শরীর ও মন
দ্রুত সনাক্তকরণ, বাঁচাবে জীবন
স্টাফ রিপোর্টার
১৪ নভেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
স্তন ক্যান্সার হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার সনাক্ত করতে পারলে, যথাযথ ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসার মাধ্যমে এর হাত থেকে বাঁচার খুব ভালো একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ক্যান্সার সনাক্ত করতে দেরি হয়ে গেলে, তখন মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। আমাদের দেশেও আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশেরই সচেতনতার অভাবে একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ছে। যখন প্রাণঘাতী এই ক্যান্সারের সাথে লড়াই করবার সাহস বা ইচ্ছাশক্তি কোনোটাই অবশিষ্ট থাকে না।
স্তন ক্যান্সারকে নারীদের নীরব ঘাতক বলা হলেও নারী-পুরুষ উভইয়েরই হতে পারে এই রোগ। তবে নারীদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি। নারীদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। সাধারণত চল্লিশোর্ধ নারীদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও অনেক বেড়ে যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা কম বলে, একেবারে নিশ্চিন্তে থাকার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ জানেনই না যে, পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে। পুরুষরা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে, এমন আশংকা থেকে অ্যামেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি চলতি বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২,৬৭০টি নতুন কেস নিয়ে গবেষণা করবে এবং তারা আশংকা করছে যে, আনুমানিক ৫০০ জন পুরুষ এই রোগে মারা যেতে পারে।
স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতন করার জন্যই প্রতি বছর পুরো বিশ্বব্যাপী অক্টোবর মাসকে স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মাস হিসেবে উদযাপন করা হয়। প্রতি ৬ মিনিটে একজন নারী যে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং যার অর্ধেকই মারা যাচ্ছে, সেই রোগটাকে কোনো বিবেচনায় লজ্জার কিংবা গোপন রোগ ভাবার কোন সুযোগ নেই। এটা জীবনের প্রশ্ন। এই রোগ প্রতিরোধে নারীদের মধ্যেই সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। তবে নারী-পুরুষ সকলের সচেতনতাই পারে প্রাণঘাতী এই ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করতে। অপ্রয়োজনীয় নীরবতা ভেঙ্গে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাপী অনেক প্রতিষ্ঠানই কাজ করছে। আমাদের দেশে এই কাজটা করছে টেলিনর গ্রুপের হেলথ সাবসিডিয়ারি টেলিনর হেলথ। স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মাস উপলক্ষ্যে অক্টোবর জুড়ে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে অপেক্ষমান মায়েদের কাছে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করছে। ‘দ্রুত সনাক্তকরণ, বাঁচাবে জীবন’ শিরোনামে স্তন ক্যান্সার সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে। এছাড়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে নিয়ে এ বিষয়ে সেমিনার আয়োজন করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সরাসরি প্রচারণার মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মাঝে টেলিনর হেলথ সচেতনতা তৈরি করতে সক্ষম হয়। নারীদেরকে এই নীরব ঘাতকের হাত থেকে রক্ষা করতে সচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই। এটা একটি প্রাণঘাতী রোগের হাত থেকে বাঁচার লড়াই। আর এই লড়াইয়ে নারী-পুরুষ সকলেরই সামিল হওয়া আবশ্যক। এই রোগে নারীরাই বেশি আক্রান্ত হয় বলে, এটা তাদের একার লড়াই নয়। বরং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সকলের মাঝে সচেতনতা তৈরির মধ্যেই এই লড়াইয়ের সাফল্য নিহিত।