এক্সক্লুসিভ

চট্টগ্রামে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

১৫ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৮:০২ পূর্বাহ্ন

পুরো দেশের তুলনায় চট্টগ্রাম জেলায় ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষ ২ লাখ ৬৬ হাজারেরও বেশি। প্রতিদিন গড়ে নতুনভাবে শনাক্ত হচ্ছে ৮০ জন রোগী। গত বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতি এ তথ্য প্রকাশ করে। সমিতির তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ৭৩ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত। এরমধ্যে শুধুমাত্র চট্টগ্রামে রয়েছে ২ লাখ ৬৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। যা জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সবচেয়ে বেশি। সূত্রমতে, চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে ৮০ জন মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছে। তবে এরমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে গর্ভবতী নারীরা। প্রতি ৭ জন গর্ভবতীর মধ্যে ১ জন ডায়াবেটিস আক্রান্ত হচ্ছে বলে তথ্যে প্রকাশ করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক ডা. হাসান শাহারিয়ার কবির বলেন, ডায়াবেটিস রোগ একবার হলে আর ভালো হয় না। রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপন করা সম্ভব। গর্ভবতী মায়েদের অপুষ্টি থাকলে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ফলে বিয়ের সময় মেয়েদের এ ব্যাপারে সচেতন করতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ডায়াবেটিস রোগীদের চিহ্নিত বা শনাক্ত করতে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এটি জীবনব্যাপী রোগ বলে এর জন্য খরচ অনেক বেশি হয়। সব পরিবারের পক্ষে সেই খরচ বহন করা সম্ভব নয়। সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। সরকারের ইনসুলিন প্রাপ্যতা সহজ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক গবেষণায় বলা হয়েছে বাংলাদেশে মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। ২০৪০ সালে মৃত্যু বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। আর সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রোগটি এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারের উদ্বেগের বিষয়। ২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৭৩ লাখেরও বেশি লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রায় ৪৫ লাখ ডায়াবেটিস রোগীকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। যার হার ৬২ শতাংশ। ৩৮ শতাংশ রোগী এখনো সেবার বাইরে।
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সমপাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে চট্টগ্রামে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় নেতাদের সমপৃক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও সারা বছর ডায়াবেটিস সমপর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর নানা ধরণের বিভিন্ন কর্মসূচির পালন করা হয়।

তিনি বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় চট্টগ্রামসহ সারাদেশে দিবসটি পালন করছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি যৌথভাবে সারাদেশের মেডিকেল কলেজ, সিভিল সার্জন কার্যালয়, সকল জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সামাজিক সচেতনতার কার্যক্রম হিসেবে দিবসটি উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- আসুন পরিবারকে ডায়াবেটিসমুক্ত রাখি। প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায়, বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সালে ১৪ই নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এদিন বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং জন্ম নিয়েছিলেন এবং তিনি বিজ্ঞানী চার্লস বেস্টের সঙ্গে একত্রে ইনসুলিন আবিষ্কার করেছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status