বাংলারজমিন
জীবননগর থানার ওসিসহ তিনজনকে প্রত্যাহার
জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৭:৪৭ পূর্বাহ্ন
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ গনি মিয়া, সাব ইন্সপেক্টর সাইদুজ্জামান ও কনস্টেবল মেহেদীকে দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলা ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে থানা ও ক্যাম্প থেকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত রোববার রাতে ও সোমবার বিকালে দু’দফায় এ প্রত্যাহার কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে। তবে প্রত্যাহার হওয়া সবাই তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জীবননগর উপজেলার শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্পের সাব-ইন্সপেক্টর সাইদুজ্জামান সাইদ বলেন, রোববার রাত আটটার দিকে ক্যাম্পের আনসার সদস্য ফারুক হোসেন উপজেলার দেহাটি গ্রাম থেকে তিনজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে আমাকে খবর দিলে আমি সঙ্গীয় ফোর্সসহ দেহাটি বাজার থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু আনসার সদস্য ফারুক থানার ওসিকে বলে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে টিপু নামের মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে হবে। সে তার সোর্স। তার এ প্রস্তাবে ওসি স্যার রাজি না হওয়ায় ফারুক আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে এসপি স্যারের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলে আমি মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলছি কোনো মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থবাণিজ্য করিনি। আনসার সদস্যের কথামতো স্যার আমাকে রোববার রাতেই পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করেন। ওসি শেখ গনি মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়, তাহলে আমাকে যে শাস্তি দিবে তা আমি মাথা পেতে নেব। এদিকে আনসার কনস্টেবল ফারুক হোসেন বলেন, সাব ইন্সপেক্টর সাইদুজ্জামান সাইদ স্যার একজন সহজ-সরল এবং ভালো মানুষ। রোববার রাতে থানায় তার সামনে ওসি স্যার আমাকে গরম দেয়ায় আমি রাগে-ক্ষোভে এসপি স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তবে আমি এসপি স্যারকে বলব আমি ভুল করেছি, সাইদ স্যারকে মাফ করে দেন। এদিকে ঘটনার ব্যাপারে এলাকায় খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানা যায় যে, রোববার রাতে জীবননগর শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্পের আনসার সদস্য তিনজন মাদক ব্যবসায়ীকে দু’লিটার চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্য থেকে একজনকে ছেড়ে না দেয়া নিয়ে আনসার সদস্যের সঙ্গে ওসি শেখ গনি মিয়া ও সাব ইন্সপেক্টর সাইদের সঙ্গে মতোবিরোধ বাধে। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, জীবননগর থানার ওসি শেখ গনি মিয়ার অধীনরা কোনো অপরাধ করলে তার দায় তিনি এড়াতে পারেন না। তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে অধীনদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারলে সে ব্যর্থতা তারই। প্রত্যাহার করে নেয়া অফিসার-ফোর্সের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং আনসার সদস্যের ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।