শেষের পাতা

ছাই থেকে জ্বালানির খোঁজে মুমিনুল

ইশতিয়াক পারভেজ, ইন্দোর (ভারত) থেকে

১৭ নভেম্বর ২০১৯, রবিবার, ৯:২৭ পূর্বাহ্ন

ভারত এক ইনিংসে ৪৯৩ রান ছুঁলো ৬ উইকেট হারিয়ে। ইনিংস ঘোষণা করে দিলো আর ব্যাটিং না করেই। বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে থেমেছিল। তাই ভারতকে  স্পর্শ করতে প্রয়োজন ছিল ৩৪৩ রানের। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ তেই শেষ! দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৬৩। মানে ইনিংস ও ১৩০ রানে হার! ২০ উইকেটের মধ্যে ভারতের পেসাররা নিয়েছেন ১৪ উইকেট। পরিষ্কার বলে দিচ্ছে ভারতের পেস ব্যাটারির তাপে পুড়েই ছাই টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে এমন হার মেনে নিতে পারছে না কেউ। নিজের নেতৃত্বের অভিষেকে দলের পুড়ে ছারখার হয়ে যাওয়া দেখে অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ হতাশ। তবে পেছনে তাকাতে চান না তিনি। দ্বিতীয় টেস্ট কলকাতায় চোখ। সেখানেই ছাই থেকে তিনি খুঁজছেন ঘুরে দাঁড়ানোর জ্বালানি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বলেন, ‘আমরা এই ম্যাচ ভুলে পরেরটা নিয়ে ভাবতে চাই। আরেকটা সুযোগ পাব কলকাতায়। সেটা কাজে লাগাতে চাইব। আমি কখনো অতীত নিয়ে পড়ে থাকি না। আমি সামনে তাকাতে চাই। হ্যাঁ, ভীষণ খারাপ হয়েছে। পরের ম্যাচে হয়তো সবার তাড়না থাকবে ভালো করার।’

১৬ নম্বর জার্সি গায়ে যখন ব্যাট করতে নামলেন লিটন দাস তখন ধারাভাষ্যে ভারতের ক্রিকেট গ্রেট সুনীল গাভাস্কার জানালেন আশার কথা। ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি হাঁকানো মায়াঙ্ক আগারওয়ালের জার্সি নাম্বারও ১৬। তাই গাভাস্কার বলেন, ‘দু’জনের জার্সি নাম্বারই এক। যদি মায়াঙ্কের অর্ধেকটা রানও করে দিতে পারে লিটন!’ লিটন কেন, দ্বিতীয় ইনিংসে গোটা দল মিলে তার করা ২৪৩ ছুঁতে পারেনি। তাহলে কি ব্যাটিং পারেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা! তাদের টেকনিকেও ভুল? অধিনায়ক মুমিনুল অবশ্য দলের কারো ব্যাটিং কৌশলের ভুল নিয়ে কথা বলতে চাইলেন না। তিনি বলেন, ‘এখানে আমি টেকনিক নিয়ে কিছু বলতে পারবো না। টেকনিক যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। আমি কারো টেকনিক নিয়ে কথা বলারও কেউ না।’ তবে এদিন ব্যাটিংয়ে যে চেষ্টা দেখেছেন তা নিয়ে প্রসংশা করতে ভোলেন নি অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো ব্যাট করিনি এটি একেবারেই সত্য। তবে এরমধ্যেও ইতিবাচক দিক আছে। মুশফিক ভাই ভালো খেলেছেন দুই ইনিংসেই। লিটন ভালো খেলেছে। মিরাজও ভালো করেছে আজ। তবে যেটা হয়েছে আমরা দল হিসেবে খেলতে পারিনি। বড় জুটি করতে পারিনি। এটা খুব ভালো দলীয় পারফরম্যান্স নয়।’

ভারতের পেসারদের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ দল। তারা কি ভয়ে নাকাল, নাকি পেসের বিরুদ্ধে খেলার সামর্থ্য কম? মুমিনুল বলেন, ‘অবশ্যই হুমকি ছিল (ভারতীয় পেসাররা)। একই সঙ্গে মনে হয় আমরা ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়েছি। ওদের যে তিনজন বোলার আছে তাদেরকে নিয়ে ভারত এখন বিশ্বের এক নম্বর বোলিং দল। আমরাও সেভাবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। মিস করে গিয়েছি, আমার কাছে মনে হয়। আর এটি পার্ট অফ লাইফ। আপনার কোনো সময় খারাপ হবে, কোনো সময় ভালো হবে। এটি নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তিত না। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাতে হবে যে মানুষ যখন সংগ্রাম করে তখন ভালো কিছু আসে বলে আমার কাছে মনে হয়।’

প্রশ্ন যেন পিছু ছাড়ছিল না টাইগারদের নয়া অধিনায়কের। এত বিশাল চাপ একটু হকচকিয়ে যাচ্ছিলেন মুমিনুল। বিশেষ করে আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ বলেন টাইগারদের দলের কাঠামো পরিবর্তনের কথা। রাসেল ডমিঙ্গোর দাবি যারা টেস্ট খেলতে আগ্রহী শুধু তাদেরই নিয়ে হবে দল। অধিনায়কও কোচের সঙ্গে সম্মতির কথা জানালেন। তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হলে সবসময় ভালো চিন্তা করতে হবে। টেস্ট ফরম্যাট আলাদা করে যদি কাঠামো তৈরি হয় তাহলে হয়তো সেটা বেশি কাজে দেবে। আপনি যখন একটা ফরম্যাট নিয়ে চিন্তা করবেন তখন সেখানেই থাকার চিন্তা করবেন। আপনার অটোম্যাটিক সেই বিষয়গুলো মাথায় আসবে। সেভাবেই করা উচিত বলে আমার মনে হয়। তবে কিছুটা সময় লাগবে।’

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্যটাও জানালেন মুমিনুল। তার মতে, অনেক টেস্ট খেলতে পারাই বিরাট কোহলির দলকে এই অবস্থানে এনে দিয়েছে, যে সুযোগ বাংলাদেশ পায় না। তিনি বলেন, ‘পার্থক্য হবেই ভারতের সঙ্গে। কারণ ওরা গেল ৬ মাসে ১০টার মতো টেস্ট খেলেছে। কিন্তু আমরা দুটি! এখানেই দুই দলের বড় পার্থক্য। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপ শুরু হওয়াতে ভালো হয়েছে। এতে আমাদের টেস্টে উন্নতি করতে সুবিধা হবে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status