বাংলারজমিন

গাজীপুরের বাসন সড়কের বেহাল অবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে

১৫ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১০ পূর্বাহ্ন

গাজীপুর মহানগরের ১৫ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন বাসন সড়কের এক কিলোমিটার এলাকা বছরজুড়েই তলিয়ে থাকে পানির নিচে। শুধু জমে থাকা পানিতেই বিপত্তি নয়, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী পথচারীরা নাকাল হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সব মিলিয়ে বেহাল এই সড়কটি ব্যবহারকারী এলাকার লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা দ্রুত সড়ক থেকে পানি নিষ্কাশন ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছে।
পথচারী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসন হক মার্কেট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের প্রায় পুরো অংশই খানাখন্দে ভরা। নগরের ব্যস্ত এই সড়কটির দু’পাশে রয়েছে সাং কোয়াং সোয়েটার লিমিটেড ও মিম গ্রুপের এলেমা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডসহ ১০-১২টি তৈরি পোশাক কারখানা, ৭টি বিদ্যালয় এবং ৫টি মাদ্রাসাসহ বেশকিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এই সড়ক দিয়ে শ্রমিকসহ দুটি ওয়ার্ডের স্কুল-কলেজের  শিক্ষার্থী এবং বিপুলসংখ্যক পোশাককর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষকে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। তাদেরকে বাধ্য হয়ে সড়কে জমে থাকা ওই পানি মাড়িয়েই বাস,  ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা ও পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে ভোগড়া মোল্লা মার্কেট এবং মীম ডিজাইন গার্মেন্টসংলগ্ন সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার অংশ সারা বছরই পানির নিচে তলিয়ে থাকে।  পোশাক শ্রমিকরা প্রতিদিন সকালে কর্মস্থলে যাবার পথে দুপুরে খাবারের সময় আসা-যাওয়া ও ছুটি  শেষে বাসায় ফেরা চারবার এই পথ পাড়ি দিয়েই হেঁটে চলাচল করে। এ ছাড়া রাস্তার গর্তে পড়ে রিকশা, অটোরিকশা যাত্রী ও সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন শিক্ষার্থী ও নারীরা। পায়ে হেঁটে চলার মতো অবস্থাও নেই। একবার বৃষ্টি হলে সেই পানি জমে থাকে দীর্ঘদিন। আর জমে থাকা দূষিত পানিতে হেঁটে চলাচল করতে গিয়ে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগে। জমে থাকা দূষিত এই পানি দিয়ে চলাচলের কারণে অনেকেরই পায়ে ঘা হয়ে গেছে। আক্রান্ত হচ্ছেন নানা চর্মরোগে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে চিঠিও দেয়া হয়েছে বহুবার। তবু গত বছর এই সড়কের একপাশে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এক বছরেও সে কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। বর্তমানে সড়কটি বাড়িঘর, দোকানপাট ভেঙে আরো প্রশস্তকরণের বিষয়ে সিটি করপোরেশনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে স্থানীয়রা ক্ষতিপূরণ ছাড়া তাদের প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিতে রাজি হচ্ছে না। সড়কের উত্তর পাশে ভেঙে দিয়ে ড্রেন নির্মাণ কাজ চলতে থাকলে এরপরও আরো পাঁচ ফুট করে ভেঙে দেয়ার জন্য বলে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে আপত্তি করছে অনেকেই। স্থানীয় দক্ষিণ ভোগড়া বাজারের ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, এই সড়কের বিভিন্ন অংশে সারা বছর পানির নিচে তলিয়ে থাকায় এলাকার ১৫টি মার্কেটের শতাধিক দোকানদার ও ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানি মাড়িয়ে ক্রেতারা দোকানে আসতে চান না। এ ছাড়া অন্য এলাকা থেকে বাড়িতে মেহমান ও আত্মীয়স্বজন বেড়াতে এলেও ভাঙাচোরা সড়কের কারণে লজ্জায় পড়তে হয়। বেড়াতে এসে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘর থেকে বাইরে বের হতেও পারেন না। এই সড়কের বিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফয়সাল আহমাদ সরকার বলেন, ইতিমধ্যে সড়কটি এতদফা প্রশস্ত করা হয়েছে। আরো প্রশস্তকরণের জটিলতায় বর্তমানে নির্মাণকাজ আটকে আছে। সড়কটির উত্তর পাশে নির্মাণাধীন ড্রেনের কাজও খুব শিগগিরই শেষ করা হবে। ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ হলে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। এ ছাড়া বাসন সড়কটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করবে বিআরটি প্রকল্প। সড়কের পরের অংশটি করবে সিটি করপোরেশন। এজন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status