অনলাইন

প্রতারণাই তার পেশা

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৭:২২ পূর্বাহ্ন

কামরুল হুদা। দেখতে পুরোদস্তর ভদ্রলোক। চলাফেরা করেন দামি গাড়িতে। প্রায় সময় থাকতেন দেশের বাইরে। তার এক ছেলে পড়াশোনা করে লন্ডনে। অন্য দুই সন্তান পড়াশোনা করে দেশের নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কামরুল হুদা থাকেন রাজধানীর এক আলিশান বাড়িতে। প্রথম দেখায় তার সাথে কথা বললে বুঝার কোন উপায় নেই যে, তিনি একজন প্রতারক। আর প্রতারণাই তার পেশা। প্রতারণা করেই গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় সাত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কামরুল হুদা। পরে টাকা চাইলে ওই ব্যবসায়ীকে সে ও তার সহযোগীরা হত্যার হুমকিও দিয়েছে। জানা যায়, গাড়ি ব্যবসায়ী নজরুল ইসালামের থেকে প্রথমে মার্সিটিজসহ চারটি গাড়ি কেনেন প্রতারক কামরুল। সেখানে বাকি রাখেন এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এরপর গুলশানে একটি প্লট বিক্রির কথা বলে অগ্রিম ওই ব্যবাসায়ীর কাছ থেকে নেন আরো পাঁচ কোটি টাকা। এরপর বাকি টাকা চাইতে গেলে নজরুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় কামরুল ও তার সহযোগীরা। উপায় না পেয়ে বনানী থানায় কামরুলের নামে মামলা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর আবেদন করেন ওই ব্যবসায়ী। পরে মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বনানী এলাকার একটি বহুতল ভবন থেকে প্রতারক চক্রের হোতা কামরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ। ওইদিন বিকালে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে কামরুল হুদাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন আদালত।

এ বিষয়ে বনানী থানার ওসি ফরমান আলী মানবজমিনকে বলেন, কামরুল হুদা নামের ওই ব্যক্তিকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করি। তার নামে কিছুদিন আগে বনানী থানায় এক ব্যাসায়ী মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারের পর কামরুল হুদাকে আদালতে প্রেরণ করেছি। আমরা আদালতের কাছে তার তিনদিনের রিমান্ড চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত রিমান্ড মঞ্জুর না করে তাকে জেলহাজেত প্রেরণ করেন।

মামলার বাদি নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, কামরুল হুদা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। সম্পর্কের শুরুতে তাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে জানতাম। এ কারণে তার কাছে বাকিতে গাড়ি বিক্রির পাশাপাশি প্লট কিনতে অগ্রিম টাকা দিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কের কারণেই তার সঙ্গে বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করি। এখন টাকা ফেরত পেতে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

নজরুল ইসলাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তিনি একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। গুলশান এলাকায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আসামি কামরুল হুদা গত কয়েক বছরে তার কাছ থেকে একটি মার্সিটিজ গাড়িসহ মোট ৪টি গাড়ি কিনেছিল। এই গাড়ি বিক্রির বিপরীতে কামরুল হুদার কাছে তার পাওনা রয়েছে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সেই টাকা তিনি এখনও পরিশোধ করেননি। মূলত ভালো সম্পর্ক থাকায় বিশ্বাস করে তিনি এই বিপুল অঙ্কের টাকা বকেয়া রেখে তার কাছে গাড়ি বিক্রি করেছিলেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে কামরুল হুদা।
মামলার বাদি এজাহারে আরো বলেছেন, কামরুল হুদা গুলশান এলাকায় একটি প্লট বিক্রির কথা বলে পাঁচ কোটি অগ্রিম টাকা নিয়েও তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এখন সে গাড়ির টাকাও পরিশোধ করছে না, আবার বাড়িসহ জমি বিক্রির অগ্রিম টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। সে ও তার সহযোগিরা থানায় মামলা করায় প্রতিনিয়ত তাকে হুমকি দিচ্ছে। এখন তিনি চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন।  
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status