প্রথম পাতা

১৫০-এ গুঁড়িয়ে গেল বাংলাদেশ

ইশতিয়াক পারভেজ, ইন্দোর (ভারত) থেকে

১৫ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

ব্যাট হাতে নেমে অজানা এক ভয় যেন কাজ করছিল বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। যে কারণে অধিনায়ক মুমিনুল হকসহ অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীমও আউট হতে হতে বাঁচলেন বেশ কয়েকবার। হ্যাঁ, হোলকার স্টেডিয়ামে টাইগার ব্যাটসম্যানদের মনের মধ্যে চেপে বসেছিল ভারতের পেস আক্রমণের ভয়। যা দেখা যাচ্ছিল  শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে আসা পেসার আবু জায়েদ রাহীর মধ্যেও। শেষ পর্যন্ত ১৫০ রান তুলে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থামে ৫৮.৩ ওভার খেলে। তিনবার জীবন পেয়ে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন মুশফিক। দলের কেউই পৌঁছতে পারেননি ফিফটিতে। চা বিরতির মাত্র ৪ ওভার পরই প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বিরাট কোহলির দল। ১ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে যোগ করে ৮৬ রান। আজ হাতে ৯ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করবে তারা ৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মিশনে টাইগারদের বেহাল অবস্থা দিচ্ছে অশনি সংকেত। নয়া অধিনায়ক অবশ্য গোটা দায়টা নিলেন নিজের ওপর। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে জানিয়েছেন ভুলের খেসারত দিয়েছেন তারা। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন বাড়তি চাপ নিয়ে ফেলার বিষয়টিও। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন টসে হারবেন অথবা জিতবেন, এরকম একটা ইনিংস যখন হবে তখন এমন প্রশ্ন আসতেই পারে। মানে অল্প রানে অলআউট হওয়াতে এই প্রশ্ন এসেছে।  তবে মনে হয়  যে আমার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি।  এটি আমারই ভুল।’  

ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে সকালে টসে জয় দিয়েই শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের ১১তম অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। ৩০ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে তখন প্রায় ১৫ হাজার দর্শক হাজির। টেস্টে এত দর্শক মেলা ভার। মাঠে তাদের মুখরিত ধ্বনি এই টেস্টের রং ছড়িয়ে দিয়েছিল শতগুণ। কিন্তু সেখানে ব্যাট হাতে সৌরভ ছড়াতে ব্যর্থ মুমিনুল বাহিনী।  শুরুতেই দুই ওপেনার ফিরে গেছেন দলীয় ১২ রানের মধ্যে। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা অভিজ্ঞ ইমরুল করেছেন মাত্র ৬ রান। তার বিদায়ের পর একই সমান রানে আউট সাদমানও। ভারতীয় দু্‌ই পেসারের আক্রমণে তারা ছিলেন ভীষন নড়বড়ে। মোহমাম্মদ মিঠুনকে মনে হয়েছে ভয়ে হাত পাও নড়ছে না তার। তিনিও আউট হয়ে ফিরেছেন দুই অংক ছুঁয়েই। তবে সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক। তাকে দারুণ সঙ্গ দিতে থাকেন মুশফিক। গড়ে তোলেন ৬৮ রানের জুটি। কিন্তু নিজের ৩৭ রানের ইনিংসটি মুমিনুল শেষ করেন ভুল এক শটে। তাই আক্ষেপটাও তার ভীষণ। তিনি বলেন, ‘মুশফিক ভাই ও আমি খুব ভালো মানিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর  লিটন মানিয়ে নিয়েছিল। তবে আমি মনে করি আমি যদি তখন সেই ভাবে আউট না হতাম তাহলে ইনিংসটা আরো বড় হতো। হয়তো দিন শেষে স্কোর বোর্ডেও ভালো কিছু থাকতো।’

বাংলাদেশ যেখানে দেড়শ রানে অলআউট সেখানে ভারত ৮৬ রান তুলেছে ২৬ ওভারে তাও এক উইকেট হারিয়ে। অপরাজিত থাকেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল ৮১ বলে ৩৭ রান করে। তিনি হতে পারতেন আবু জায়েদ রাহীর স্বীকার। কিন্তু স্লিপে তার ক্যাচ ছাড়েন ইমরুল কায়েস। তার আগে তিনি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে ফিরিয়ে দিয়েছেন ভারতের আরেক ব্যাটিং স্তম্ভ রোহিত শর্মাকে। এ ছাড়াও দারুণ খেলছেন চেতেশ্বর পূজারা। তিনি ৬১ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। ভারতের এমন ব্যাটিংয়ের পর উইকেটকে দোষ দেয়ার কোনো কারণ নেই। টাইগার অধিনায়কও সেটি করলেন না। মুমিনুল বলেন, ‘উইকেট না খেলার মত ছিল না। তবে তারা (ভারত) বিশ্বের এক নম্বর বোলিং সাইড। আমার মনে হয় তাদের সঙ্গে খেলতে হলে আমাদের অনেক বেশি মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। সত্যি কথা বলতে আমরা ঐ জায়গায় একটু পিছিয়ে গিয়েছিলাম।’

পেস সহায়ক উইকেটে যেখানে ভারত তিন পেসার নিয়ে নেমেছে সেখানে বাংলাদেশ নিয়েছে দু’জন। একাদশে রাখা হয়নি দলের সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে। এমনকি টি-টোয়েন্টি সিরিজে দারুণ খেলা পেসার আল আমিন হোসেনও নেই একাদশে। তাহলে কি তাদের ওপর টেস্টে বিশ্বাস রাখতে পারেনি দল! তবে রাহী ও  ইবাদতও খারাপ করেনি বলে মনে করেন মুমিনুল। তিনি বলেন, ‘দেখেন যে দুজন  পেস বোলার খেলছেন তারা বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। বেশি হলে ৫ থেকে ৬টা। আমার কাছে মনে হয়, খুব বেশি এক্সপেকটেশন ও করা যাবে না তাদের কাছে। কারণ, ওদের একটু সময় লাগবে। আর মোস্তাফিজ  দারুণ বোলার। আমাদের কাছে মনে হয়েছে  ব্যাটিং শক্তি একটু বাড়ানো দরকার। সেই জন্য ব্যাটসম্যান বেশি নিয়ে খেলেছি। তাই বলে এমন নয় মোস্তাফিজের ওপর আমাদের বিশ্বাস নেই।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status