচার করবে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে গতকাল নার্সিং অধিদপ্তরের নতুন ভবন পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে এক শ্রেণীর মানুষ কিছু মিথ্যা গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা। মুরগির মাংস খাওয়া, মাস্ক ব্যবহার করা থেকে শুরু করে বিদেশ ফেরত কোন সুস্থ্ মানুষকে নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিনই আপডেট দেয়া হচ্ছে এবং করণীয় বিষয়গুলি বলা হচ্ছে। সুতরাং কোথাও কোন রকম মিথ্যা গুজব ছড়ানো যাবেনা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার বাইরে অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোন ধরনের কথায় কান দেয়া যাবেনা। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যখাত কতটা প্রস্তুত এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যখাত সবদিক দিয়ে এখন পুরোপুরি প্রস্তত। ইতিমধ্যেই দেশের সকল প্রবেশ পথে ২ লাখেরও বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। সন্দেহজনক প্রায় ৭২ জন বিদেশ ফেরত মানুষকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশে একজনও করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়নি। আর কোন কারণে কোন সংক্রমিত করোনা রোগী চলে এলেও তার চিকিৎসার সব ধরনের জোড়ালো প্রস্তুতি দেশের স্বাস্থ্যখাতের রয়েছে।
আইইডিসিআর বলছে, দেশে এখন পর্যন্ত ৭৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিকও রয়েছেন। কারো নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বিমান, নৌ ও স্থলবন্দর এবং একটি ট্রেনে এ পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজার ৫৫৩ জন যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫ থেকে ৭ জন বাদে সবাই চীনে মারা গেছেন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ হাজারের উপরে।
আইইডিসিআর’র পরিচালক গুজব ও জবরদস্তি পরিহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন. আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, দেশ-বিদেশের বরাত দিয়ে নানা গুজবের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক গণমাধ্যমে এর উদ্বেজনক প্রসার ঘটছে। এ ধরণের গুজবের পরিণতিতে সাতক্ষীরাতে একজন সন্দেহজনক রোগীর মায়ের দুঃখজনক মৃত্যু ঘটেছে। শুধু তাই নয়, কোন কোন স্থানে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। চীন ও সিঙ্গাপুর ফেরত কোন কোন যাত্রীর ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে প্রভাবিত হয়ে কোনো কোনো জায়গায় স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনী চীন ও সিঙ্গাপুর ফেরত যাত্রীদের প্রতি জবরদস্তি আচরণ করছে। গুজব এবং জবরদস্তি দু’টোই সম্ভাব্য রোগী শনাক্তে বাধার সৃষ্টি করবে এবং সন্দেহজনক রোগীরা তথ্য ও অবস্থান গোপন করবে। এটা করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্তে জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের চেষ্টাকে হুমকির মুখে ফেলবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বপ্রথম আইইডিসিআর হটলাইনে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুনরায় আহ্বান জানায় সংস্থাটি। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি পুলিশ এবং জনপ্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সকল দায়িত্ব পালন করছে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের তথ্য আমাদের কাছে আছে। প্রশাসনের কেউ কেউ স্ব উদ্যোগে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের বাড়ি যাচ্ছেন। এধরনের তৎপরতা গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সিভিল সার্জন বা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে নিজ উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন। তিনি বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। এখন পর্যন্ত ভাইরাস আক্রান্ত রোগী মেলেনি। ভাইরাস সন্দেহে যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে এই ভাইরাস প্রতিরোধে প্রস্তুত থাকলেও ঝুঁকি দেখছেন পরিচালক।
এদিকে ১৩ই ফেব্রুয়ারি রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মিডিয়াকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম। জানা গেছে, করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এতে আক্রান্ত হয় দুইজন মারা গেছেন-বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও কথিত নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, যারাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এ ধরনের খবর প্রচার করবে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে গতকাল নার্সিং অধিদপ্তরের নতুন ভবন পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে এক শ্রেণীর মানুষ কিছু মিথ্যা গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা। মুরগির মাংস খাওয়া, মাস্ক ব্যবহার করা থেকে শুরু করে বিদেশ ফেরত কোন সুস্থ্ মানুষকে নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিনই আপডেট দেয়া হচ্ছে এবং করণীয় বিষয়গুলি বলা হচ্ছে। সুতরাং কোথাও কোন রকম মিথ্যা গুজব ছড়ানো যাবেনা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার বাইরে অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোন ধরনের কথায় কান দেয়া যাবেনা। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যখাত কতটা প্রস্তুত এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যখাত সবদিক দিয়ে এখন পুরোপুরি প্রস্তত। ইতিমধ্যেই দেশের সকল প্রবেশ পথে ২ লাখেরও বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। সন্দেহজনক প্রায় ৭২ জন বিদেশ ফেরত মানুষকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশে একজনও করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়নি। আর কোন কারণে কোন সংক্রমিত করোনা রোগী চলে এলেও তার চিকিৎসার সব ধরনের জোড়ালো প্রস্তুতি দেশের স্বাস্থ্যখাতের রয়েছে।
আইইডিসিআর বলছে, দেশে এখন পর্যন্ত ৭৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিকও রয়েছেন। কারো নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বিমান, নৌ ও স্থলবন্দর এবং একটি ট্রেনে এ পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজার ৫৫৩ জন যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫ থেকে ৭ জন বাদে সবাই চীনে মারা গেছেন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ হাজারের উপরে।