খেলা
ভারতীয় সাংবাদিকের চোখে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস
‘পরিকল্পনাতেই গণ্ডগোল’
ইশতিয়াক পারভেজ, ইন্দোর (ভারত) থেকে
১৫ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন
ইন্দোরে সিকিউরিটির বিড়ম্বনা শেষ করে প্রেসবক্সে আসতে আসতে টস হয়ে গেছে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ! ভারতীয় দুই তিন সংবাদকর্মীর মুখে শোনা গেল ‘ইস! এমন উইকেটে কেউ শুরুতে ব্যাটিং নেয়!’ হ্যাঁ, পাশে বসে থাকা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার সিনিয়র রিপোর্টার কুশান সরকারকে দেখা গেল আরো একটু বেশি আফসোস করতে। কথায় কথায় বলেই বসলেন ‘যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে টেস্টটা টেনেটুনে তিনদিন যাবে কিনা তাতেই সন্দেহ। ইনিংস শেষে দৈনিক মানবজমিনকে কুশান সরকারই জানালেন বাংলাদেশের ভুলটা কোথায় ছিল। এমনকি জানিয়ে দিলেন নিজেদের ঠিক করতে না পারলে সামনে বড় বিপদই আছে টাইগারদের। বিশেষ করে কলকাতায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে দিবারাত্রির ম্যাচে আরো বড় বিপর্যয়ই হতে পারে। তার কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
ভুলটা যেখানে
দেখ এমন একটা উইকেটে, যেখানে ঘাস আছে সেখানে টসে জিতে ব্যাটিং নেয়া উচিত হয়নি। আমি বলবো মুমিনুল নতুন অধিনায়ক, অনভিজ্ঞ হয়তো সে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আর এখানেই বলবো পরিকল্পনাতেই গণ্ডগোলটা হয়েছে। কারণ তোমাদের বুঝতে হবে ভারতের পেস বোলিং এখন বিশ্বের সেরা। তারা কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে এই পেস বিভাগ নিয়ে টেস্ট জিতে এসেছে। যদি বাংলাদেশ বোলিং নিতো তাহলে প্রথম উইকেটের যে সাহায্য সেটি কিন্তু তারা তুলে নিতে পারতো। তাতে করে ভারতকে যদি ৩০০ রানের মধ্যে আটকে দেয়া যেত তাহলে অবশ্যই টেস্ট আরো একটু বেশি দিন খেলার সম্ভাবনা থাকতো। চার দিন অন্তত হতো। এখন যা অবস্থা তাতে তিন দিন খেলাই কঠিন।
টেকনিকে দুর্বলতা
আমার কাছে শুরু থেকে মনে হয়েছে এমন উইকেটে পেসের বিপক্ষে যেভাবে খেলতে হয় সেটি তারা করতে পারেনি। দুই ওপেনারকে বেশ দুর্বল মনে হয়েছে। ইমরুল কায়েস ও সাদমানের কোন ফুটওয়ার্ক ছিল না। মুশফিক, চারবার জীবন পেয়ে তার মতো একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শামিকে উইকেট দিয়ে এলো। আর মাহমুদুল্লাহরওতো অভিজ্ঞতা কম নয়। সে যেভাবে তিন স্টাম্প ছেড়ে খেলছে অশ্বিনের বলে তাতে আমি বলবো এখানে বোলারের কোনো কৃতিত্ব নেই। বাজে শটে উইকেটটা দিয়ে এসেছে। মুমিনুলও তাই ভেবে ছিল বলটি পড়ে বের হয়ে যাবে কিন্তু সোজা চলে এসেছে, ব্যাস তাতেই শেষ। আমার কাছে মনে হয়েছে টেকনিকে সমস্যা আছে। যা ঠিক করতে হলে অনেক অনেক টেস্ট ম্যাচ খেলতে হবে।
টেস্টে মনোযোগ বাড়াতে হবে
