বাংলারজমিন
বিএডিসি’র আলু বীজ থেকে অর্ধেক চারাও গজায়নি, ক্ষতির মুখে কৃষক
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
১৬ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৭:৩৯ পূর্বাহ্ন
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-এর আলু বীজ থেকে অর্ধেক চারা গজায়নি। খাবার আলুকে বীজ হিসেবে দেয়ায় এ রকম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। বিএডিসি পাকুন্দিয়া এবং কিশোরগঞ্জ আলুবীজ জোন থেকে আলু বীজ এনে এ বছর আলু চাষ করেছেন এমন কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত রোববার হোসেনপুর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তারিকুল হাসান সরজমিন পরিদর্শন করে এর সত্যতাও পেয়েছেন। কিন্তু অর্ধেক চারা না গজানোয় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর দায়ভার কেউ নিচ্ছে না। আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য জামাইল ব্লকের লিডার মো. শাহীন আহম্মেদ জানান, তিনি ১০ একর জমিতে বিগত ৫ই ডিসেম্বর থেকে ১২ই ডিসেম্বর ডায়মন্ড ও কারেজ জাতের ভিত্তি হতে প্রত্যায়িত শ্রেণীর আলু চাষ করেন। যার মধ্যে কারেজ জাতের আলুর বীজ রোপণ করেন শতকরা বিশ ভাগ জমিতে এবং বাকি আশি ভাগ জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেন। কারেজ জাতের বীজ থেকে ভাল চারা গজালেও ডায়মন্ড জাতের রোপণ করা আলুর অর্ধেক চারাই গজায় নি। এরই মধ্যে একবিঘা জমি ভেঙ্গে পুনরায় বাজার থেকে আলু কিনে রোপণ করেছেন। একই এলাকার কৃষক মুস্তাকিন, মো. আসাদ মিয়া, মো. ইকবাল মিয়া ও বোরহান মিয়া বলেন, আমরা এমনিতেই গরিব কৃষক। ব্যাংক লোনের জন্য কোন দিন ব্যাংকে যাইনি। অথচ ভালো ফলনের আশায় বিএডিসির আলু ব্যাংক লোন নিয়ে চাষ করে এখন বিপাকে পড়েছি। একই অবস্থা সিদলা ইউনিয়নের গড়মাছুয়া ব্লকের, সেখানকার কৃষক মো. শহীদ মিয়া, আলম মিয়া, খাইরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম বলেন, লাভের আশায় এত কষ্ট করে আলু চাষ করে বীজের জন্য লোকসানে পড়তে হল। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তারিকুল হাসান সরেজমিন পরিদর্শন করে কৃষকদের এই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। তিনি বলেন, আলুবীজের অঙ্কুর গজানোর পরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ চারা গজায়নি। সাধারণত রোপন করার জন্য আলু ৭০-৭৫ দিন হলেই উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু ওজন বাড়ানোর জন্য কৃষকরা ৮৫-৯০ রাখেন, যা খাবার আলু হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হয়। সে আলুগুলি বীজ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ কৃষকদের বীজ হিসেবে দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিএডিসির সতর্কতার অভাবের কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে বিএডিসি পাকুন্দিয়া আলুবীজ জোনের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নায়েব আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কুষ্টিয়া থেকে সরবরাহ করা আলুবীজের দু’য়েকটি ব্লকের ক্ষেত্রে এ রকম হয়েছে।