শিক্ষাঙ্গন
জাবিতে দোকান খোলা রাখায় ‘লাঞ্ছিত’ কলেজ শিক্ষক ও সাবেক ছাত্র
জাবি প্রতিনিধি
২ ডিসেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন দোকান খোলা রাখায় সাবেক দুই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেছেন বলে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী মোঃ আকবর আলী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২৫তম ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং প্রধান ফটকের ‘জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফিক্স ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোর’র মালিক।
লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে প্রধান ফটক সংলগ্ন আকবর আলীর জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফিক্স ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরটি সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে শুধু ক্যাম্পাসে বসবাসকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের জরুরী প্রয়োজনে কিছু কাজ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন শিক্ষক এবং উপ-রেজিস্ট্রার নাহার বেগমের ব্যক্তিগত ছবির কাজ করার জন্য গত রোববার বিকালে দোকানটি খোলা হয়।
এসময় সেখানে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন উপস্থিত হলে তাকে জরুরী প্রয়োজনের বিষয়টি ব্যাখা করা হয়। কিন্তু সুদীপ্ত শাহীন কথা না শুনে আকবর আলীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
এসময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৯তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন। তিনি এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ না করতে সুদীপ্ত শাহীনকে অনুরোধ করেন। তখন সুদীপ্ত শাহীন আব্দুর রাজ্জাকের পরিচয় জানতে চান। সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেই সুদীপ্ত শাহীন তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এসময় আব্দুর রাজ্জাক ক্যাম্পাসে বসবাস করেন শুনে সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘তুই তোর বউয়ের পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে থাকিস, লজ্জা করেনা?’
অভিযোগপত্রে আকবর আলী আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী খাবার সংশ্লিষ্ট যেসকল দোকান বন্ধ থাকার কথা তা তার দোকানের মধ্যে পড়েনা। প্রশাসন থেকে দোকান বন্ধের কোন নোটিশ তার হাতে আসেনি। এ অবস্থায় সে ব্যবসা পরিচালনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে মাধ্যমে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদিপ্ত শাহীনের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, রোববার বিকেলে ডেইরি গেটে আমরা টহলে যাই। প্রশাসনের নির্দেশনা থাকার পরেও সেখানে কনফেকশনারীর দোকান খোলা দেখে দোকানদারের কাছে এর কারণ জানতে চাই। এসময় পাশে থাকা এক ব্যক্তি দোকানদারের সঙ্গে আমাকে উচ্চস্বরে কথা বলতে নিষেধ করেন। পরে আমি সেই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাই। সে নিজেকে সাবেক শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে আমি টহল নিয়ে ফিরে আসি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদিপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে রিক্সাচালক, বহিরাগত মারধর, গণমাধ্যমকর্মীকে উত্ত্যক্তসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।