কিছুদিন আগে শুনলাম বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলাটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমি বলবো ভালো উদ্যোগ। দেখ, বাংলাদেশ ওয়ানডে দারুণ খেলে কারণ তারা এই খেলাটা এত বেশি খেলেছে যে জানে কখন কোথায় কী করতে হবে! আমি বলবো, যে কারণে ওয়ানডেতে তারা ভালো ঠিক সেই কারণেই টেস্টে ভালো নয়। টেস্টে মানসিকতা অনেক শক্ত করতে হবে। এই জন্য বছরে ৫ থেকে ৭টা টেস্ট খেলার পাশাপাশি চারদিনের ম্যাচগুলোও খেলতে হবে। এতে করে যেমন টেস্ট মানসিকতা বাড়বে তেমনি টেকনিকেও উন্নতি হবে।
গোলাপি বলে আরো ভয়
আমি যা ব্যাটিং আজ (কাল) দেখলাম তাতে কলকাতায় গোলাপি বলে আরো বেশি শঙ্কা বোধ করছি বাংলাদেশকে নিয়ে। কারণ গোলাপি বলের সাইন ধরে রাখতে উইকেটে আরো ঘাস থাকবে। সেখানে হয়তো ভারত খেলবে তার সেরা চার পেসার নিয়েই। তখন হয়তো তিনদিনেই টেস্ট শেষ হয়ে যাবে।
সাকিব-তামিমের অভাব
তবে একটা জায়গাতে এগিয়ে রাখবো, এই দলটি যদি ভারত না হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, বা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতো তাহলে আরো ভালো করতে পারতো। আসলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারটাকে আমি অঘটনই মনে করবো। আরেকটা বিষয়, সামনে তামিম ফিরে আসবে, সাকিবও দলে ফিরবে। আমার মনে হয় না টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপটা খারাপ হবে। সত্যিতো বলতেই হবে সাকিব ও তামিমের অভাবটা কিন্তু ছোট ফরমেটে তোমরা বুঝতে পারবা না। কিন্তু টেস্টে কিন্তু ওদের ভীষণ লাগবে। ইন্দোরের উইকেটে তামিম থাকলে অন্যরকম হতে পারতো।
আল আমিন কেন নয়!
মোস্তাফিজকে খেলাবে না সেটি আগেই শোনা যাচ্ছিল। তাহলে তার পরিবর্তে আল আমিন কেন নয়! ওর যে অ্যাকশন আমরা দেখেছি এই উইকেটে দারুণ করতে পারতো। যেভাবে ও বল উঠাতে পারে তা সত্যি অসাধারণ। আরেকটা বিষয় হলো তিনটা পেসার খেলানো দরকার ছিল। সেখানে তাইজুল বা মিরাজ যে কোনো একজনকে নিলেই হতো। আবু জায়েদ আর ইবাদততো মনে হয় ১০টিও টেস্ট খেলেনি। ভালো করলেতো ঠিক আছে। নয়তো, কোহলিদের সামনে কী হবে সেটিই বড় বিষয়।
ভুলটা যেখানে
দেখ এমন একটা উইকেটে, যেখানে ঘাস আছে সেখানে টসে জিতে ব্যাটিং নেয়া উচিত হয়নি। আমি বলবো মুমিনুল নতুন অধিনায়ক, অনভিজ্ঞ হয়তো সে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আর এখানেই বলবো পরিকল্পনাতেই গণ্ডগোলটা হয়েছে। কারণ তোমাদের বুঝতে হবে ভারতের পেস বোলিং এখন বিশ্বের সেরা। তারা কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে এই পেস বিভাগ নিয়ে টেস্ট জিতে এসেছে। যদি বাংলাদেশ বোলিং নিতো তাহলে প্রথম উইকেটের যে সাহায্য সেটি কিন্তু তারা তুলে নিতে পারতো। তাতে করে ভারতকে যদি ৩০০ রানের মধ্যে আটকে দেয়া যেত তাহলে অবশ্যই টেস্ট আরো একটু বেশি দিন খেলার সম্ভাবনা থাকতো। চার দিন অন্তত হতো। এখন যা অবস্থা তাতে তিন দিন খেলাই কঠিন।
টেকনিকে দুর্বলতা
