বাংলারজমিন
মির্জাপুরে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাটি কাটার মহাযজ্ঞ
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৭:৩২ পূর্বাহ্ন
সরকার যেখানে খাল উদ্ধারে মাঠে নেমেছে সেখানে নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা বানিয়ে চলছে মাটির ট্রাক। দিনরাত শ’ শ’ ট্রাক কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে স্থানীয় ইভাটায়। আর মাটি কাটার এই মহাযজ্ঞের নেতৃত্বে রয়েছে কমপক্ষে ৫টি প্রভাবশালী গ্রুপ। ১০-১২ টি ভেক্যু মেশিন দিয়ে প্রায় ৪০-৫০টি ট্রাকযোগে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে স্থানীয় ইটভাটাগুলোতে। স্থানীয় কয়েকটি ইটভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ী ফজল মিয়া, ফরিদ, শহিদ, মোতালেব, আসাদ ও আকবর গংরা এই মাটি কাটার মহাযজ্ঞের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সরজমিন উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের কোট বহুরিয়া, চান্দুলিয়া ও দেওহাটা এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র পরিলক্ষিত হয়। দেখা যায়, লৌহজং নদীর কোট বহুরিয়া, চান্দুলিয়া ও মীর দেওহাটা অংশের তিনটি স্থানে নদীর উপর ইটের শুড়কি ও মাটি দিয়ে রাস্তা বানানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত চলছে মাটিভর্তি ট্রাক। নদীর উপর বাঁধ দেয়ার ফলে নদীর গতিপথ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নৌ যোগাযোগ বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেছে বোরো আবাদ ও ধ্বংস হচ্ছে মৎস সম্পদ। অভিযোগ রয়েছে, কেউ কেউ স্বেচ্ছায় মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে তাদের জমি বিক্রি করলেও অনেকে বাধ্য ও জিম্মিদশায় জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। জমি বিক্রি না করলে এমনভাবে মাটি কেটে নেয়া হয় যে বিক্রয়ে অনিচ্ছুক ব্যক্তির জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে কমমূল্যে আবাদি জমি বিক্রি করে দেয় স্থানীয় কৃষকরা। চান্দুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইন্তাজ আলী অভিযোগ করেন, মাটি ব্যবসায়ীরা তার জমির পাশের জমি ক্রয় করে ১০-১৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেয়ার সময় তার জমিও কেটে নিচ্ছে। এনিয়ে দুই বার তাদের বাধা দিলেও তারা মানে না। এলাকার কৃষি জমি রক্ষার স্বার্থে প্রশাসনের কাছে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রতি বছরই এভাবে কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। এতে করে কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। শ’ শ’ মাটির ট্রাক রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় ব্যাপক ধূলোয় বাড়ছে ব্যাধি, নদীও হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মাটি ব্যবসায়ী আকবর ও ইটভাটা মালিক ফরিদ মিয়ার সাথে কথা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে মিমাংসা করার প্রস্তাব দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, আমরা নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধ করে চলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলোও বন্ধ করা হবে।