বই থেকে নেয়া
মানবাধিকার নিষিদ্ধ কাদের জন্য
ড. আসিফ নজরুল
২০ ডিসেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৪:১৫ পূর্বাহ্ন
মানবাধিকার বিষয়টি সর্বজনীন, কিন্তু তা সব ক্ষেত্রে সীমাহীন নয়। এই অধিকার নিয়ন্ত্রণযোগ্য, অর্থাৎ এর থেকে মাঝেমধ্যে মানুষকে বঞ্চিত করা যায়। কয়েকটি উদাহরণ দিই। যেমন: সংগঠন করার অধিকার সব মানুষের আছে। একমাত্র আইনগতভাবে ছাড়া এই অধিকার কারও থেকে কেড়ে নেয়া যাবে না। আইনে আছে জঙ্গি কোনো সংগঠন করা যাবে না। এখন কোনো সংগঠন যদি জঙ্গিবাদে লিপ্ত হয়, তাহলে রাষ্ট্র সেই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। তখন আর ওই সংগঠনটি করার অধিকার কারও থাকবে না।
আইনে আছে, মতামত প্রকাশ করার অধিকার সবার রয়েছে, কিন্তু তাই বলে অপরাধ উসকে দেওয়ার মতো মতামত প্রকাশ করা যাবে না। যেমন আমি যদি বলি মাদক বিক্রেতাদের আবার বিচার কী, তাদের যেখানে পাওয়া যাবে, পিটিয়ে মেরে ফেলা উচিত, তাহলে এটাকে আমার মতামত প্রকাশের অধিকার হিসেবে দেখা হবে না। বরং এ জন্য আমার শাস্তি হতে পারে।
মানবাধিকার থেকে আবার কিছু কিছু মানুষকে বঞ্চিত করা যায়। যেমন সেনাবাহিনী বা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের নিজেদের আইন দ্বারা পরিচালিত হন। বাহিনীতে থাকা অবস্থায় তাঁদের স্বাধীন মতপ্রকাশের বা সভা-সমাবেশের অধিকার নেই। সে জন্য আমরা কখনো সেনাবাহিনী বা পুলিশের সদস্যদের রাস্তায় মিছিল করতে দেখি না। তাঁরা অবসর গ্রহণের পর অন্য সবার মতো যেকোনো মানবাধিকার ভোগ করার অধিকারী হন।
আবার জরুরি অবস্থায় মানবাধিকার থেকে যেকোনো মানুষকে সাময়িকভাবে বঞ্চিত করা যায়। যুদ্ধ বা গুরুতর অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার কারণে সাধারণত কোনো দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। ধরা যাক, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য কোনো দেশের যুদ্ধ লেগে গেল। দেশের যেখানে যুদ্ধ হচ্ছে, সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। জরুরি অবস্থা যত দিন থাকবে, ততদিন সে এলাকায় মানুষের সভা-সমাবেশ করার বা অবাধ চলাফেরার অধিকার স্থগিত থাকবে।
এসব সীমাবদ্ধতা দ্বারা অবশ্য কম মানুষই অধিকারভোগে বঞ্চিত হন। কারণ, বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১ শতাংশের অনেক কম বিভিন্ন বাহিনীতে আছেন, আর গত দশ বছরে এখানে একবারও জরুরি অবস্থা জারি হয়নি।
প্রত্যেকে মানবাধিকার ভোগ করবে, এটাই স্বাভাবিক। ব্যতিক্রমের ক্ষেত্র অল্প।
সূত্র: ড. আসিফ নজরুল প্রণীত প্রথমা প্রকাশিত ‘মানবাধিকার’ বই থেকে
আইনে আছে, মতামত প্রকাশ করার অধিকার সবার রয়েছে, কিন্তু তাই বলে অপরাধ উসকে দেওয়ার মতো মতামত প্রকাশ করা যাবে না। যেমন আমি যদি বলি মাদক বিক্রেতাদের আবার বিচার কী, তাদের যেখানে পাওয়া যাবে, পিটিয়ে মেরে ফেলা উচিত, তাহলে এটাকে আমার মতামত প্রকাশের অধিকার হিসেবে দেখা হবে না। বরং এ জন্য আমার শাস্তি হতে পারে।
মানবাধিকার থেকে আবার কিছু কিছু মানুষকে বঞ্চিত করা যায়। যেমন সেনাবাহিনী বা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের নিজেদের আইন দ্বারা পরিচালিত হন। বাহিনীতে থাকা অবস্থায় তাঁদের স্বাধীন মতপ্রকাশের বা সভা-সমাবেশের অধিকার নেই। সে জন্য আমরা কখনো সেনাবাহিনী বা পুলিশের সদস্যদের রাস্তায় মিছিল করতে দেখি না। তাঁরা অবসর গ্রহণের পর অন্য সবার মতো যেকোনো মানবাধিকার ভোগ করার অধিকারী হন।
আবার জরুরি অবস্থায় মানবাধিকার থেকে যেকোনো মানুষকে সাময়িকভাবে বঞ্চিত করা যায়। যুদ্ধ বা গুরুতর অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার কারণে সাধারণত কোনো দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। ধরা যাক, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য কোনো দেশের যুদ্ধ লেগে গেল। দেশের যেখানে যুদ্ধ হচ্ছে, সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। জরুরি অবস্থা যত দিন থাকবে, ততদিন সে এলাকায় মানুষের সভা-সমাবেশ করার বা অবাধ চলাফেরার অধিকার স্থগিত থাকবে।
এসব সীমাবদ্ধতা দ্বারা অবশ্য কম মানুষই অধিকারভোগে বঞ্চিত হন। কারণ, বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১ শতাংশের অনেক কম বিভিন্ন বাহিনীতে আছেন, আর গত দশ বছরে এখানে একবারও জরুরি অবস্থা জারি হয়নি।
প্রত্যেকে মানবাধিকার ভোগ করবে, এটাই স্বাভাবিক। ব্যতিক্রমের ক্ষেত্র অল্প।
সূত্র: ড. আসিফ নজরুল প্রণীত প্রথমা প্রকাশিত ‘মানবাধিকার’ বই থেকে