বিশ্বজমিন

তবে কি এটাই যুদ্ধ শুরু!

মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৮০: দাবি ইরানের

মানবজমিন ডেস্ক

৮ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমান ঘাঁটিতে কমপক্ষে ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ওই দুটি বিমান ঘাঁটি ইরবিল ও আল আসাদে মার্কিন সেনারা অবস্থান করে। ইরান দাবি করেছে এতে কমপক্ষে ৮০ ‘আমেরিকান টেরোরিস্ট’ নিহত হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের হেলিকপ্টার ও সামরিক সরঞ্জাম। তবে কিভাবে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে ইরান সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। হামলায় জার্মানি, ডেনমার্ক ও নরওয়ের কোনো সেনা সদস্য নিহত বা আহত হয় নি বলে জানিয়েছে এসব দেশ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে হোয়াইট হাউজ। বুধবার সকালে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেয়ার কথা ট্রাম্পের। তবে তিনি টুইট করেছেন পাল্টা প্রতিশোধ নেয়ার। এ থেকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার ভয়াবহ এক আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওদিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরান। তারা বলেছে, আত্মরক্ষার্থে জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারার অধীনে তারা এ হামলা করেছে। ওদিকে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিশাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইরাকে মার্কিন স্থাপনায় হামলার বিষয়ে আমরা অবহিত। প্রেসিডেন্টকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজরদারি করা হচ্ছে। পরামর্শ করা হচ্ছে প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা এক বিবৃতিতে বলেছে, আমেরিকার সব মিত্রকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছে ইরান। যেসব মিত্র তাদের ঘাঁটি সন্ত্রাসী সেনাদের (মার্কিনিদের) ব্যবহার করতে দিয়েছে, সেটা যেখানেই হোক, সেখান থেকে ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী কর্মকা- চালানো হলে, তাকে টার্গেট করবে ইরান। পরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ টুইটারে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, ইরান হামলা চালিয়েছে আত্মরক্ষার্থে। যুদ্ধের পরিস্থিতিকে উত্তেজিত করতে এ হামলার কথা অস্বীকার করেন তিনি। ইরান ওইসব ঘাঁটিকে টার্গেট করেছে যেখান থেকে আমাদের নাগরিক ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কাপুরুষের মতো হামলা চালানো হয়েছে। আমরা কোনো উত্তেজনা বা যুদ্ধ চাই না। কিন্তু যেকোন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা আত্মরক্ষা করবো।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার কেরমান প্রদেশে দাফন সম্পন্ন হয় ইরানে বীর হিসেবে পরিচিত জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। আল মায়াদিন টেলিভিশন বলেছে, প্রথম রকেট আল আসাদে মার্কিন ঘাঁটিতে আঘাত করার অল্প পরেই ইরবিলে দ্বিতীয় হামলা করা হয়। ওদিকে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার হবে খুব খারাপ একটি কাজ।

ওদিকে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলার পর আরো মৃত্যু এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রকে সেনা প্রত্যাহার করার পরামর্শ দিয়েছে ইরান। ইসরাইল সহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সতর্ক করা হয়েছে, তাদের ভ’খন্ড থেকে হামলা অনুমোদন না দিতে। ইরানের সুপ্রিম নেতার অফিসের একজন কর্মকর্তা ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে যেসব হামলার পরিকল্পনা হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা তার মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম। এতে অন্য একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ইরানের টার্গেটে রয়েছে ১০০ স্থাপনা। ইরানি টেলিভিশন বলেছে, ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের স্থাপনায় ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত স্থানীয় সময় এক টা ৩০ মিনিটে এসব হামলা করা হয়। ওই স্থাপনাগুলোতে অবস্থান করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাথীন জোট বাহিনীর সদস্যরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status