বাংলারজমিন

বিকল্প সড়ক না করেই কালভার্ট মেরামত, ভোগান্তি

আমিনুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ থেকে

১৫ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৭:২৮ পূর্বাহ্ন

অসহ্য যন্ত্রণা আর মহাদুর্ভোগের আরেক নাম ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ। এই বিভাগের অধীনে ঝিনাইদহ জেলায় যতগুলো ব্রিজ ও রাস্তায় কাজ চলছে প্রতিটি জায়গাতেই জনদুর্ভোগের একই চিত্র। ঝিনাইদহ যশোর সড়কে একটি কালভার্ট ধসে পড়ায় তা নতুন করে নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু কাজ এতোটাই ধীরগতিতে চলছে যে এই কালভার্টের স্থান থেকে যানবাহন পার হতে এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ সড়কের এই কালভার্টটি এক মাসেও ভাঙতে পারেনি। তৈরি করেনি বিকল্প কোনো রাস্তা। শিডিউলে বিকল্প রাস্তা তৈরির বিল ধরা থাকলেও ঠিকাদার সড়ক বিভগের প্রকৌশলীকে মেনেজ করে সেটা তৈরি না করেই ব্রিজটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে। ফলে চরম দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে যানবাহন চালক, পথচারীসহ যাত্রীরা। দিনের বেলায় যানজট একটু কম থাকলেও রাতের বেলায় বেনাপোল বন্দর ও মংলা পোর্ট থেকে শত শত মালবাহী ছোট বড় ট্রাক ছেড়ে আসে দেশের বিভিন্ন শহরের উদ্দেশ্যে। যে কারণে এই কালভার্টে এসে তীব্র যানজটের আকার ধারণ করে।

ব্রিজের দু’পাশে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার যানজট লেগেই থাকে। জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে গুরুত্বপূর্ণ এই কালভার্টটির মাঝের অংশ দেবে যায়। পরে তা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। ওই সময় কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে কালভার্টের উপরেই এক সাইডে স্টিলের বেইলি ব্রিজ তৈরি করে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। এই পথেই খুলনার সঙ্গে রাজশাহী বিভাগের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। ফলে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় এ সড়কে যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাকসহ দুই শতাধিক বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের গাফিলতি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে জনসাধারণের। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের অধীনে ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ব্রিজটির নির্মাণ কাজ করছে খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুজাহার এন্টারপ্রাইজ। ৯০ দিনের মধ্যে কালভার্টটির নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও গত এক মাসেরও বেশি সময় পার হলেও এখনো কালভার্টের এক সাইডই ভাঙার কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে যেমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে তেমনি জনদুর্ভোগ আরো বাড়ার শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। ঝিনাইদহের ব্যবসায়ী সাইফুজ্জামান জানান, ছালাভরায় যানজট হবে ভেবে তিনি যশোর বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ৩ ঘণ্টা আগেই ঝিনাইদহ থেকে রওনা দেন। শরীফ নামে এক ট্রাক ড্রাইভার বলেন, রাতে মালবাহী ট্রাক নিয়ে যেতে খুব সমস্যা হয়। ৮-১০ কিলোমিটার যানজট থাকে। এক সাইড দিয়ে কালভার্ট পার হওয়ার রাস্তাটি ও যেনতেনভাবে তৈরি করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অধিকাংশ সময় সেখান থেকে পার হতে গেলে গাড়ির পাতি ভেঙে যায়। বাসচালক মারুফ আহম্মেদ বলেন, কালভার্টটির জন্য দীর্ঘ সময় যানজটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। একটি বিকল্প রাস্তা করে দিতে পারতো তাও করেনি। যার ফলে সমস্যা বেড়েই চলেছে। কাজের ঠিকাদার রেজাউল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, কাজে কোনো ধীর গতি নেই। ২৭ জন শ্রমিক কাজ করছে। আসলে কালভার্টের আগে যে পিলার ছিল তা ভাঙতে একটু সময় লেগে যাচ্ছে। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারবে কি না তা নিয়ে তিনিও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার জানান, আমার মনে হচ্ছে না যে এই কাজে ধীর গতি আছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার জন্য জনবল আরো বাড়ানোর জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিককে তাগাদা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status