শেষের পাতা

যুবলীগের সম্মেলন আজ

স্টাফ রিপোর্টার

২৩ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৯:০৫ পূর্বাহ্ন

বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিয়ে যুবলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন হতে যাচ্ছে আজ। ক্যাসিনোসহ নানা অনিয়মের কারণে সমালোচিত যুবলীগকে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঢেলে সাজানো হবে। পরিচ্ছন্ন ও বিতর্কমুক্ত নেতৃত্বের হাতেই দেয়া হবে সংগঠনটির দায়িত্ব। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল ১১টায় সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন যুবলীগ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি চয়ন ইসলাম। পরে বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করা হবে। নেতারা জানিয়েছেন, যুবলীগের ইতিহাসে কোনো জাতীয় সম্মেলনেই ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হয়নি। সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনাই নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করবেন। সম্মেলনে কাউন্সিলর, ডেলিগেট, অতিথিসহ প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।

যুবলীগের কংগ্রেস প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম বলেন, কংগ্রেসের জন্য মঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে পদ্মা সেতুর আদলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতীকী পদ্মা সেতুর ওপর বসে সম্মেলনের প্রথম পর্ব উপভোগ করবেন। যুবলীগের সব শেষ সম্মেলন হয় ২০১২ সালের ১৪ জুলাই। ওইসময় ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেসে চেয়ারম্যান পদে ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ হারুনুর রশিদ নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের প্রথম যুব সংগঠন যা ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব অঙ্গসংগঠন। এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। যুবলীগের নেতারা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সংগঠনের ৬টি কেন্দ্রীয় কমিটি হয়েছে। এর মধ্যে চারটিতে চেয়ারম্যান ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার নিকটাত্মীয়রা। তাই যুবলীগের প্রতিটি সম্মেলনেই ওই পরিবারের কেউ না কেউ আলোচনায় থাকেন। এবার আলোচনায় আছেন শেখ ফজলুল হক মণির বড় ছেলে শেখ পরশ।

তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না তিনি। পরশের পাশাপাশি যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের দুই ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইমও শীর্ষ পদে আসার চেষ্টা করছেন। এছাড়া যুবলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান আতা, বেলাল হোসাইন, যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, মনজুর আলম শাহীন, সুব্রত পাল ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নাম সাধারণ সম্পাদক পদের আলোচনায় রয়েছে। এবারই প্রথম যুবলীগের নেতাদের বয়সসীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কারও নেতৃত্বে আসার সুযোগ নেই। ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতাদের অনেকেই চেষ্টা চালাচ্ছেন যুবলীগের শীর্ষ পদে আসতে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের শুরুতেই গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর একই কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সহসভাপতি এনামুল হক আরমান গ্রেপ্তার হন। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তাকে বাদ দিয়েই সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে। একাধিক নেতা সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হন। যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতার দুর্নীতির অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বিএনপির মুখের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই : ওবায়দুল কাদের
এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও বিএনপির মুখের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। বিএনপির মুখের ভাষা এবং মিথ্যাচার, অপপ্রচারের ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রন নেই। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিএনপি দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের প্রস্তুতি ও মঞ্চ পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের দিন আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনের নেতৃত্ব ঘোষনা করা হবে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সম্মেলন ছাড়া কমিটি ঘোষনা হবে না। কাউন্সিলের পর মহানগর উত্তর এবং দক্ষিনের কমিটির ব্যবস্থা করবে যুবলীগের নতুন কমিটি। তিনি বলেন, যুবলীগের নেতৃত্ব বাছাই কাউন্সিলররা ঠিক করবে। তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে। তাদের সম্মতিতে পরবর্তী নেতৃত্ব আসবে।

এখানে অবশ্যই আমাদের অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মুল্যবান পরামর্শ আমরা নেবো। কে নেতা হবেন এই মুহুর্তে বলতে পারছি না। কাউন্সিল সেশনে চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম আসবে। অধিক প্রার্থী থাকলে তাদের একজন হওয়ার জন্য সময় দেবো। সেই সময় সীমার মধ্যে কম্প্রোমাইজ না হলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এবং আমাদের সর্বোপরি নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে নতুন কমিটির চেয়ারম্যান-সম্পাদকের নাম ঘোষনা করবো। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন,নেতা-কর্মীরা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির রক্তের উত্তরাধিকার কাউকে যুবলীগের নেতৃত্বে চাইতেই পারে, সেটি যুবলীগের অধিকার আছে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় সব ধরনের যান চলছে। কোথাও সমস্যা থাকলে আজ থেকে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহন নিয়ে যে সমস্যা ছিলো আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status