শেষের পাতা

রুয়েটে ৫ম সমাবর্তনে প্রেসিডেন্ট

মানুষ দানব হয়ে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী/রাবি প্রতিনিধি

২ ডিসেম্বর ২০১৯, সোমবার, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

কচু ছাড়া সব কিছুতেই ফরমালিন। নির্ভেজাল খাবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। খাদ্য ভেজালের কারণে ক্যান্সারসহ জটিল রোগ হচ্ছে। দেশের মানুষই দানব হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে মানুষকে ফেরাতে হবে। শুধু পকেট মারলে গণপিটুনি হয়, এ ধরনের মানুষকেও গণপিটুনি দেয়া উচিত। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে  প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ প্রকৌশলী সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। আপনারা জানেন, বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে দেশ যত বেশি উন্নত সে দেশ তত বেশি সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমাদের বিপুল মানবসম্পদ থাকা সত্ত্বেও     কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা কাঙ্‌ক্িষত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ায় আশানুরুপভাবে এগুতে পারিনি। বর্তমান সরকার কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে ।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উন্নয়ন বাজেট প্রদান ও গবেষণা বরাদ্দ প্রদান করা হচ্ছে। বিদ্যমান সুবিধাসমূহের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণগত উচ্চশিক্ষা প্রদানে ব্রতী হবে বলে আমার বিশ্বাস।

তিনি বলেন, সার্টিফিকেট দেয়া এবং শিক্ষার প্রসারই শেষ কথা নয়। আমাদের প্রয়োজন যুগোপযোগী শিক্ষা। বর্তমানে প্রতিনিয়তই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। কাজেই আমাদেরও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বাস্তবভিত্তিক এবং প্রায়োগিক শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে। গুণগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সাথে ল্যাবরেটরির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গবেষণা ও হাতে কলমে শিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। এজন্য গবেষণা ও ল্যাবরেটরি কর্মের উপর অধিক মনোনিবেশ করা জরুরি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে ন্যানো টেকনোলোজি, রোবোটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষা যাতে দেশের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। অন্যের অনুকরণ নয়, আমাদের যাতে অন্যরা অনুকরণ করতে পারে সে লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও আহ্বানে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই স্বাধীনতা অর্জন করি। বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নতসমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে. তা বাস্তবায়নে প্রধান কারিগর হচ্ছে প্রকৌশলীরা। সুতরাং প্রকৌশলীদের স্ব-স্ব বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে- এই দেশ, দেশের জনগণ তোমাদের এতদিন দিয়ে এসেছে। জনগণের করের অর্থেই তোমরা আজ গ্র্যাজুয়েট, প্রকৌশলী। তাই তোমরা দেশ ও জাতির কাছে ঋণী। তোমাদের মেধা, কর্ম ও মনন দিয়ে সে ঋণ শোধ করতে হবে। সততা মানুষের জীবনে মূল্যবান সম্পদ। কর্মজীবনে তোমরা সৎ পথে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাবে। তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকে উল্লেখ আছে ‘ঐশী জ্যোতিই আমাদের পথ প্রদর্শক।’ প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু মহসিন আহমেদ সততার প্রতীক হিসেবে এ কথা সংযোজন করেছিলেন। তাঁর শুভ ইচ্ছার সাথে সংগতি রেখে আমিও চাই অশুভ হাতছানি যেন কখনেই তোমাদের বিবেককে ধ্বংস করতে না পারে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status