শেষের পাতা

চসিক নির্বাচন

এবার ধানের শীষের প্রার্থী নিয়ে জল্পনা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:২৭ পূর্বাহ্ন

ভোট গ্রহণে আস্থা নেই বিএনপির। তাই তাদের আগ্রহও কমতির দিকে। ভোট নিয়ে উচ্ছ্বাস, আগ্রহ এখন শুধুই ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে। তাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন- সেদিকেই যেন নজর সবার। বাকিটা ইতিহাস। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনেও তার প্রতিফলন দেখছেন সবাই। ফলে চসিক নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তা নিয়ে গত সপ্তাহজুড়ে সরব ছিল চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গন। অবস্থা এমন যে, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেই মনে করা হচ্ছে ‘নির্বাচিত’। ফলে প্রতিপক্ষ নিয়ে তেমন কোন কৌতূহল নেই। গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে ঘোষিত হয় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নাম। চসিকের বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরকে সরিয়ে এবার নৌকা তুলে দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সমপাদক রেজাউল করিম চৌধুরীর হাতে। যা ছিল চমক। কারণ হেভিওয়েট প্রার্থী, ওয়ার্ডে প্রভাব, নিজস্ব বলয়, উপর মহলের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ থাকার পরও দলের সাড়া পাননি আ জ ম নাছির। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীই মেয়র-এমন ধারণা নিয়েও নগরবাসীর চোখ এখন বিএনপির দিকে। কারণ আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দল এখনো বিএনপি। যাদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার কোন চান্স নেই-এমনটা মেনেও বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। বিএনপি কি ঘুরেফিরে গতানুগতিক প্রার্থী দিচ্ছেন, না কি আওয়ামী লীগের মতো চমক দেখাবেন এমন আলোচনা এখন সবার মুখে। তবে প্রার্থী হিসেবে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে ঘিরে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে নেতাকর্মীদের মাঝে। এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সমপাদক ব্যবসায়ী নেতা এরশাদ উল্লাহও।
২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছিলেন এরশাদ উল্লাহ। তবে ২০১২ সালে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। দলের পদ হারালেও দল ছাড়েননি, সক্রিয় আছেন রাজনীতিতেও। চতুর্থ মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আছেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খানের নামও। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পাঠানটুলী খানবাড়ি পরিবারের সন্তান নিয়াজ মোহাম্মদ খান তিনবার চসিকের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও। এসময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যও ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ দলটির সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি।
আপাতত এই চারজন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হতে আগ্রহী হলেও মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারণা সপষ্ট নয়। ফলে, কার ওপর আস্থা রাখতে চাইছে দল। আওয়ামী লীগ যেহেতু আ জ ম নাছিরকে সরিয়ে রেজাউল করিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়ে চমক দেখিয়েছে, বিএনপিতেও এমন বড় কোনও চমক আসলে অবাক হওয়ার তেমন কিছুই থাকবে না বলে দলীয় নেতাকর্মীদের মত।
নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে মতবিনিময় সভায় বলে গেছেন, সব গণতন্ত্র রক্ষায় উপনির্বাচনের মতো চসিক নির্বাচনেও অংশ নেবে বিএনপি। সেক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আপাত কোনও অনিশ্চয়তা নেই। সে হিসেবে ডা. শাহাদাত হোসেনকে প্রার্থী মেনে এগোচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। ডা. শাহাদাত হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ভোটগ্রহণে আমাদের আস্থা নেই। তবুও দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি, এটা নিশ্চিত। তবে চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী কে হচ্ছেন-দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমি মেয়র প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তুত। দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথাও চলছে। তবে প্রার্থী হওয়া না হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে দলের সিদ্ধান্তের ওপর।
দলীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (১৮ই ফেব্রুয়ারি) চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে বিএনপি। ভোটের মাঠে সার্বিক দিক বিবেচনায় মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বলে মনে করছেন দলের অনেকেই। তবে ডা. শাহাদাতের সঙ্গে মনোনয়ন দৌড়ে ব্যাপকভাবেই আলোচনায় আছেন মহানগরের সাধারণ সমপাদক আবুল হাশেম বক্করও।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯শে মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শতভাগ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৭শে ফেব্রুয়ারি। যাচাই-বাছাই ১লা মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ই মার্চ। প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ই মার্চ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status