বাংলারজমিন

লালমনিরহাটে স্কুলের ছাদ ঢালাইয়ে অনিয়ম

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

৪ ডিসেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

 লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতল ভবনের ছাদ ঢালাইয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য একাডেমিক ভবনের সংকট দেখা দেয়। এ সংকট পূরণে চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চার তলার ভিত্তির ওপর দ্বিতল ভবনের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগ। এ জন্য দরপত্র আহ্বান করলে ৮৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও ৮৩ লাখ ৭২ হাজার ৬১৭ টাকা চুক্তিতে কাজটি পান উৎস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীকালে কাজটি কমিশনে ক্রয় করে শাহজামাল নামে স্থানীয় একজন ঠিকাদার করছেন। নির্মাণকাজ শুরু থেকে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে বলে স্থানীয় অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও কর্ণপাত করেনি প্রকৌশল বিভাগ। বিশাল ভবন তৈরি করলেও নেই শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুম বা টয়লেট। নেই প্রতিবন্ধীদের ওঠার সিঁড়ি। ছাদে পাঁচ ইঞ্চির ঢালাই দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তিন-চার ইঞ্চি ঢালাই দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া, স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৌশলী ছাড়াই দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় তলার শেষ কক্ষে ছাদে ফিনিশিং ভালো না হওয়ায় ছাদ হয়েছে ঢেউ খেলানো তিন ইঞ্চির। ফলে  ঢেউয়ের এ ফাঁকা স্থান তথা পাঁচ ইঞ্চি পূরণে দেয়া হচ্ছে নেটসহ দুই ইঞ্চির প্লাস্টার। যা অল্প কিছুদিনের মধ্যে পলেস্তারা খুলে শিক্ষার্থীদের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পলেস্তারা খসে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির আশঙ্কা। ঠিকাদার রাজমিস্ত্রি সাইফুল ইসলাম ভবনের ছাদ ঢালাই পরিমাপ করে বলেন, কোথাও চার ইঞ্চি আবার কোথাও একটু কম আছে। তবে দ্বিতীয় তলার  শেষ শ্রেণিকক্ষের ছাদে যেটুকু ঘাটতি রয়েছে তা প্লাস্টার করে সমান করে  দেয়া হবে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল বলেন, শুরু  থেকেই কাজের মান নিয়ে প্রকৌশলীদের বলা হলেও তারা কর্ণপাত করেননি। বরং উল্টো ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে গোঁজামিল দিয়ে আসছেন। ছাদের পাঁচ ইঞ্চির স্থলে তিন ইঞ্চি ঢালাই দেয়া হয়েছে। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে বাকি দুই ইঞ্চি পূরণে  েনেট নিয়ে প্লাস্টার করছেন ঠিকাদার। গত তিনদিন ধরে তাড়াহুড়ো করে করা হচ্ছে এ প্লাস্টার। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিষয়টি  দেখতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। ভবন নির্মাণ কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঢালাইয়ের দিন ঢাকা থেকে অডিট টিম আসায় এ ভবনে সার্বক্ষণিক থাকতে পারিনি। তবে ছাদ ঢালাই কম-বেশি হতে পারে। নেট দিয়ে প্লাস্টার করে পূরণ করা হলে সমস্যা হবে না। সামান্য ত্রুটি হয়েছে। তবে বালিশ দুর্নীতির মতো  কোনো ঘটনা ঘটেনি। উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, অনেক কাজ চলমান থাকায় সব কাজ তদারকি করা সম্ভব হয় না। এ ভবনে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে মূল ঠিকাদার কাজে না আসায় সাব-ঠিকাদার শাহজামাল কথা শুনতে চান না। প্লাস্টার করলেও সমস্যা হবে না। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর আলী বলেন, ছাদে প্লাস্টার করার নিয়ম নেই। এমনটি হলে পলেস্তারা খুলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status