এক্সক্লুসিভ

মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড বাতিল নিয়ে পাকিস্তানে তোলপাড়

মানবজমিন ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৭:৩০ পূর্বাহ্ন

সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করায় তোলপাড় চলছে পাকিস্তানে। বিরোধী পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) আদালতের এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিশেষ আদালত পারভেজ মোশাররফকে দোষী সাব্যস্ত করে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। একই রায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তিনদিন তার মৃতদেহ প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন পারভেজ মোশাররফ। সেই আপিলের শুনানি শেষে সোমবার বিশেষ আদালতের রায় অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে লাহোর হাইকোর্ট। রায়ে বিশেষ আদালতের নির্দেশকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে হাইকোর্ট। ফলে নির্বাসনে থাকা পারভেজ মোশাররফ ছিলেন সোমবার পাকিস্তানে টক অব দ্য কান্ট্রি।

লাহোর হাইকোর্টের ওই রায়ের পর পিপিপি’র মিডিয়া সেন্টার থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে দলটির জাতীয় পরিষদের সদস্য ড. নাফিসা শাহ বলেছেন, তিনি হাইকোর্টের এমন রায়ে হতভম্ব। তিনি রায়ের দিনটিকে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলার জন্য দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন। রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পিএমএলএনের সিনেটর মুশাহিদুল্লাহ খান।

সোমবার লাহোর হাইকোর্টে তিন বিচারকের বেঞ্চে পারভেজ মোশাররফের আপিলের শুনানি হয়। সেখানে বেঞ্চ পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ায় গঠিত বিশেষ আদালতকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করে। রায়ে আরো বলা হয়, সাবেক সেনাপ্রধান পারভেজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আইন অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়নি। গত ১৭ই ডিসেম্বরে রাজধানী ইসলামাবাদে বিশেষ আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। ২০০৭ সালের ৩রা নভেম্বর সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারির কারণে পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ৬ বছর আগে মামলা করেছিল ক্ষমতাসীন পিএমএলএন সরকার। বিশেষ ওই আদালতকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়ায় ড. নাফিসা শাহ বলেছেন, ওই বিশেষ আদালত গঠন করেছিল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট এবং ওই আদালতে বিচারক ছিলেন দেশের তিনটি হাইকোর্টের। তাই নাফিসা শাহ মনে করেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত ছিল সুপ্রিম কোর্টে, হাইকোর্টে নয়। এ সময় তিনি আরো বলেন, এখনো প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।  

পিএমএলএনের সিনেটর মুশাহিদুল্লাহ খান বলেছেন, লাহোর হাইকোর্টের রায় সত্ত্বেও তিনি বিচারক ওয়াকার আহমেদ শেঠের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। বিশেষ আদালতের প্রধান ছিলেন তিনি। তার আদালতই জেনারেল পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব দেখেছে স্বৈরাচার জেনারেল পারভেজ মোশাররফ সংবিধানকে রদ করেছিলেন। তার বুটের নিচে দলিত করেছেন সংবিধান। সবাই দেখেছে সামরিক শাসক হুমকি দিয়েছেন এবং তারপর হত্যা করেছেন বেলুচ সরদার নওয়াব আকবর বুগতিকে। এ ছাড়া তখনকার প্রধান বিচারপতি ইফতিখার চৌধুরীকে ইসলামাবাদের রাস্তায় হেনস্থার ছবি পত্রিকায় এসেছে। জেনারেল মোশাররফ বিচারকদের গৃহবন্দি করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, জেনারেল পারভেজ মোশাররফের অপরাধের তালিকা অনেক দীর্ঘ। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এতকিছু সত্ত্বেও এমনও মানুষ আছেন, যারা বিশ্বাস করেন পারভেজ মোশাররফকে দোষী সাব্যস্ত করা উচিত হয়নি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status