বাংলারজমিন

কলেজ-হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের দিয়ে পিএসসি পরীক্ষা

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

২০ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৭:৫৬ পূর্বাহ্ন

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় বিভিন্ন কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেয়ানো হচ্ছে প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) পরীক্ষা। সরজমিনে গিয়ে গোপালপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ৬৯নং হেমনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সূতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এ সময় ১৪ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার পরীক্ষা চলাকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোপালপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ইউএনও বিকাশ বিশ্বাস ভুয়া পরীক্ষার্থীদের শনাক্ত করে বহিষ্কার ও হল থেকে বের করে দেন। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভুয়া পরীক্ষার্থীদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে জালিয়াতির বেশ কিছু ঘটনা। তাদের অভিযোগ- আমরা এ কাজ করতে চাইনি। হিরু ও শরীফ নামের ২ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকার লোভ, বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দেয়ার কথা বলে তাদের অভিভাবকদের ভয় দেখিয়ে এমন কাজ করাতে তারা বাধ্য করেছেন। শিক্ষার্থীরা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাবা, মা গরিব মানুষ। আমাদের ঠিকমতো লেখা পড়ার যোগান দিতে পারে না। কাজেই বাধ্য হয়ে এমন কাজ করতে আমরা বাধ্য হয়েছি। ধোপাকান্দি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তামান্না বলেন, প্রতিটি পরীক্ষার জন্য আমাকে পাঁচশত টাকা করে দিবে বলে আমি পরীক্ষা দিতে এসেছি। আমরা গরিব মানুষ। টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে এসেছি। সুমাইয়া আক্তার কোন দিন স্কুলেও যায়নি। সেও পরীক্ষা দিতে এসেছে সুতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। শুধু মাত্র উপস্থিতি দেখানোর জন্যেই তাকে বাড়ি থেকে জোর করে হিরু স্যার পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছেন। জানা যায়, নতুন জাতীয়করণকৃত ছোট শাখারিয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের এমপিও টেকানোর জন্য পার্শ্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া ৭ম, নবম ও এইচএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করাচ্ছে। বিষয়টি পিএসসি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সন্দেহ হলে এ সকল ভুয়া পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলো- তামান্না, সুমাইয়া, ফরিদা, তৃষা, বিথী, কাওসার, নাঈম, শুভ, লিমন, খন্দকার নাজমুল, মোছা. আনিকা খাতুন, সাগর, জান্নাতী সহ মোট ১৪ জন। তারা ছোট সাখারিয়া দাখিল মাদ্রাসা, সূতী হিজলিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, রাধারানী গালস্‌ স্কুল ও ধোপাকান্দি কলেজের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের এই অনৈতিক কাজের মুল হোতা ছোট সাখারিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. রেজাউল হান্নান। তার মাধ্যমেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে গোপালপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, যে সকল নতুন স্কুলগুলো এমপিও ভুক্ত হয়েছে- সেই সকল স্কুলের ছাত্রছাত্রী নেই তারাই মূলত এমন কাজটি করেছে। যাতে তাদের স্কুল এমপিওভুক্তি টিকে থাকে। দ্রুত এমন প্রতারণা করার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।
এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস বলেন, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে প্রাথমিকভাবে ১৪ জনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। সামনের পরীক্ষা গুলোতেও এটা অব্যাহত থাকবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status