আমার কাছে শুরু থেকে মনে হয়েছে এমন উইকেটে পেসের বিপক্ষে যেভাবে খেলতে হয় সেটি তারা করতে পারেনি। দুই ওপেনারকে বেশ দুর্বল মনে হয়েছে। ইমরুল কায়েস ও সাদমানের কোন ফুটওয়ার্ক ছিল না। মুশফিক, চারবার জীবন পেয়ে তার মতো একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শামিকে উইকেট দিয়ে এলো। আর মাহমুদুল্লাহরওতো অভিজ্ঞতা কম নয়। সে যেভাবে তিন স্টাম্প ছেড়ে খেলছে অশ্বিনের বলে তাতে আমি বলবো এখানে বোলারের কোনো কৃতিত্ব নেই। বাজে শটে উইকেটটা দিয়ে এসেছে। মুমিনুলও তাই ভেবে ছিল বলটি পড়ে বের হয়ে যাবে কিন্তু সোজা চলে এসেছে, ব্যাস তাতেই শেষ। আমার কাছে মনে হয়েছে টেকনিকে সমস্যা আছে। যা ঠিক করতে হলে অনেক অনেক টেস্ট ম্যাচ খেলতে হবে।
টেস্টে মনোযোগ বাড়াতে হবে
কিছুদিন আগে শুনলাম বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলাটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমি বলবো ভালো উদ্যোগ। দেখ, বাংলাদেশ ওয়ানডে দারুণ খেলে কারণ তারা এই খেলাটা এত বেশি খেলেছে যে জানে কখন কোথায় কী করতে হবে! আমি বলবো, যে কারণে ওয়ানডেতে তারা ভালো ঠিক সেই কারণেই টেস্টে ভালো নয়। টেস্টে মানসিকতা অনেক শক্ত করতে হবে। এই জন্য বছরে ৫ থেকে ৭টা টেস্ট খেলার পাশাপাশি চারদিনের ম্যাচগুলোও খেলতে হবে। এতে করে যেমন টেস্ট মানসিকতা বাড়বে তেমনি টেকনিকেও উন্নতি হবে।
গোলাপি বলে আরো ভয়
আমি যা ব্যাটিং আজ (কাল) দেখলাম তাতে কলকাতায় গোলাপি বলে আরো বেশি শঙ্কা বোধ করছি বাংলাদেশকে নিয়ে। কারণ গোলাপি বলের সাইন ধরে রাখতে উইকেটে আরো ঘাস থাকবে। সেখানে হয়তো ভারত খেলবে তার সেরা চার পেসার নিয়েই। তখন হয়তো তিনদিনেই টেস্ট শেষ হয়ে যাবে।
সাকিব-তামিমের অভাব
তবে একটা জায়গাতে এগিয়ে রাখবো, এই দলটি যদি ভারত না হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, বা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতো তাহলে আরো ভালো করতে পারতো। আসলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারটাকে আমি অঘটনই মনে করবো। আরেকটা বিষয়, সামনে তামিম ফিরে আসবে, সাকিবও দলে ফিরবে। আমার মনে হয় না টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপটা খারাপ হবে। সত্যিতো বলতেই হবে সাকিব ও তামিমের অভাবটা কিন্তু ছোট ফরমেটে তোমরা বুঝতে পারবা না। কিন্তু টেস্টে কিন্তু ওদের ভীষণ লাগবে। ইন্দোরের উইকেটে তামিম থাকলে অন্যরকম হতে পারতো।
আল আমিন কেন নয়!
মোস্তাফিজকে খেলাবে না সেটি আগেই শোনা যাচ্ছিল। তাহলে তার পরিবর্তে আল আমিন কেন নয়! ওর যে অ্যাকশন আমরা দেখেছি এই উইকেটে দারুণ করতে পারতো। যেভাবে ও বল উঠাতে পারে তা সত্যি অসাধারণ। আরেকটা বিষয় হলো তিনটা পেসার খেলানো দরকার ছিল। সেখানে তাইজুল বা মিরাজ যে কোনো একজনকে নিলেই হতো। আবু জায়েদ আর ইবাদততো মনে হয় ১০টিও টেস্ট খেলেনি। ভালো করলেতো ঠিক আছে। নয়তো, কোহলিদের সামনে কী হবে সেটিই বড় বিষয়।