শেষের পাতা
এফওসি আজ
রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে ফিলিপাইনের সহযোগিতা চায় ঢাকা
কূটনৈতিক রিপোর্টার
৩ ডিসেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:০৫ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ ফেরত পেতে ফিলিপাইনের সঙ্গে কার্যকর আলোচনা চায় ঢাকা। এ নিয়ে দেশটির সহযোগিতাও চায় বাংলাদেশ। ঢাকায় আজ দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার ফোরাম ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি’র বৈঠকে এ সহযোগিতা চাওয়া হবে। ওই বৈঠকে কৃষি প্রযুক্তি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণসহ পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এফওসির আওতায় অনুষ্ঠেয় আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয়ই আসবে বলে আভাস মিলেছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ফিলিপাইনের একটি চক্র বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮.২ কোটি ডলার চুরি করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে ১.৬ কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বাকিটা এখনও উদ্ধার হয়নি। দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক অন্তত ৪টি চুক্তির খসড়া বিনিময় এবং এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হবে। বৈঠকটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ- বলছে সেগুনবাগিচা এবং ম্যানিলার বাংলাদেশ দূতাবাস। বৈঠকে ফিলিপাইনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির সহকারী সচিব (সচিব পদ মর্যাদা) মেনার্ডো মন্টেইলেগরে। আর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম সচিব মাসুদ বিন মোমেন। জাপান ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্বপালন শেষে সম্প্রতি দেশে ফেরা জ্যেষ্ঠ ওই কূটনীতিকের নতুন দায়িত্বের সম্ভবত অভিষেক হতে যাচ্ছে ওই বৈঠকে। পরবর্তী পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে তার নামটি জোর আলোচনায় রয়েছে। উল্লেখ্য, পরিবর্তিত বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে রাশিয়া ও চীনের দিকে ঝুঁকে পড়া ফিলিপাইনের সঙ্গে বাংলাদেশ ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও ম্যানিলার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণ হয়েছে। গত বছর ফিলিপাইন থেকে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিপাইন বিপুল পরিমাণে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য, রড ও স্টিল, টেক্সটাইল ফেব্রিক্স, কেমিক্যাল ও প্লাস্টিক পণ্য আমদানি করে থাকে। সেই বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে দেশটিতে ওষুধ, আলু, পাটজাত পণ্য এবং তৈরি পেশাক রপ্তানীর সূযোগ অবারিত। বিপরীতে ফিলিপাইন থেকে বাংলাদেশ পামওয়েল ও চিনি আমদানী করতে পারে। তাছাড়া ফিলিপাইনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি, বিজনেস প্রসেস ম্যানেজমেন্ট, পর্যটন ও ট্রান্সপোর্টেশন, কৃষি, মৎস্য এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তিগত জ্ঞানের আদান-প্রদান, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং পর্যটন খাতের উন্নয়নে ফিলিপাইন ও বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জয়েন্ট ভেঞ্চারে বিভিন্ন প্রজেক্ট গ্রহণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এশিয়ান অঞ্চলে পণ্য সরবরাহ ও বাণিজ্য সমপ্রসারণে ফিলিপাইন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গেটওয়ে হতে পারে।